নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো দ্রুত কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই নির্দেশনা দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেসব সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য, সেগুলো যেন আমাদের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন হয়। আমরা চাই, এই কাজের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ স্থাপন করতে। পৃথিবীর নারীরা আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এই উদ্যোগ পর্যবেক্ষণ করবে, অনুপ্রাণিত হবে। অন্য দেশের নারীরাও আগ্রহী হয়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি কেবল নারীদের বিষয় নয়, বরং একটি সামগ্রিক সমাজ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া। এই প্রতিবেদন শুধু দাফতরিক দলিল হয়ে পড়ে থাকবে না; এটি বই আকারে ছাপিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে, যেন এটি পাঠ্যবইয়ের মতো কাজে লাগে।’
প্রধান উপদেষ্টা জানান, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও উপস্থাপন করা হবে।
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, ‘জুলাইয়ে যারা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের স্মরণে আমরা এমন একটি কার্যক্রম হাতে নিয়েছি, যা মানুষের এবং সমাজের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’
তিনি জানান, কমিশনের সুপারিশগুলো তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে— কিছু সুপারিশ বর্তমান সরকারই বাস্তবায়ন করতে পারবে, কিছু বাস্তবায়ন করবে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার, এবং কিছু সুপারিশ নারী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করে।
প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।