আওয়ামী লীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকায়। ইতোমধ্যেই কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে চারপাশে অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
তবে আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি থাকলেও এখনও দলটির কোন নেতাকর্মীদের দেখা যায়নি রাজপথে। দলটি সোশ্যাল মিডিয়ায় রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দিলেও এদিন দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন, জিরো পয়েন্ট ও গুলিস্থান এলাকায় তাদের কোনো নেতাকর্মীর অবস্থান দেখা যায়নি। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও ছাত্র-জনতার মিছিল ও স্লোগানের মুখে সমাবেশ প্রতিহতের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) বেলা ১ টার দিকে পল্টন মোড় থেকে শুরু করে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
জিরো পয়েন্ট এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, গণপরিবহন ও যানজট স্বাভাবিক রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থেকে জলকামান ও এপিসি প্রস্তুত রেখেছে। এই অঞ্চলে জড়ো হওয়া কিছু মিছিলকারীরা স্লোগানের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন এবং আওয়ামী লীগের সমাবেশ প্রতিহতের আহ্বান জানাচ্ছেন।
বিশেষ করে ‘জুলাইয়ের কাফেলা’ নামক সংগঠনের সদস্যরা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে স্লোগান দিচ্ছেন এবং সমাবেশ প্রতিহতের প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করছেন।
জুলাইয়ের কাফেলার ব্যানারে মিছিল আসা আরিফ রব্বানী বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। তারা এখনো দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। বিগত দিনের গণহত্যার ব্যাপারে অনুতপ্ত হওয়ার বদলে উল্টো দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি ঘৃণ্য দল। এদের লজ্জা শরম নেই। আজ যেকোনো মূল্যে তাদের ঘোষিত কর্মসূচি প্রতিহত করা হবে।
১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সমাবেশের আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের অনুরোধ করে। পোস্টে অগণতান্ত্রিক শক্তির অপসারণ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিক্ষোভ কর্মসূচির কথা বলা হয়। একই সঙ্গে দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি পালনের নির্দেশনাও দেয়া হয়।
অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন পাল্টা গণজমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে, যা ঢাকার জিরো পয়েন্টে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকে আর মাঠে নামতে পারেনি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির নেতাকর্মীরা। গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার রোষানলে পড়তে হয় দলটির নেতাকর্মীদের। এর মধ্যে আবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :