ঢাকা: ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে বিএনপি ঘরে বসে চিনা-বাদাম খাবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপির এই অবস্থানের কথা জানান।
তিনি বলেন, আমরা কি চাই? শুধু মাত্র একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের মালিক জনগন… জনগন ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে একটি সংসদ ও সরকার গঠন করবে। এটাই তো বিপ্লবের মূল বক্তব্য। এই কারণে উনাদের মতো (অন্তর্বর্তী সরকারের) জ্ঞানী-গুনি ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন করার জন্য যতটুকু সময় দরকার তা আমরা বুঝি। সেই সময়টুকু আমরা দেবো। ঠিক সময়ে নির্বাচন না দিলে রাজপথে নামবে বিএনপি। সেই সময়টা অতিক্রান্ত হলে জনগন নির্ভর বিএনপি জিয়াউর রহমানের দল তারেক রহমানের নেতৃত্বে অবশ্যই ঘরে বসে চিনাবাদাম খাবে না। প্রকৃত বাস্তবতায় যেটা করার সেটা ভবিষ্যতে করব।
গয়েশ্বর বলেন, ‘‘আপাতত আমরা আল-হামদুলিল্লাহ বলতে থাকি। কিছুদিন দেখি। তারপর যা করিয়াছি অতীতে ভবিষ্যতে তাই করিব।”
‘‘মৃত্যুর পরোয়ানা আমাদের কাছে বড় না। মরতে যখন প্রস্তুত আছি মারতে আমাদের কেউ পারবে না।”
জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মুহাম্মদ আকরম খা হলে জাগ্রত বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ‘দেশে বর্হমান প্রেক্ষাপটে অন্তবর্তীকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা্ হয়।
‘কিছু দলকে দেখলে মনে হয় ক্ষমতায় চলে গেছে’
কোনো রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ না করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘ কিছু কিছু রাজনৈতিক দল আছে তাদের কর্মকান্ড দেখলে ক্ষমতায় আসছে… তাদের মাপটাই অন্যরকম। তাদের নাম নাই বা বললাম।”
‘‘ তারা নির্যাতিত নিসন্দেহে। তবে এদেশটা স্বাধীন করে নাই… আমরা করছি। যারা স্বাধীন করছে তারা বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদীরা এবং এই স্বাধীনতার নেতৃত্ব এবং যুদ্ধের আহ্বান, স্বাধীনতার আহ্বান করেছিলেন সেই জিয়াউর রহমান… দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তিনিই। ”রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ নেয়া এই সরকারের দায়িত্ব আছে বলে আমরা মনে হয় না। দেখি মাঝে মধ্যে কিছু লোক যায়... আসে। তারা একটু পুলকিত হয় যে, এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সাথে ছবি তোলে…. আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করে আপনি দেখার দেখার মতো অবস্থা হয় নাই… না দেখাই ভালো।”
‘নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে’
গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ পতিত সরকার জামায়াতে ইসলামীর অনেকে ফাঁসি দিছে, অনেক অত্যাচার করেছে… জামায়াতে ইসলামকে কিন্তু হাসিনার মতো ফ্যাসিবাদী ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নাই। করেছে। ”
‘‘যাই করেন….আফটার অ্যাফেক্ট কি হবে…, কাজকে ঘৃণা করেন, জাতিকে নয়। যারা এখনো বিভিন্ন সংগঠনের নামে অত্যাচার করছে, মানুষ খুন করছে, লুট করছে তারা তো আরামেই আছে। তাদের ঘরে ঘরে বিচার করেন । অর্থাৎ অন্যায় করলে তার পরিনাম কি হয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এতোগুলো লোক সীমান্ত অতিক্রম করলো, এতোগুলো লোক দেশে-বিদেশে গেলো…. কার বদৌলতে? কে তাদেরকে পালাতে উৎসাহিত করেছে, সাহায্যে করেছে এর জবাব কে দেবে?”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো কেনো এখনো প্রত্যাহার হয়নি তা নিয়ে অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে গয়েশ্বর বলেন, ‘‘ কেনো এখনো দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার হয়নি। সেজন্য বলছি, সরকার বদলে গেছে কিন্তু তুমি আমি একই আছি.. কাছে আর দূরে।”
দেশে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে সর্তক থাকার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
‘জাগ্রত বাংলাদেশ’ এর সভাপতি জহিরুল ইসলাম কলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, জাগ্রত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেলন হোসেন শাহীন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :