ঢাকা: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাময়িক বরখাস্ত ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ১১ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরেছেন। এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া) শাহজাহান শিকদার ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪ বছর ৫ মাস ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৪৭, ৬১ ও ৭১) কর্মরত ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালকের অধীনে লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম-৪৭) বদলি করা হয়।
এ ছাড়াও তিনি বলেন, মাত্র ৮ মাসের মাথায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ পরিচয় দেওয়া রেজায়ে রাব্বী পুনরায় ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৭২) বদলি হন। এরপর থেকে পুনরায় তিনি ২ বছর ১ মাস ফায়ার সার্ভিস ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (যথাক্রমে ঢাকা-৭২ ও ৫৭) কর্মরত ছিলেন।
গত ১৯ আগস্ট তাকে লালমনিরহাট-১ কর্ম অঞ্চলে সংযুক্ত আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে অদ্যাবধি কর্মস্থলে যোগদান করা থেকে বিরত রয়েছেন।
গত ১৭ জুলাই দেশে চলমান পরিস্থিতিতে সব ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টরদের নিজ নিজ কর্ম অঞ্চলের ফায়ার স্টেশনে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী তৎকালীন কর্ম অঞ্চলের অধীন ফায়ার স্টেশনে গত ১৯ জুলাই থেকে ২২ জুলাই বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নতুন সংযুক্ত আদেশকৃত কর্মস্থলে যোগদান থেকেও বিরত থাকেন।
এসময় কিছু গণমাধ্যমে তার বিষয়ে ‘ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মী রাব্বী লাপাত্তা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ-৩০(২৪)’ দ্বারা তাকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে গত ৫ সেপ্টেম্বর (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২ নং বিধিমতে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করার লক্ষ্যে তিনি মিডিয়ায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগারমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থি। এছাড়া ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ ০৭(২৩) দ্বারা ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল ফায়ারফাইটার মো. আব্দুল হান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ‘বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি আদেশ-১০(৩৪)’ দ্বারা গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করা হয়। তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী জনৈক মহিলা তাকে গুম করার যে অভিযোগ তুলেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ‘ফায়ার ফাইটারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ, পুলিশ বলছে গ্রেফতার শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে ডিবির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, সুনির্দিষ্ট মামলায় আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয় সেজন্য উল্লিখিত, এর আগে রেজায়ে রাব্বী গণমাধ্যমে বলেন, ১৩ বছর আগে আমি ও নিখোঁজ হান্নান ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেই। সে আমার ব্যাচমেট। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের দুই ভাই আনিস ও সালাউদ্দিন সারাদেশে ঘুরে ঘুরে বদলি ও টেন্ডার বাণিজ্য এবং মালামাল কেনায় নানান অনিয়ম করে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, এই সিন্ডিকেটকে টাকা না দিলেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের বারবার বদলি করা হয়। আমি টাকা না দেওয়ায় গত দুই বছর ১০ মাসের মধ্যে পাঁচবার বদলি করা হয়। এমন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে পাইনি। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে আবেদন দিলে আমাকে হয়রানি না করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সেটিও মানা হয়নি। আমি হয়রানি বন্ধে আদালতেও রিট করেছি। এই রিট চলমান।
আপনার মতামত লিখুন :