গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারতীয় সরকার। এ সংক্রান্ত বিষয়ের সঙ্গে জড়িত কয়েকজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’।
ভারত সরকার এমন সময়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মোদি সরকারের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি ‘কূটনৈতিক নোট’ পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট থেকে ৭৭ বছর বয়সী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। যদিও তার সঠিক অবস্থান এখনো পরিষ্কার নয়। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তিনি দিল্লির একটি নিরাপদ স্থানে রয়েছেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে নিতে ভারতের কাছে একটি কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভারতীয় কর্মকর্তা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানিয়েছেন, ‘ভারতে অবস্থানের সুবিধার্থে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে’। তারা আরও জানান, শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয়ের বিষয়টি মোকাবেলার জন্য ‘বিশেষ কোনো আইন’ নেই।
তারা উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন।
হিন্দুস্তান টাইমস গত ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ সরকার যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে, তাতে ভারত সরকারের সাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, এই জাতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেনি ঢাকা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক নোটের সব দিক খতিয়ে দেখার পর ভারত সরকারকে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য কয়েক মাস সময়ও লাগতে পারে। এর ফলে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া, দিল্লির ‘ফরেন রিজিয়নাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (এফআরআরও)’ এর মাধ্যমে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার কাগজপত্র বৈধ করা হয়েছে, কারণ ভারতে কোনো নির্দিষ্ট উদ্বাস্তু আইন নেই। তবে, এই ছাড়পত্র কত দিনের জন্য দেওয়া হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গুম ও হত্যায় জড়িত ২২ পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া জুলাই–আগস্টে গণহত্যায় জড়িত ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, এর মধ্যে শেখ হাসিনার নামও আছে।’
আপনার মতামত লিখুন :