ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বৈষম্য দূরীকরণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৪, ০৩:৩১ পিএম

বৈষম্য দূরীকরণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা: ‍‍‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২‍‍’ বাস্তবায়ন, ফিল্ড পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পদ আপগ্রেডেশন সহ নানা বিষয়ে সংস্কার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১২ টার পর রাজধানীর মহাখালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সামনে দাবি আদায়ে মানববন্ধন করেন তারা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সকল বৈষম্য দূর করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার জোর দাবি জানিয়ে ‘বৈষম্য দূরীকরণ কমিটির’ প্রধান সমন্বয়ক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান থাকবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নানা সমস্যা রয়েছে এখনই সময় সেগুলোর সংস্কার ও যৌক্তিক সমাধান করার।’

ইসমাইল হোসেন বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত নবসৃষ্ট বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ-সংস্কার- রক্ষণাবেক্ষণ তথা দেশ গঠন, জনসাধারনকে সহায়তা প্রদান এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে থানা (বর্তম, এ উপজেলা পরিষদ) পর্যায়ে একটি করে ২য় শ্রেণির প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পদ সৃষ্ট হয় এবং তৎকালীন ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়) সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাগণ থানা পর্যায়ে তাদের দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়) অধিন ‘ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর’ (বর্তমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর) সৃষ্ট হয় এবং উপজেলা পরিষদ পর্যায়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (২য় শ্রেণি) ১টি পদ, অফিস সহকারীর ১টি পদ এবং জেলা পর্যায়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার (৭ম গ্রেড) ১টি পদকে অধিদপ্তরের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে এ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে আসছে। ১৯৭২খ্রি. হতে ২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত দীর্ঘ ৫২ বছর অতিবাহিত হলেও উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে আর কোন জনবল বৃদ্ধি এবং অন্যান্য দপ্তরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পদ মর্যাদা যুগোপযোগী করা হয়নি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ অনুমোদিত হওয়ার পর ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো বিলুপ্ত হয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম) গঠিত হলেও বিগত ১২ বছরে জনবল কাঠামো এবং নিয়োগ বিধি প্রণিত হয়নি বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে সাম্য ও ন্যায় ভিত্তিক মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ বিনির্মানে সুদীর্ঘকাল ব্যাপী অবহেলা ও বঞ্চনায় জর্জরিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গঠনমূলক সংস্কার ও সৃজনশীল পরিবর্তন প্রত্যাশায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শোষণ ও বৈষম্য বিলোপে মানববন্ধন থেকে ৮ দফা দাবি জানান। অনতিবিলম্বে তাদের আট দফা বাস্তবায়নের দাবিও জানানো হয়।

আট দফা দাবিগুলো:
১. উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (PIO) এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (DRRO) পদের আপগ্রেডেশন ও পদনাম পরিবর্তন করতে হবে।

২. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ এর আলোকে প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো ও নিয়োগ বিধিমালা অনুমোদন করতে হবে।

৩. সচিবালয়ের ন্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন ও আপগ্রেডেশন করতে হবে।

৪. অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরাধীন সকল প্রকল্পে কর্মরত (আউটসোর্সিং/ প্রকল্প/ মাষ্টাররোল) উপ-সহকারী প্রকৌশলী, কার্যসহকারী, হিসাব রক্ষক, হিসাব সহকারী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, গাড়ি চালক, অফিস সহায়ক, লিফট অপারেটর, ইলেক্ট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।

৫. উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে রাজস্বখাতে সৃষ্ট পদে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিস সহায়কদের চাকরি এবং SMODMRPA এর প্রকল্পের অধীনে কর্মরত উপ-সহকারি প্রকৌশলীদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে।

৬. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সকল শূন্যপদ পদোন্নতি/ চলতি দায়িত্ব/ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ করতে হবে।

৭. মাঠ পর্যায়ে কর্মরত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের ছুটি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রক বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের বদলি/পদায়ন সংক্রান্ত নির্দেশিকা-২০১৯ বাতিল করতে হবে।

৮. জরুরী ত্রাণ কার্যক্রম/উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে যানবাহন প্রদান।

আরবি/এস

Link copied!