ঢাকা শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা

বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করছে ভারত

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৯:০১ পিএম

বাংলাদেশে আধিপত্য বিস্তার করছে ভারত

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ভারত বিভিন্ন অসম চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে, যার উদাহরণ তিস্তা নদীর পানি হিস্যা। কোন সমঝোতা ছাড়াই বাংলাদেশের ৫৪টি আন্ত:সীমান্ত নদীর ৩০টির উপর নানা ধরণের অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। ভারতের বড় সংবেদনশীল জায়গা সেভেন সিস্টার। যার কারণে নানাভাবে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ভারত রাষ্ট্র।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সর্বজনকথার আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। ‘বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্য স্বরূপ এবং করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

সেমিনারে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান এবং সঞ্চালনা করেন গবেষক মাহা মির্জা।

এসময় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত রাষ্ট্র কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ভারতের মানুষ সহমর্মীতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা অবশ্যই সেই সহযোগিতার কথা স্মরণ করবো এবং সেইসাথে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্যের বিরোধিতাও করবো। শেখ হাসিনার শর্তহীনভাবে আত্মসমপর্ণ করার কারণ নির্বাচন ছাড়া চিরস্থায়ী ক্ষমতা তৈরি।

তিনি বলেন, ভারত যদি ট্রানজিট ব্যবহার করে সুবিধা নিতে পারে, তবে বাংলাদশও ভারতের ভেতরে ট্রানজিট দিয়ে সুবিধা নিতে পারতে। কোনো অসম চুক্তি বাংলাদেশ চায় না।

বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের আধিপত্যের সামগ্রিক চিত্র তুলে সেমিনারে প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, ভারত বিভিন্ন অসম চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করেছে, যার উদাহরণ তিস্তা চুক্তি। কোন চুক্তি বা সমঝোতা ছাড়াই ভারত বাংলাদেশের ৫৪টি আন্ত:সীমান্ত নদীর মধ্যে ৩০টির উপর অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সরকার ব্রহ্মপুত্রের উজানে বাঁধ দিয়ে ১২টি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নদীর উজানে বাধ নির্মাণ করে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ আবার উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে সঞ্চালন করার সমঝোতা করেছে।। অথচ বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ‘ওয়াটার কোর্স কনভেনশন ১৯৯৭’ স্বাক্ষর করেনি।

অধ্যাপক তানজিমউদ্দীন খান বলেন, ভারতের সবথেকে বড় সংবেদনশীলতার জায়গা তার সেভেন সিস্টার। যার কারণে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানাভাবে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তির ক্ষেত্রে বারবার রাজ্য বনাম কেন্দ্রের যে ঠেলাঠেলি তা অনেকটাই রাজনৈতিক। তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। তাই তিস্তা চুক্তি করার সমস্ত এখতিয়ার আছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই তিনি দ্রুততম সময়ে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন করার দাবি জানান তিনি।

সেমিনারে বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন, বহরম্পুর-পাবনা সঞ্চালন লাইন প্রকল্প, সূর্যমনি- কুমিল্লা সঞ্চাল লাইন, আদানির ঝাড়খণদের গোড্ডা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, রিলায়েন্স এলএনজিভিত্তিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র-এর মোট সক্ষমতা, উৎপাদন এবং এই প্রকল্পগুলোর জাতীয় স্বার্থের বিরোধগুলো তুলে ধরেন মোশাহিদা সুলতানা।

সেই সাথে তিনি ভারতের সাথে করা সমস্ত চুক্তি জনসমক্ষে উন্মোচন করতেও সরকারে প্রতি আহ্বান বক্তারা।

আরবি/জেআই

Link copied!