গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর সেদিনই দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন দলটির শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা। পরে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন মহল থেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি উঠে আসছে।
সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ভারতের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর সেটি নিয়েই চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। দুই দেশ সম্মুখীন হচ্ছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির সীমাবদ্ধতা। শুক্রবার দ্য ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত তথ্য উঠে এসেছে। যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এই অনুরোধটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
দ্য ইকোনমিক টাইমস বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ভূ-রাজনৈতিক কারণ বিবেচনায় ভারত তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের ত্যাগ করবে না। ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’ যে কোনো অনুরোধ কার্যকর না করার সুযোগ রয়েছে।
তবে কী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না ভারত? এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন সূত্র বলেছে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের চাপ সত্ত্বেও ভারত এ বিষয়ে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না। কারণ শেখ হাসিনা কিংবা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উভয় দেশেরই ওপেন সিক্রেট।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা এমন একজন নেত্রী, যিনি ভারতের স্বার্থ রক্ষা করেছেন, চরমপন্থিদের দমন করেছেন এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়িয়েছেন। তার প্রত্যর্পণ ভারতের প্রতিবেশী মিত্রদের ভুল বার্তা পাঠাবে। এছাড়া ভারত এই প্রত্যর্পণ অনুরোধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। যাতে লাগতে পারে কয়েক মাস।
আর শেখ হাসিনা যদি এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ফেরেন, তাহলে অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-বাংলাদেশ বর্তমান সম্পর্কের আলোকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ।
আপনার মতামত লিখুন :