গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। সেই সঙ্গে সেদিনই দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন দলটির শীর্ষ নেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে নানারকম অপপ্রচার চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার দেশটির গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা “উর্দিতে বাঙালি গণহত্যার রক্তের ছিটে! ৫৩ বছর পর বাংলাদেশে ফিরছে সেই পরাজিত পাক ফৌজ”- শিরোনামে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষক দল বা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিবে।
তবে আনন্দবাজার পত্রিকার এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এ তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ভারতীয় গনমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকায় (অনলাইন) প্রকাশিত “উর্দিতে বাঙালি গণহত্যার রক্তের ছিটে! ৫৩ বছর পর বাংলাদেশে ফিরছে সেই পরাজিত পাক ফৌজ” শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর এবং ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনো প্রশিক্ষক দল বা প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশের কোনো সেনানিবাসে প্রশিক্ষণের জন্য আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এছাড়াও প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তার চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ সংগ্রহ করে। সংবেদনশীল প্রতিরক্ষা বিষয়ে অজ্ঞতাপ্রসুত মতামত অনভিপ্রেত, অযাচিত ও আপত্তিকর।
প্রতিবাদলিপিতে আইএসপিআর উল্লেখ করেছে- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নীতিতে অটল। নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ছাত্র বিনিময় ও প্রশিক্ষনসহ বিবিধ সহযোগিতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে।
আইএসপিআর আরও জানায়, আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর কোনো মন্তব্য বা ব্যাখ্যা গ্রহণ করেনি। এই উপেক্ষা প্রতিবেদনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথ্যের স্বচ্ছতা এবং সঠিক তথ্য প্রচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়া গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য যাচাই করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে আইএসপিআর’র পক্ষ থেকে।
আপনার মতামত লিখুন :