বিদ্যুৎ মানুষের জীবনের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে পড়েছে যে বর্তমানে বিদ্যুতবিহীন চলাটা একেবারেই অসম্ভব বলা যায়। কালের বিবর্তনে মানুষ পরিবর্তন হয়েছে। উন্নত হয়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। দৈনন্দিন চলাফেরা সকল কার্যক্রমের সাথে বিদ্যুৎ যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত পড়েছে। তাই বিদ্যুৎবিহীন চলার কথা কল্পনাও করা যায় না। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন জীবন চলানো অসম্ভব হলেও সম্প্রতি দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংকটে বিদ্যুতবিহীন থাকারই আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে!
যা সাধারণ মানুষের মনে হতাশা গড়ে তুলছে। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এবং সরকার পতনে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে চরম ধাক্কা খেয়েছে। যার প্রভাব বিদ্যুৎ খাত থেকে শুরু করে বড় বড় প্রজেক্ট গুলোতে পড়তে শুরু করেছে।
এতে করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে দেশের বড় দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় দেশে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। এই মুহূর্তে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যবস্থাও নেই। কারণ সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্রিডে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও তা সরবরাহ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। এতে শহরের পরিস্থিতি মোটামুটি সামাল দেওয়া গেলেও শহরের বাইরে গ্রামাঞ্চলে আবারও ব্যাপক হারে লোডশেডিং শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে গড়ে দিনে চার থেকে ছয় ঘণ্টা লোডশোডিং হচ্ছে। বিশেষ করে দুপুর ও সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ থাকছে না। দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই লোডশেডিং মেনে নিতে পারছেন না গ্রাহকরা। কারণ চারদিকে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজমান থাকায় একটু অন্ধকার হলেই শঙ্কা তৈরি হচ্ছে জনমনে। যে কারণে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত চান গ্রাহকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার থেকে গ্রামে দিনে-রাতে মিলিয়ে প্রায় আট থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ কম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়াতে পারছে না বিপিডিবি। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট কমে গেছে।
আড়াই মাস আগেও গ্যাস থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। বর্তমানে হচ্ছে পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। বিদ্যুতের এই সমস্যা সমাধান করাটা বর্তমান সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও আমরা মনে করি সরকার দৃঢ় পদক্ষেপের মাধ্যমে লোডশেডিং নিয়ন্ত্রণে রাখবেন।
এক্ষেত্রে এলএনজি টার্মিনাল চালু করলে ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন বাড়বে। ফলে লোডশেডিং কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে। তাই প্রথমত সরকারকে এলএনজি টার্মিনাল চালু করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :