তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনায় ওই ট্রেনের লোকমোটিভসহ (ইঞ্জিন) ৬টি কোচ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৮ নভেম্বর হওয়া ওই অবরোধের আগাম কোনো তথ্যও ছিল না উপকূলের কাছে বলেও জানিয়েছে রেলওয়ে।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খাঁনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৮ নভেম্বর নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন পার হয়ে মহাখালী লেভেল ক্রসিং গেইট অতিক্রমকালে সরকারি তিতুমীর কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনরত একদল শিক্ষার্থীর পাথর নিক্ষেপের শিকার হয়।
এতে ট্রেনটির ইঞ্জিন নম্বর-৩০১৯, শোভন চেয়ার ১০১৯,১০১৬, ৬২০৬,৬২০৫ ও ৬৬০৫ কোচসমূহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উক্ত পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় আনুমানিক ১৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। আহত যাত্রীদেরকে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বলা হয়, আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটে মহাখালী লেভেল ক্রসিং গেইট আটকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী কর্তৃক উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা করার ঘটনাটি ঢাকা কন্ট্রোলকে অবহিত করেন এসএসএই (পথ), ঢাকা। উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে আনুমানিক ১১টা ৩৭ মিনিটের দিকে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে লেভেল ক্রসিং গেইটটির দূরত্ব ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার এবং তেজগাঁও স্টেশন থেকে দূরত্ব দুই কিলোমিটার।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এবং তেজগাঁও স্টেশনের কর্তব্যরত মাস্টারগণের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ঘটনার পূর্বে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীগণের কাছ থেকে আন্দোলনের ব্যাপারে পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। এ ছাড়াও, এসএসএই (পথ), ঢাকা কর্তৃক জানা যায়, ঘটনার সময় গেইটে কর্তব্যরত গেইটম্যানকেও রেলপথ অবরোধ করে ব্যানার ফ্ল্যাগ দেখিয়ে ট্রেন থামানোর ব্যাপারে পূর্ব থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ট্রেন পরিচালক কর্তৃক জানা যায়, নির্ধারিত গতিতে ছুটে চলা ট্রেনটি মহাখালী গেইটে ঘন ঘন হুইশেল দিয়ে থেমে যায় এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহুর্মুহু পাথর নিক্ষেপের শিকার হন তিনি। প্রায় ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর ট্রেনটি পুনরায় চলতে শুরু করে।
অধিকন্তু, তিতুমীর কলেজের ঐক্য ব্যানারে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে বরাবর রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন সংক্রান্ত কোনো স্মারকলিপি তথাপি পূর্ব সতর্কবার্তা পাওয়া যায়নি। যার দরুন ট্রেনসমূহ স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করেছিল।
রেলওয়ে আইন, ১৮৯০ এর ১২৬ নম্বর ধারা মোতাবেক যেকোনো উপায়ে রেলপথ অবরোধ করে রেলপথ কিংবা ট্রেন কিংবা ট্রেনে ভ্রমণরত যাত্রীর ক্ষতিসাধন করা বা ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। দুর্ঘটনা কিংবা রেলপথের ক্ষতিসাধন সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটার পূর্ব সতর্কবার্তা না পাওয়া গেলে ট্রেন কার্যকরী সময়সূচি মোতাবেক স্বাভাবিক নিয়মেই চলাচল করে।
পূর্ব সতর্কবার্তা কিংবা কোনোপ্রকার স্মারকলিপি বাংলাদেশ রেলওয়েকে না দিয়ে অতর্কিত রেলপথ অবরোধ করে ব্যানার ফ্ল্যাগ দেখিয়ে ট্রেন থামিয়ে ট্রেন ও ট্রেন যাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনাটির দায় বাংলাদেশ রেলওয়ের নয়। বরং যারা অতর্কিতে কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কবার্তা ব্যতীত উক্ত ঘটনা সংঘটিত করেছেন তাদের।
আপনার মতামত লিখুন :