চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভেন্যু নিয়ে চলমান নাটক বোধহয় অবশেষে অবসান হতে যাচ্ছে! বহু নাটকীয়তার পর হাইব্রিড মডেলেই রাজি হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তাহলে কি কয়েকদিন ধরে চলা যুদ্ধে ভারত তথা বিসিসিআইয়ের কাছে হেরে গেল পিসিবি?
অবশ্য তেমনটা ভাবার সুযোগ নেই। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো ২০২৭ সাল পর্যন্ত ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সবগুলো টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রেও হাইব্রিড মডেল পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে হতে যাওয়া এ টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানে। কিন্তু ভারত সাফ জানিয়ে দেয়, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশে তারা খেলতে যাবে না। এ সমস্যা সমাধানে হাইব্রিড মডেলের আলোচনা আসতে থাকে। আইসিসির এমন প্রস্তাবে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বয়কটের ঘোষণা দেয়। এক পর্যায়ে অবশ্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) থেকে হাইব্রিড মডেলের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। তবে সেখানেও একটা শর্ত দিয়ে রাখে পিসিবি, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতের সব টুর্নামেন্টও হাইব্রিড মডেলের কড়া শর্ত দেয় পাকিস্তান।
পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ সমস্যা সমাধানে গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে পিসিবির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সঙ্গে বসেছিলেন আইসিসির নতুন প্রেসিডেন্ট জয় শাহ। এ বৈঠকেই এমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে পিটিআই। সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুসারে, এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসা বাকি।
আইসিসির এক সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সব বোর্ড হাইব্রিড মডেল মেনে নিয়েছেন। ফলে ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পাকিস্তান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভারত নিজেদের সব ম্যাচ খেলবে দুবাইয়ে। এটাই সকলের জন্য ভাল হল।’
অন্যদিকে, ভারতে অনুষ্ঠিত সব টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে পিসিবির পক্ষ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত হাইব্রিড মডেলের যে দাবি ছিল, সেটা ২০২৭ সাল পর্যন্ত মানা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ভারতে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ম মেনে ওই দুই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান প্রতিবেশী দেশ ভারতের খেলতে যাবে না।
অবশ্য ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এমনিতেই ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করবে শ্রীলঙ্কা। এ শর্ত মোতাবেক, পাকিস্তানের সবগুলো ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় হবে। এদিকে ওই সূত্রের বরাতে পিটিআই উল্লেখ করেছে, ‘২০২৬ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায় হবে। আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হাইব্রিড মডেলে রাজি হতে পাকিস্তান যে দাবিগুলো করেছে, সেসব এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে।’
পিসিবির শর্ত মানা হলে, ২০২৫ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচগুলো আয়োজন হবে অন্য দেশে। অর্থাৎ লিগ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে খেলা পড়লে ভারতকে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে যেতে হবে। যদিও এখনো বিশ্বকাপের সূচি প্রকাশিত হয়নি।
এর আগে আইসিসির সর্বশেষ বৈঠক শেষে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি বলেছিলেন, ‘ক্রিকেটের জেতা উচিত। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেখতে হবে, সবারই যাতে সম্মান বজায় থাকে। ক্রিকেটের জন্য যা ভালো হবে, আমরা সেটাই করতে যাচ্ছি। আমরা যে শর্তেই যাই না কেনো, তা হবে সমান-সমান।’
আপনার মতামত লিখুন :