কক্সবাজারে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ স্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে দেওয়া ৭০০ একর বনভূমির বরাদ্দ বাতিল করেছে সরকার।
বন্দোবস্ত বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে রোববার (১০ নভেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লিখিত বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২৯ আগস্ট এ বিষয়ে আধা সরকারি পত্র দেন পরিবেশ উপদেষ্টা। সেখানে বলা হয়েছে, বন্দোবস্তকৃত এলাকা ১৯৩৫ সাল থেকে ‘বন আইন, ১৯২৭’-এর ২৯ ধারার আওতায় রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত।
এই ভূমিতে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা এবং হাতি, বানর, বন্য শুকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এ বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। এছাড়া বনভূমি ইজারা দেওয়া বা না দেওয়ার এখতিয়ার কেবল বন বিভাগের।
কিন্তু বিগত সরকারের আমলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ নেয় ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে। বরাদ্দ দিতে ভূমি মন্ত্রণালয় জায়গাটিকে ‘অকৃষি খাসজমি’ হিসেবে দেখায়।
রেকর্ডে ‘রক্ষিত বন’ উল্লেখ না থাকায় বন বিভাগ এ বিষয়ে মামলা করে। পাশাপাশি, ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলাও হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগ এ বন্দোবস্তের বিষয়ে স্থগিতাদেশ দেন যা আপিল বিভাগে বহাল রয়েছে।
১৯৯৯ সালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ঝিলংজা ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে বনভূমির গাছ কাটাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়। ৭০০ একর রক্ষিত বনও এই সংকটাপন্ন এলাকার অন্তর্ভুক্ত।
আপনার মতামত লিখুন :