গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে পতন হয় তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৮ আগস্ট বাংলাদেশে গঠন হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রধান উপদেষ্টা হয়ে যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আর এই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হবে এবং এটা আরও কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি।
গতকাল রোববার (১৭ নভেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুকে জলবায়ু সম্মেলনের ফাকে তিনি এ সাক্ষাৎকার দেন।
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে, সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনো ভাবনা আছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘না। আমার মাথায় এমন কিছু নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সীমা কী হতে পারে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটা করা হবে।’
তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি তা বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।’
চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সরকারব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটো প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে—নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি।
সারা দেশ নতুন কিছু চেয়েছে জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
এখানে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, তোমরা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চাও নাকি এসব সংস্কার শেষ করা হোক তা চাও।’ সবকিছু জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :