ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
৬ জাহাজ ক্রয়

ঋণ পরিশোধে ৪৭৫.২৫ কোটি টাকা প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম

ঋণ পরিশোধে ৪৭৫.২৫ কোটি টাকা প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) বাস্তবায়িত ৬টি জাহাজ ক্রয় প্রকল্পের জন্য গৃহীত ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সাবসিডারি লোন এগ্রিমেন্ট (এসএলএ) মোতাবেক প্রথম কিস্তি বাবদ প্রায় ৪৭৫.২৫ কোটি টাকার চেক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিকট হস্তান্তর করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার হাতে চেক তুলে দেন।

উল্লেখ্য, বিএসসি‍‍`র জন্য জি-টু-জি ভিত্তিতে ৬টি জাহাজ ক্রয়/সংগ্রহের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত ৬ টি নতুন জাহাজ ক্রয় (প্রতিটি প্রায় ৩৯,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন ৩ টি নতুন প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এবং ৩  টি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার, শীর্ষক প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে গত ১৪ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে একটি ঋণচুক্তি (Loan Agreement-LA) স্বাক্ষরিত হয়।

যে ঋণের মূল বা আসল (Principal) এর পরিমাণ ১,১৯৯,৯৯৯,০৭০ ইউয়ান, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৪৫৭,৬৭,৯৮,৭৮৪/- (এক হাজার চার শত সাতান্ন কোটি সাতষট্টি লক্ষ আটানব্বই হাজার সাতশত চুরাশি) টাকা। এর ধারাবাহিকতায় উক্ত ঋণ পরিশোধের জন্য গত ২৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে অর্থ বিভাগ ও বিএসসি-এর মধ্যে অপর একটি Subsidiary Loan Agreement (SLA) স্বাক্ষরিত হয়। 
যা মোট ২,৪২৫.০২ কোটি  টাকা বাংলাদেশ সরকার (অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়)-কে বিএসসি হতে আগামী ১৩ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। স্বাক্ষরিত SLA চুক্তি অনুযায়ী গ্রেস পিরিয়ডকালীন মোট সুদের পরিমাণ ৪৭৫,২৫,১৩,৩৪০/- (চারশত পঁচাত্তর কোটি পঁচিশ লক্ষ তেরো হাজার তিনশত চল্লিশ) টাকার চেক আজ প্রধান উপদেষ্টার নিকট  আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। চেক হস্তান্তরকালে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের  উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এবং বিএসসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেকসহ অন্যান্য কর্মকতাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রকল্পটির মাধ্যমে সর্বশেষ জাহাজ সংগ্রহের সুদীর্ঘ ২৭ বছর পর গত ২০১৮-২০১৯ সালে বিএসসি’র বহরে উক্ত ০৬টি বাণিজ্যিক জাহাজ যুক্ত হয়েছে। উক্ত প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত ০৬টি জাহাজের মধ্যে ০৫টি জাহাজ (এম. ভি. বাংলার জয়যাত্রা, এম. ভি. বাংলার অর্জন, এম. টি. বাংলার অগ্রযাত্রা, এম. টি. বাংলার অগ্রদূত এবং এম.টি বাংলার অগ্রগতি) বর্তমানে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক পরিমন্ডলে পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকা স্বগৌরবে বহন করে চলছে।  উল্লেখ্য, বিএসসি ৫৩ বছরের ইতিহাসে সর্বশেষ  অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা (২৫০ কোটি টাকা) অর্জন করে। বিএসসি’র এ ক্রমাগত অগ্রগতিতে প্রকল্পের মাধ্যমে বহরে সংযুক্ত ০৫টি জাহাজের ভূমিকা অপরিসীম।

এছাড়াও বিএসসি এরই মধ্যে বেশ কিছু নতুন জাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। যেমন, চীন থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আরো ০৪টি নতুন বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) এবং আরো ০৪টি মাঝারি আকারের (০২টি নতুন ৪০,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন অয়েল ট্যাংকার এবং ০২ টি নতুন ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহ) ইত্যাদি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ০২টি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহ করার লক্ষ্যে বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের ৩২২তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক নৌপথে দক্ষ ও নিরাপদ জাহাজ পরিচালনার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখতে প্রতিষ্ঠানটি নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।

আরবি/এস

Link copied!