ঢাকা রবিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৫

আসছে তাপদাহ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০২৫, ১১:৪৬ এএম
প্রতীকি ছবি

দেশের ইতিহাসের গত বছরের এপ্রিলে তাপমাত্রা ছিল ৭৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।  এবারও তীব্র তাপদাহের শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে এপ্রিল ও মে মাসে মেঘ সৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা বেশি থাকতে পারে বলেও  জানান তারা।

আবহাওয়াবিদরা বলেন, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। আর ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা বেশি ছিল ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেখা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে গেছে। এই শীতে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহও দেখা যায়নি। শীতে বৃষ্টিও হয়েছে প্রায় ৭৭ শতাংশ কম।

আবহাওয়া অধিদপ্তর এরই মধ্যে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলেছে, মার্চে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকতে পারে। এ মাসের শেষ দিকে পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে এক থেকে দুটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এপ্রিলজুড়ে থাকবে তাপপ্রবাহ।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, শনিবারের পর থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করতে পারে এবং তা অব্যাহত থাকবে। শীতের মাসগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা এবার ইঙ্গিত দিচ্ছে, গরম অনেকটাই বেশি পড়বে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম বলেছেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাব এখন মোকাবিলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে দেশে। বর্ষা আসার সময় পাল্টেছে। চলে যেতেও বিলম্ব হচ্ছে। শুধু বর্ষা নয়, শীত বা গ্রীষ্মেও বেড়ে যাচ্ছে তাপ। মেঘাচ্ছন্ন দিনের পরিমাণ বাড়ছে। তাতে শীতের দিন তাপ বাড়লেও শীতের তীব্রতার অনুভূতি হচ্ছে বেশি মাত্রায়। এর সঙ্গে বাড়ছে বায়ুদূষণ।

জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার লা নিনার বছর হলেও, গত বছরের চেয়ে তাপমাত্রা এবার অনেকটা কমে যাবে– এমন সম্ভাবনা কম। গত বছরের উষ্ণ আবহাওয়ার ধারাবাহিকতা এবারও থাকতে পারে। এর জন্য যে শুধু বৈশ্বিক আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতিই কারণ, তা-ই নয়। গাছ উজাড়, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ পরিবেশ বিরুদ্ধ নানা কর্মকাণ্ডের ভূমিকা আছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, গরমকালে তাপপ্রবাহ প্রশমনে বড় ভূমিকা রাখে কালবৈশাখীর ফলে সৃষ্ট ঝড় ও বৃষ্টি। এবার মার্চ ও এপ্রিলে দেশে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড় থাকতে পারে। তবে তাতে গরম কমবে না। এর সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। আর সেই সঙ্গে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও নগরায়ণ, বন বিনাশ, গাছ ধ্বংসের মতো কারণগুলো রয়েছে। তাই তাপমাত্রা যাই থাকুক, গরমের অনুভূতি আগের চেয়ে অনেক বেশি থাকতে পারে। সেই অনুভূতি এবারও যথেষ্ট থাকার আশঙ্কা আছে।

তথ্যসূত্র: সমকাল