ময়লা আবর্জনায় জন্ম নেয় তেলাপোকা। পোকাটি দেখলে অনেকেই ভয় পেয়ে যান।
অথচ অবাক লাগবে, এই পোকাই দিন দিন সোনার মতো মূল্যবান হয়ে উঠছে।
এটি বর্তমানে বিভিন্ন দেশে মজার খাবার হিসেবে জনপ্রিয়। বিশেষ করে চীনে তেলাপোকা ফ্রাই এখন মুখরোচক খাবার। দামও বেশ চড়া। শুধু খাবারই নয়, এই পোকা থেকে তৈরি হচ্ছে ওষুধও। তা ছাড়া হাস-মুরগি কিংবা মাছের খাবার হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে বেশ।
ফলে চাহিদা পূরণে রীতিমতো চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। তেলাপোকা খাবার হিসেবে বেশি চাহিদা চীনে। দেশটির একটি খামারে বছরেই উৎপাদিত হচ্ছে ৬ হাজার কোটি তেলাপোকা।
এমন অসংখ্য খামার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে দেশটিতে। বর্তমানে চীনে শতাধিক তেলাপোকা খামার রয়েছে বলে জানা যায়।
এই পোকার জোগান দিচ্ছে আফ্রিকাও। আফ্রিকার দেশগুলোতেও অনেক খামার গড়ে উঠেছে।
চীনের জনপ্রিয় ওষুধ কোম্পানি গুডডক্টের তথ্য অনুযায়ী, কেবল ২০১৮ সালেই তেলাপোকা থেকে তৈরি ‘ওষুধ’ বিক্রি করে ৬৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই একুশ শতকে এসেও চীনের বহু মানুষ বিশ্বাস করে তেলাপোকা থেকে তৈরি পণ্য জখম, টাক, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে। এমনকি টিউমারের বিরুদ্ধেও ভালো কাজ করে।
গুডডক্টরের প্রতিনিধি ওয়েন জিয়াঙ্গু দাবি করেন, ‘ওরাল ও পেপটিক আলসার, ত্বকের ক্ষত, এমনকি পেটের ক্যান্সার সারানোর জন্যও তেলাপোকার নির্যাস উপকারী।’
ঔষধ ছাড়াও মুরগির খাবার হিসেবে তেলাপোকার ব্যবহার হচ্ছে। মাছ চাষিদের কাছেও তেলাপোকার চাহিদা ব্যাপক।
গা ঘিনঘিনে এই পোকায় আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। একজন মানুষের শরীরের প্রোটিনের যাবতীয় চাহিদা তেলাপোকা খেয়ে পূরণ করা সম্ভব। এ ছাড়াও এর বেশকিছু দারুণ পুষ্টিগুণও আছে।
তেলাপোকা থেকে তৈরি তেল ও দুধ খুব স্বাস্থ্যকর বলে গবেষকদের ধারণা।
আর এই পোকা খামার তৈরিও খুব কম খরচ। কারণ যেকোনো পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারে পোকাটি। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও টিকে থাকে অনায়াসে। ফলে অনেক উদ্যোক্তার কাছে এই পোকার চাষ লোভনীয় ব্যবসাতে পরিণত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :