সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের অর্থনৈতিক খাতসহ সব ক্ষেত্রে নানা রকমের অচল অবস্থার প্রকৃত চিত্র জনগণের সামনে উঠে আসতে শুরু করেছে। জানা গেল, ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিনের জমে থাকা খেলাপি ঋণের আসল ছবিটিও। দেশের ব্যাংকগুলোতে চলতি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।
সর্বশেষ উল্লিখিত ৩ মাসেই খেলাপি বেড়েছে ৭৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এ সময়ে সরকারি ব্যাংকগুলোতে যে ঋণ বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে। যেমন, সরকারি ব্যাংকগুলোয় খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৩ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে খেলাপি বৃদ্ধির পরিমাণ ৪৯ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে স্পষ্ট হলো যে, মালিকানা বদল হওয়া ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণের বেশি। আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত বেক্সিমকো, এস আলম, বসুন্ধরা গ্রুপসহ আরও অনেকের ঋণও খেলাপি হয়ে পড়েছে আগের মতোই ।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখন খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। তারপর থেকেই খেলাপির পরিমাণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ২০২৪ সালে সেটা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বারংবার অভিযোগ করেছেন, তৎকালীন সরকারের ছত্রছায়ায় ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণের নামে লুটপাট হয়েছে। যার হয়তো বেশিরভাগ অংশ পাচার হয়ে গেছে বিদেশে।
সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপির আসল চিত্রটি আরও বেরিয়ে আসবে বলে অনেকের ধারণা। এর আগে কাগজে-কলমে ঋণের পরিমাণ কম দেখানোর জন্য একের পর এক নীতি পাল্টানো হতো। এখন সরকার পরিবর্তনের পর সেই নীতি থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ। এতে কিছু আশার সঞ্চার হয়েছে সব দিকে।
বলাবাহুল্য, ব্যাংকে যে টাকা জমা থাকে- তার সবই জনগণের। সেখান থেকে ঋণ বিতরণের সুযোগে লক্ষ কোটি টাকা বছরের পর বছর অনাদায়ি হয়ে পড়ে থাকে। এ যেন একটা অত্যাবশ্যকীয় এবং অবধারিত বিষয়। তা কেন হবে?
এই বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণের টাকা আদায় হয় না কেন? সে টাকায় কেন দেড়-দুই কোটি বেকারের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় না? সে টাকা কাজে লাগিয়ে কেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সন্ত্রাসী-সিন্ডিকেট দমন করা যাবে না? আরও কত রকমের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সে টাকা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। খেলাপির টাকায় সেসব সমাধা করা যায়। কিন্তু তার কিছুই হয় না। কেন হয় না? এর নেপথ্যে কী রহস্য লুকিয়ে রয়েছে?
ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা দিন দিন কমে গেছে। তাই এই খাত আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। পরিতাপের বিষয়, দেশে ঋণ খেলাপির বড় অংশই ইচ্ছাকৃত। কিন্তু সমাজের এসব দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় কি নেই? নিশ্চয় রয়েছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য উত্তরণের কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বাংলাদেশে।
বাস্তব চিত্রটা হচ্ছে এমন যে, ব্যাংক থেকে মোটা অংকের টাকা ঋণ নিয়ে আর ফেরত না দেওয়ার প্রবণতা সমাজে একেবারে স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে। সমাজে একটা গা সওয়া ভাব দেখা যায়- মনে হয় এটা যেন কোনো দোষের বিষয় নয়। যে কারণে খেলাপিদের মধ্যে কোনো রকম আপরাধবোধও নেই। ঋণ নিয়ে সেটা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে কোনো দায়িত্বশীলতা দেখা যায় না। কারণ ঋণ ফেরত না দিয়েও নানা অজুহাতে প্রচলিত আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এ দৃষ্টান্তই বেশি।
ব্যাংকের ঋণ প্রদান, যে নিয়ম ও কাঠামো অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক আওতার মধ্য দিয়ে হওয়ার কথা- সেটা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হতে দেখা যায় না। তখনই ঋণখেলাপি হওয়ার পথ সুগম হয়ে যায়। যথাযথভাবে নিয়ম মেনে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় ঋণ বরাদ্দ হলে- খেলাপি হওয়ার সুযোগও কমে যাবে।
এছাড়া, খেলাপি ঋণ আদায়ে দেশে অনেক আইন বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু এসব আইনও খুব একটা যথাযথভাবে কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। আবার রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবেও ব্যাংকিং খাতে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে পিছপা হতে হয় অনেক ক্ষেত্রে। অর্থঋণ আদালতে ঝুলে আছে অসংখ্য মামলা। ঋণ তথ্য সব সময় জনসম্মুখে সঠিকভাবে প্রকাশও হয় না। এসব নানা কারণে ব্যাংক খাতে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় সীমা ছাড়িয়ে। যা সাধারণ ভাবনাচিন্তা অতিক্রম করে যায়। এসব কারণে ব্যাংকের ওপর সাধারণ গ্রাহকদের আস্থা দিন দিন কমে যেতে বসেছে।
অতীতের সরকার ও তার অর্থমন্ত্রীরা অনেকবার বলেছেন যে, ব্যাংকের টাকা জনগণের টাকা। এ টাকা নিলে অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। দেশের টাকা জনগণের টাকা বেহাত হোক বা লোপাট হয়ে যাক, তা আমরা কেউই চাই না। সরকারি-বেসরকারি যে ব্যাংক থেকেই ঋণ নেওয়া হোক, সে ঋণের অর্থ ফেরত দিতেই হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ের সময় আত্মীয়স্বজন চেনা যাবে না। পাশাপাশি এ কথাও বলা হয়েছিল যেÑ ভালো ঋণ গ্রহীতাদের প্রণোদনা দেওয়া হবে।
সাধারণ জনগণ এবং যারা এসব বিষয়ে একটু খোঁজখবর রাখেন, তারা সেসব কথা শুনে আশান্বিত হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, সরকারের তরফ থেকে হয়তো কিছু শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেসব দেখে ঋণ খেলাপিরা হয়তো ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসবে। হয়তো কোনো সুফল পাওয়া যাবে। কিন্তু না। দুর্ভাগ্যের বিষয় এসব কোনো কিছুই দেখা যায়নি। তথৈবচ। বরং ঋণ খেলাপিদের নানা উপায়ে ছাড় দিতে দেখা গেছে, আগের মতোই।
দেশের ব্যাংক খাতে দীর্ঘদিন যাবত নানা রকমের সমস্যা বিরাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো উচ্চমাত্রায় ঋণখেলাপি। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অন্যতম কারণও বটে। অধিকন্তু খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংকগুলোর জন্যই নয়, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক খাতগুলোর জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। আবার অধিক মাত্রায় খেলাপির প্রভাব পড়ছে ব্যাংকগুলোর ঋণ ব্যবস্থাপনার ওপরও। এর ফলে সুষ্ঠুভাবে এগোতে পারছে না ভালো উদ্যোক্তারা। যে কারণে বাড়ছে না বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। কাজেই খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিগত সময়ে দেখা গেছে, সমাজের অভ্যন্তরে নানা ছদ্মাবরণে মিশে থাকা প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ঋণ পুনঃতফসিল, ঋণ অবলোপন ইত্যাদির সুযোগ নিয়ে খেলাপির দায় থেকে মুক্ত থেকেছেন। এর ফলে খেলাপি ঋণ সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। বরং তা ঋণ আদায় প্রক্রিয়াকে আরও প্রলম্বিত করে ফেলেছে। তাই খেলাপি ঋণসহ ব্যাংক খাতের বিরাজমান সমস্যাবলির স্থায়ী সমাধানের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সমাধানটি এমন হওয়া উচিত, যাতে ঋণ খেলাপিরা যত প্রভাবশালীই হোন না কেন- তাদের কাছ থেকে বকেয়া ঋণের টাকা অদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
২০২৩ এর ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে জানা যায়, দেশে ঋণ খেলাপির সংখ্যা ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫ জন। ২০২২ এর ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। ২০২০ সালে জাতীয় সংসদে ৮ হাজার ২৩৮ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের তালিকা তুলে ধরা হয়।
ঋণ খেলাপিদের তালিকা জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার অর্থমন্ত্রীরা জাতীয় সংসদে পেশ করেন। কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। তবে তাতে কাজ হয়নি। এর কারণ কী?
এর প্রধান কারণ হলো- রাজনৈতিক ক্ষমতাবলয়ের সঙ্গে ঋণ খেলাপিদের নিবিড় ঘনিষ্ঠতা। সে কথাটিই বিভিন্ন তালিকা, তথ্য-উপাত্ত ও অকাট্য দৃষ্টান্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয় বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদন, গবেষণা, সমীক্ষা ও গ্রন্থসমূহে- মাঝেমধ্যে। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, জনগণ ও রাষ্ট্রের এই বিপুল পরিমাণ টাকা বছরের পর বছর কেন অনাদায়ি পড়ে থাকবে?
মানুষের বিশ্বাস ও আশা, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তরিক প্রয়াসের মাধ্যমে ২০২৪-এর সাম্প্রতিক হিসাবে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকার খেলাপি ঋণও পুনরুদ্ধার হবে; এবং সে টাকা দিয়ে দেশে শুরু হবে আরও মৌলিক সমস্যা নিরসন, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের উৎসব।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, দেশের মানুষ চায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকের সম্পদ সুরক্ষিত থাকুক। কিন্তু দেশের সিংহভাগ সম্পদ বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক লোপাটকারীদের নাম দেশবাসীকে জানাতে হবে। ঋণ খেলাপিদের ঋণ ফেরত দেওয়ার চাপ না দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের নির্দেশে নাকি ঋণ মাফ করে দেয়। আসলে এরা নানা রকম ফন্দিফিকির করে ঋণ মওকুফ করে নেয়। জনগণের কাছে এগুলোর কোনো সঠিক পরিসংখ্যানও নেই।
একদিকে জনগণের সঞ্চিত টাকা কিছু ‘চিহ্নিত’ লুটেরা লোপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে দিয়ে ব্যাংক লোপাটের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। দুর্বল ব্যাংক লোপাটকারী পরিচালকদের শাস্তি হয়নি। বরং তারা সবল ব্যাংকের পরিচালক হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা প্রফেসর সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০০৫-২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘খেলাপিদের নতুন ঋণ দেওয়া বন্ধ করতে হবে। শুধু ঋণ নয়, তাদের আমদানি-রপ্তানি, এলসি খোলা ও ব্যাংক হিসাবে লেনদেন বন্ধ রাখতে হবে। এসব কঠিন সিদ্ধান্ত না নিলে কোনো দিনও খেলাপি ঋণ আদায় হবে না’। (দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২৮ মে, ২০২৩)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সিনিয়র প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর (১৯৮৯-৯১) আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগের জোট সরকার বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে ব্যাংক খাত সংস্কার কমিটি গঠন করে। সে কমিটি ১৯৯৯ সালে ব্যাংক সংস্কার-সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়। রিপোর্টে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো রাজনৈতিক সুবিধা বিলিবণ্টনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পেছনে এটাও একটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ’।
লক্ষণীয় বিষয়, তার পরেরবার সরকার গঠন করে বিএনপি। বিএনপি সরকারও তার ২০০১-২০০৬ কার্যকালে সেই একই অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে প্রধান বানিয়ে ব্যাংক সংস্কার কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রস্তাবে তৃতীয় ধাপে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে ৫০ ভাগ এককালীন জমা রাখার সুপারিশ ছিল।
দেশের দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। রাজনীতির মাঠে চরম বৈরী দেখা যায় এ দুটি দলকে। অথচ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত ব্যাংক সংস্কারের উদ্যোগে একই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের শরণাপন্ন হতে হয়েছিল তাদের। সেই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনে রয়েছেন।
দেশের এই শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা এখন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি খাতে উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বে রয়েছেন- এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। এ পরিস্থিতিতে নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে এই প্রাজ্ঞজনদের মাধ্যমে খেলাপিসহ অন্যান্য খাতে ইতিবাচক অগ্রগতির আশা নিশ্চয় আমরা করতেই পারি।
খেলাপিসহ বিরাজমান সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যে নতুন পরিবর্তিত পরিবেশে ব্যাংক খাতে সংস্কারের উদ্যোগ রয়েছে। আশার কথা, এ উদ্যোগে বিচক্ষণ অর্থনীতিবিদ ও অভিজ্ঞতালব্ধ বিশেষজ্ঞ মেধার সম্মিলন ঘটেছে। এখন দেখার বিষয়, তাদের সুপারিশগুলো কেমন হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও পরিবেশে দেশের মানুষ আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসার পথপানে চেয়ে রয়েছে অধীর আগ্রহ নিয়ে। আর্থিক খাতে ইতিবাচক বার্তা পেতে চাইছে জনগণ। ব্যাংকের যে বেহাল অবস্থা- তা নিরসনে সংস্কারের সুপারিশগুলো যাতে কার্যকর সফলতা বয়ে আনতে পারে, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ওয়াকেবহাল মহল।
আপনার মতামত লিখুন :