যে কোনোভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নৃশংস গণহত্যার হেনপদক্ষেপ নেই যা শেখ হাসিনা নেননি। সেসবের কিছু ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফাইন্ডিং উঠে এসেছে জাতিসংঘের তদন্তেও। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণের বিরোধিতার মুখেও ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল সাবেক সরকারপ্রধান।
আর সে লক্ষ্য পূরণে বিক্ষোভ দমন করার অপ-কৌশল নিয়েছিল তারা। এর অংশ হিসেবে শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার গ্রেপ্তার-আটক ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের এ সংক্রান্ত বক্তব্য ঘুরছে সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে।
জেনেভায় বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সম্প্রতি তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রতিবেদনের নানা তথ্য তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় আওয়ামী লীগের সহিংস কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত ছিল।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত মৃত্যুর তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে এসেছে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার কথা। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হয়েছেন।
যখন সাবেক সরকার দেশের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করেছিল, তখন সংঘটিত প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং আওয়ামী লীগ কর্মী ও সমর্থক, পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মীদের লক্ষ্য করে অন্যান্য গুরুতর প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেগুলোও এ প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়া হিন্দু, আহমদিয়া মুসলিম এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোর আদিবাসী জনগণও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। যদিও বিভিন্ন ধর্মীয় ও আদিবাসী গোষ্ঠীর ওপর আক্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ১০০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
তবে অনেক প্রতিশোধমূলক সহিংসতা এবং এসব গোষ্ঠীর ওপর আক্রমণের পরও অপরাধীরা এখনো দায়মুক্তি উপভোগ করছে- এমন কথা উঠে আসে প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদন অনুযায়ী নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও নানা চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর কাছেও এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ খবর। বিবিসি খবরে বলেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য পরিকল্পিত ও প্রাণঘাতী সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছিল। আল জাজিরার শিরোনাম, ‘বাংলাদেশের বিগত সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী হতে পারে, এমনটি বলছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল শেখ হাসিনার সরকার নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে চরম বল প্রয়োগেই নয়, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, এমনকি চিকিৎসা পেতে পর্যন্ত বাধা দিয়েছে।
ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ, আধা সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত কোর কমিটি নিয়ে বৈঠকে নিয়মিতভাবে সভাপতিত্ব করতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কোর কমিটির বৈঠকে সামগ্রিক পদক্ষেপের কৌশলগত নির্দেশনার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে বাহিনী মোতায়েন ও সুনির্দিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অভিযান নিয়ে আলোচনা হতো। এর পাশাপাশি সমন্বিতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমন্বয় প্রক্রিয়ার সম্পূরক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত ছিল।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এসবি, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানদের কাছ থেকে নিয়মিতভাবে সরাসরি প্রতিবেদন পেতেন।
এ ধরনের গোয়েন্দা প্রতিবেদনের মধ্যে ২১ জুলাইয়ের একটি প্রতিবেদনে আন্দোলনকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের বিষয়ে শেখ হাসিনাকে সতর্ক করা হয়েছিল। একই ধরনের উদ্বেগ আগস্টের শুরুতেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হয়।
২৯ জুলাই মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আন্দোলন-সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন। আর আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও তার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টারা সরাসরি ও টেলিফোনে নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আদেশ দিতেন ও সার্বিক অপারেশন পর্যবেক্ষণ করতেন। পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ‘টার্গেট কিলিং’, ইচ্ছাকৃতভাবে পঙ্গু করা, নির্বিচার গ্রেপ্তার, অমানুষিক নির্যাতনের কথাও রয়েছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট সংঘটিত ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের ১১৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ঘটনা। গত মাসের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ সরকারের কাছে প্রতিবেদনের খসড়া দিয়েছিল।
কোনো মতামত থাকলে তাতে যুক্ত করার জন্য সময়সীমা দেয় ওএইচসিএইচআর। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দল প্রতিবেদনটি তৈরির জন্য ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বগুড়া, সিলেট ও গাজীপুর- এই আট শহরে অনুসন্ধান চালায়।
মূলত যে শহরগুলোতে বেশি মাত্রায় বিক্ষোভ হয়েছিল, সেসব স্থানে গিয়ে সরেজমিনে কাজ করে জাতিসংঘের দলটি। প্রতিবেদন তৈরিতে অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঘটনাপ্রবাহের সাক্ষী ব্যক্তিদের নিয়ে ২৩০টির বেশি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এ ছাড়া সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আরও ৩৬টি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এই ৩৬ জনের মধ্যে সরকারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারাও আছেন, যারা ওই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
তথ্যের পাশাপাশি জাতিসংঘের অর্ধশত সুপারিশ ও একটি দলিল হয়ে থাকবে। বলা হয়েছে, নিরপেক্ষভাবে কার্যকর, পক্ষপাতহীনতার সঙ্গে সব বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনার তদন্ত করতে হবে। র্যাব বিলুপ্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। রয়েছে এনটিএমসিকে বিলুপ্ত করার সুপারিশও।
অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাহিনীর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকলে নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো; বিজিবি, ডিজিএফআইসহ গোয়েন্দা সংস্থার আইনি ক্ষমতার লাগাম টেনে ধরা; আনসার, বিজিবিকে সামরিক বাহিনী থেকে মুক্ত রাখা; অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সামরিক বাহিনী অভ্যন্তরীণ যেকোনো পরিস্থিতিতে কতটা সময় কাজ করবে এবং মাঠে থাকবে, তা নিশ্চিত করা।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে, এমন সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী তদন্ত করা। রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হলে সত্যিকার বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফেরার পথ রুদ্ধ হবে।
পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক ভোটারকে ভোটাধিকারচর্চা থেকে বঞ্চিত করা হবে। যা চলমান সময়ের সঙ্গে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জুলাই-আগস্ট হত্যাযজ্ঞের বিচার, সংস্কার, নির্বাচন- কোনোটিই কোনোটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। একটি বাদ দিয়েও আরেকটি নয়।
এর পরও সাম্প্রতিক অতিকথন, অতিরাজনীতির পরিণতিতে গত মাস কয়েকে বিচার এবং সংস্কার হয়ে পড়ছে সেকেন্ডারি। আহতদের চিকিৎসা দিনকে দিন প্রসঙ্গ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে। গণ-আন্দোলনে নিহতদের পরিবারে চলছে আহাজারি। আহতরা কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বেডে।
হত্যাকারীদের বিচারপ্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। সংস্কারের কিছু আয়োজন চলছে। নির্বাচনের ঘণ্টাও বেজেছে। এর মাঝেই এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য ছিল না। ধারণাও ছিল না অনেকের। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ের ছয় মাস পার হলেও সব নিহত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে এবং আহত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে না পারার ঘটনা সামগ্রিকভাবে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। গণ-অভ্যুত্থানে নিহত অনেককে ‘বেওয়ারিশ’ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
হত্যাযজ্ঞ ও বর্বরতার তথ্য সংরক্ষণেও গাফিলতি লক্ষণীয়। গণমাধ্যমে সব তথ্য নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরছে অনেক ভিডিও ফুটেজসহ নানা তথ্য। কোনো কোনো ভিডিওতে এমন নিষ্ঠুরতার দৃশ্য ভাসছে, যা সহ্য করা যায় না। এসব ভিডিও দেখার সময় চোখ ঢেকে ফেলতে হয়।
কোথাও কোথাও পুলিশের পাশাপাশি তখনকার ক্ষমতাসীন দলীয় ক্যাডারদেরও দেখা যায়। গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের বর্বরতার একটি প্রামাণ্যচিত্র সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগে ছবিটি তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমেও ছবিটি দেখানো হচ্ছে। শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার ঠিক আগে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ঘণ্টা দেড়েক সময়ের মধ্যে কী ঘটেছিল, তার প্রামাণ্য দলিল এই ছবি। বলা হচ্ছে, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা ফুটেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে বিচার-বিশ্লেষণের পর ছবিটি তৈরি করেছে তারা।
ছবিতে দেখা গেছে কীভাবে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছে পুলিশ। দেশের আরও অনেক জায়গায়ই এমন ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনার ভিডিও সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই জরুরি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভুল, অপকর্ম বা অন্যায়ের জন্য ক্ষমা চাওয়ার নজির নেই। আছে অন্যের ওপর দোষ চাপানো এবং নিজেদের সহি-শুদ্ধ প্রচারের চেষ্টা, যা এরই মধ্যে পুরোদমে চলছে। এটি পতিত-বিতাড়িতদের জন্য আশীর্বাদের মতো। আর রাজনীতির নামে পেশাদার দুর্বৃত্তদের জন্য গোল্ডেন চান্স।
এই চান্স নিতে একটুও কমতি করছে না তারা। চাঁদাবাজি, দখলদারিতে নেমে পড়েছে এই মহলটি। চাঁদাবাজ বদলেছে, চাঁদাবাজি বদলায়নি। একইভাবে দখলবাজ বদলেছে, দখলবাজি কমেনি। বরং ক্ষেত্রবিশেষে বেড়েছে। এদের অপতৎপরতায় গণ-অভ্যুত্থান প্রশ্নবিদ্ধ হতে চলেছে। তা বিপ্লবের চেতনাকে মাঠে মারছে। মানুষের গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভয়ের রাজত্ব সাধারণ মানুষের পিছু ছাড়ছে না। তাদের আবার মাঠে নামতে হবে? মাঠে নামা আর রক্ত দেওয়াই মানুষের নিয়তি?
গত বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যা বিগত সরকারের মদদে দেশব্যাপী নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের নৃশংস আক্রমণের কারণে বিক্ষোভে রূপ নেয়। আট দফা, ৯ দফাসহ বিভিন্ন দফা পেরিয়ে ৩ আগস্ট ছাত্র-জনতা শহিদ মিনারে ঘোষণা করে এক দফা- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এর একদিন পর ৫ আগস্টে সেই আন্দোলনের সাফল্য। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ও দেশ ছেড়ে যাওয়া।
গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকেন্দ্রিক ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ভালো কিছু উদ্যোগের প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এইচআরডব্লিউ। প্রশংসার সঙ্গে ‘কিন্তু’ যোগ করে বলেছে, ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া ঐক্যের অগ্রগতি ম্লান হয়ে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থাটি তাদের ২০২৪ সালের ৫৪৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে বলেছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার করা উচিত। বিশ্বস্বীকৃতির তাগিদও দেওয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে এসে জাতিসংঘের তদন্ত শেখ হাসিনার গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে মাত্রা যোগ করে দিল। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি।
লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক