আজ ৮ মার্চ আন্তজার্তিক নারী দিবস। নারী-পুরুষের সমতার লক্ষ্যেই ও নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনেই প্রতিবছর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
নারী দিবস উপলক্ষে নারীদের মুক্তির জন্য দেশ থেকে দেশে চলে নানাবিধ আয়োজন। রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্প্রচার করা হয় রাষ্ট্রীয় নেতাদের বাণী। এই ধারাবাহিকতায় এবারও নারী দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তবে এবারের নারী দিবসের সময়টি একদমই ভিন্ন। দেশের ধর্ষণ, নির্যাতন, লাঞ্চিতের ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে। সম্প্রতি সময় যেন দেশে নারীদের বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে অরূদ্ধ সময়। এই সময়কে নিয়ে কি বলছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা?..
১৯৭৫ সাল থেকে প্রতিবছর ৮ই মার্চ নারীদের সামাজিক, রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক সব ধরনের অগ্রগতি ও প্রতিষ্ঠাকে উদযাপন করতে পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব নারী দিবস। কিন্তু এ দেশের একজন নারী হিসেবে কি বিষয়ে উদযাপন করবো!! কেননা যেখানে নিরাপত্তাই নিশ্চিত নয়, নিজের মান রক্ষা করাই দায়, যেখানে নাবলক শিশুর পর্যন্ত পরিত্রাণ মেলে না, অপরাধীর বিচার না করে তার অন্যায়কেই বাহবা দেয়া হয়, সেখানে নারী অগ্রগতি উদযাপন প্রশ্নবিদীর্ণ হয়। তাই এই দিনে কামনা করি সর্বপ্রথম নিশ্চিত হোক নারীর সম্ভ্রম - সম্মান-নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচার। তা নিশ্চিত হলেই প্রকৃতপক্ষে নারীর অগ্রগতি ও উন্নয়ন উদযাপন সম্ভব।
সানজানা হোসেন তনিমা
থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নারী দিবস বলতে কিছু নেই। আমি মনে করি,নারী দিবস কোনো দিন ছিলই না!প্রতিদিনই পুরুষ দিবস চলে!যুগের পর যুগ বছরের পর বছর `নারীদের কে অত্যাচার, অবহেলা, নির্যাতন, নিপীড়ন, শোষণ, লাঞ্ছনা, অবজ্ঞা, তাদের অগ্রসরের পথে বাধা দেওয়া এছাড়াও আরো যতরকম এর অসহিষ্ণু অমানবিক আচরণ, ব্যবহার আছে তাদের প্রতি তা হয়েই যাচ্ছে।
মেহরিন মেহেক মায়মুনা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আজ ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর সর্বস্তরের সম অধিকারের লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল দিনটির। এই দিনটিতে আমরা নারীর সম অধিকারের কথা বলি নারীর অগ্রগতির কথা বলি। কিন্তু নারীর জন্য সত্যি কারের অগ্রগতি তখনই আসবে, যখন তার কণ্ঠস্বর অবদমিত থাকবে না। যখন নারী সাহসের সঙ্গে নিজের কথা তুলে ধরবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।একজন নারী শুধুই অনুসরণকারী নয় সে নেতৃত্বের আসনেও সমানভাবে বসতে পারে /সম অধিকারী। সেই সকল সংগ্রামী ও সাহসী নারীদের নারী দিবসের শুভেচ্ছা যারা দমে না থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।
জান্নাতুল ফেরদৌস রিয়া
গণ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা বিভাগ
নারী হিসেবে সম অধিকার না ন্যায্য অধিকারটুকু চাই। যুগের হিসাব করলে মেয়েদের এখন বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি মনের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করেছে। মনে হয় এবারের টার্গেট হয়তো আমিই। মেয়ে হিসেবে চাই বাইরে চলার স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত হোক। সমাজের চলার স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত হোক। নারী দিবসে আমার চাওয়া ধর্ষণের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত হোক আইন কার্যকর হোক।
সুরাইয়া সালসাবিল মুক্তা
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাংবাদিকতা বিভাগ
আমার মনে হয় যুগে সাথে তাল মিলিয়ে আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি। বিশেষ করে আমরা নারীদের অধিকার নিয়ে কোনো কথাই বলি না। দিন শেষে, আমরা পছন্দ করি নারীরা ঘরেই সুন্দর। তবে আমাদের সমাজ আমাদের নিয়ত-নীতি বদলাতে আমাদেরই জনগণ। এমনকি একজন সাংস্কৃতিক কর্মী বা শিল্পী, তার শিল্পচর্চার মাধ্যমে বলাতে পারে দেশ। আমি ছোট একটা উদাহরণই দিতে চাই। ধরেন ভাই বাবা পরিবার কখনও চাইবে না আমার মেয়ে-বউ বাইরে গিয়ে প্রতিবাদ করুক। তারা রাতে ঘোরাঘুরি করুক। আজ বিশ বছরে এমন কোনো চিত্রশিল্পী কবি পেয়েছেন? যে কি-না কখন নিজে ইচ্ছে মতো একা ঘুরেছে?কখনো প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে? সে গভীর বনে গিয়ে নিজের মতো বসবাস করতে পেরেছে? নিশ্চিন্তে নিজের কাজ করতে পেরেছে? আমার জানা মতে হয়ত, কোনো না কোনোভাবে মানুষের সম্মুখীন হয়েছে। তো আমরা যারা নারী আমাদের বাধারমুখীন হতেই হবে। তাই বলে থেমে থাকা যাবে না
দৃষ্টি ঢাকা
আর্ট কলেজ
আপনার মতামত লিখুন :