জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়াও পানি অ্যাসিডিক হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে পানিতে বিদ্যমান জলজপ্রাণী ও উদ্ভিদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা বাদ দেওয়া যায় না। প্রতিটি জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর নির্দিষ্ট তাপমাত্রার পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন কমে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভবিষ্যতে করোনার মতো অনাকাক্সিক্ষত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে দারিদ্র্য হারও বাড়ছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনে বছরে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ অন্যত্র স্থানাস্তরিত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তেই থাকবে। সেক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষতির প্রভাব কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। একদিকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতির প্রভাবে সমগ্র পৃথিবী উদ্বিগ্ন।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত হলো জলবায়ু সম্মেলনের ২৯তম বৈঠক। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ২০৩০ সালের জন্য সত্যিকারের কার্যকরী জলবায়ু পদক্ষেপের সঙ্গে মানবাধিকার সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য এবং পর্যাপ্ত, স্বচ্ছ ও বৈধ অর্থায়ন সম্মত হওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলোকে আজারবাইজান বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের ২৯তম বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন। জাতিসংঘের এই বছরের জলবায়ু সম্মেলনে ৬৬,৭৭৮ জন অংশগ্রহণ করছেন। সারা বিশ্ব থেকে আগত নেতারা জলবায়ু সংকট মোকাবিলার জন্য বৈঠক করছেন। উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থ ও বাণিজ্যের বিষয়ে আলোচনাও করেছেন।
বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিকর দেশগুলো কী পেল, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অতীতে জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির ব্যবহার বাড়ানো, উন্নত দেশগুলোর প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আর্থিক সহায়তা, হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো, স্বল্পমূল্যে উন্নয়নশীল দেশে জলবায়ু সহনশীল প্রযুক্তি স্থানান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাজেট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। যদিও বাস্তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা অনেকটা কঠিন, তবুও এ প্রভাব কমানোর জন্য অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত। এজন্য ক্লাইমেট ফাইন্যান্সের গুরুত্ব অপরিসীম। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে বন্যা, লবণাক্ততা, খরা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষণীয়। ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশ একটি ক্লাইমেট ভালনারেবল দেশ।
এক্ষেত্রে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট বন্যার পানির প্রবাহ বাড়ানোর জন্য স্থানীয় নদীগুলোর নাব্য বাড়াতে বিপুল অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ কমানোর জন্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি উৎপাদনেও অর্থের প্রয়োজন। অতীতে কপ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তা বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দরিদ্র ও ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনেক বেশি হওয়ায় এসব দেশে জলবায়ু সহনশীল পরিবেশের উন্নয়নের মাধ্যমে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
এ অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হলে কপ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যঝুঁকির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সমগ্র বিশ্বকে রক্ষার জন্য অভিযোজনের বিকল্প নেই। সেজন্য ক্লাইমেট ফাইন্যান্স নিয়ে একটি বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। কপ-২৯ এ গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তব প্রয়োগই জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশসহ অরক্ষিত দেশগুলোকে রক্ষা করতে পারে।
এ বছরের আবহাওয়া বিপর্যয় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও তহবিলের দাবিতে উৎসাহিত করেছে। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যেখানে কীভাবে জলবায়ু ভারসাম্য ভাঙনের ফলে যুদ্ধ এবং নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলছে তা আলোকপাত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখানো হয় যে, সারা বিশ্বে ১২০ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত মানুষের তিন-চতুর্থাংশ জলবায়ু ভারসাম্য ভাঙনের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে বাস করছে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৬৫টি দেশ ‘চরম জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের’ সম্মুখীন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ক্রমাগত বাড়ছে। উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিশ্বেও ছোট ও দ্বীপরাষ্ট্রগুলোও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এক্ষেত্রে কৃষি ফসলও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিটি ফসলের উৎপাদনের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় তাপমাত্রার প্রয়োজন। যদি অনাকাক্সিক্ষত হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তাহলে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে গ্রিনহাউস গ্যাসের অবদান রয়েছে। সমগ্র বিশ্বে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বছরে ৫৭ দশমিক ৪ গিগাটন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হচ্ছে। অন্যদিকে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতার বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু তাপমাত্রা যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে বৈশ্বিক উষ্ণতা ভবিষ্যতে ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সুতরাং প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্য বায়ুমণ্ডলে প্রায় ৪৩ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে হবে। গ্রিনহাউস গ্যাসের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বিগত শিল্পযুগের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে হয়, তাহলে বায়ুমণ্ডলে প্রায় ২৪ গিগাটন গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন কমাতে হবে। নতুবা বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব হবে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ বাড়ছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বছরে খরায় প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার, সাইক্লোন ও ঝড়ে ৫ লাখ ৭৭ হাজার ২৩২, বন্যায় ৫৮ হাজার ৭০০ এবং উচ্চ তাপমাত্রায় প্রায় ৫৫ হাজার ৭৩৬ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনে সমগ্র বিশ্বে প্রায় ৪০ শতাংশ ভূমির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। মোটা দাগে বলা যায়, ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বাড়তে পারে।
কপ-২৯ এ বাংলাদেশ একটি জাতীয় পরিকল্পনাকে সমর্থন করার জন্য তহবিল সুরক্ষিত করার দিকে মনোনিবেশ করছে যা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জলবায়ু অঞ্চলের ৫০ মিলিয়নেরও বেশি লোককে উপকৃত করতে পারে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সপ্তম সর্বাধিক জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং তাপপ্রবাহসহ নিয়মিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে এবং অনুমান করা হচ্ছে যে, ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ১৩.৩ মিলিয়ন বাংলাদেশের মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে।
বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর ১০০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিল। জলবায়ু তহবিলের অর্থ প্রাপ্তির জটিলতার বিষয় নিয়েও কথা বলেছিল বাংলাদেশ। ৭০০ মিলিয়ন ডলার লোকসান ও ক্ষতি তহবিল প্রতিষ্ঠা ছিল কপ-২৮ এর একটি মূল অর্জন। জলবায়ুজনিত দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এই উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়েছিল।
কপ-২৯ সম্মেলনে স্বল্পোন্নত এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে চায়। এ লক্ষ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিষ্পত্তিতে সমন্বিতভাবে কাজ করার লক্ষ্যে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কপ-২৯ এ বাংলাদেশের এজেন্ডা তিনটি প্রধান বিষয়সূচিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়- জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন বাস্তবায়ন ও ক্ষয়ক্ষতির তহবিল কার্যকর করা।
বাংলাদেশের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি থেকে স্থানচ্যুতি এবং আবাদযোগ্য জমির ক্ষতি মোকাবিলায় সহায়তা করেছে। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে প্রভাবিত পিছিয়ে পড়া জনসাধারণকে সহায়তা করার জন্য শক্তিশালী অর্থায়ন ব্যবস্থার পক্ষেও কথা বলা হয়েছে। যে দেশগুলো বৈশ্বিক নির্গমনে সবচেয়ে কম অবদান রাখে, তারা ক্ষতিপূরণে অগ্রাধিকার পাবে, এই মনোভাব নিয়ে কাজ করেছে বাংলাদেশ। এই ইস্যুতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
সরকারি প্রতিনিধি ছাড়াও অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় ছাড়াও পলিসি আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অ্যাডভোকেসি করে। শুধু কপেই নয়, এ বিষয়ে আলোচনা ও দেনদরবার হচ্ছে জাতিসংঘে, আঞ্চলিকভাবে, বিভিন্ন দেশে এবং দেশে দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে অসংখ্য রিপোর্টও বের হয়েছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের গতি বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ জলবায়ু ব্যবস্থাপনায় বছরে ৫ থেকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বার্ষিক বাজেট থেকে খরচ করে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের মতো পায়। কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনেকগুণ বেশি অর্থের প্রয়োজন, যে পরিমাণ অর্থ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
এলডিসি দেশগুলোকে ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে সমর্থন চাইলো বাংলাদেশ। জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাব এসেছে। এ প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজারবাইজানের বাকুতে কপ-২৯ এর চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি মন্ত্রী এবং ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকে বাকি সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষের সহযোগিতার মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক চুক্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনেক সমস্যা এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। উভয় পক্ষকে একযোগে কাজ করার মাধ্যমে কপ-২৯ এ একটি অর্থবহ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে স্বল্পোন্নত দেশের মন্ত্রীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তাদের মূল অবস্থান তুলে ধরেন। ইইউ মন্ত্রীরা এলডিসি দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয় স্বীকার করেন। তারা জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন, নির্গমন হ্রাস এবং গ্লোবাল স্টকটেক প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। কপ-২৯ এর চূড়ান্ত আলোচনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :