ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলছে না

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ১০:২১ এএম

আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলছে না

ছবি: রুপালী বাংলাদেশ

দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে সবাই অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যাঁতাকলে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি পিষ্ট হচ্ছেন মেস বা হোস্টেলে থাকা শিক্ষার্থীরাও। দ্রবমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে আমরা একেবারে নাজেহাল হয়ে পড়েছি সবাই। আগের তুলনায় বর্তমানে প্রতিমাসে আরও বেশি খরচ করতে হয়। প্রয়োজনীয় অনেক খাবার বাদ পড়েছে তালিকা থেকে। তেল গ্যাস থেকে শুর” করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। সাধারণ মানুষ অসাধারণ হতে পারছে না বলে তাদের কষ্টের সীমা নেই। নুন আনতে পান্তা ফুরায় প্রবাদটি আজ চরম সত্য হয়ে অনেকের ঘাড়ে বসেছে।

খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের চড়া মূল্যের বিরূপ প্রভাব পড়েছে অতিদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর। আলুর কেজিও ৮০ টাকা পুরাতনগুলো, নতুন ১২০ টাকা। নিম্ন আয়ের লোকজন আলু খাবেন সেটাও এখন নাগালের বাইরে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে অসহায় মানুষের দুঃখের কথা বলার কোনো জায়গাও যেন নেই।

নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বেড়েছে এবং বাড়ছে। চাল, ডাল, তেল, গ্যাস, আটা, চিনি, মাছ, ডিম থেকে শুর” করে শাক-সবজি এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই, যার দাম বাড়েনি বা বাড়ছে না। বাজারজুড়ে মিলছে শীতের সবজি। কিন্তু ভরা মৌসুমেও তার দাম আকাশছোঁয়া। শিম, মিষ্টি আলু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালের দামও ভরা মৌসুমে ঊর্ধ্বমুখী। সম্প্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলছে না। নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে ক্ষোভ। হতাশায় নিমজ্জিত খেটে খাওয়া মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও।

গত করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বহু মানুষেরই হয় চাকরি নেই, অথবা কর্মক্ষেত্রে কাজের সঙ্কোচন ঘটেছে। ফলে উপার্জন প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই অবস্থায় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে অনেকের। নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি গরিব, নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষসহ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনকে রীতিমতো দুর্বিষহ করে তুলছে।

দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা যেমন ক্ষিপ্ত, তেমনি বিক্রেতারাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। সাধারণ মানুষ বাজারে এসে দাম শুনে প্রয়োজনীয় অনেক কিছু না কিনে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। বিপণন ব্যবস্থা দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ত থাকায় সাধারণ মানুষ কষ্ট ভোগ করছে। পুরো বিপণন ব্যবস্থার মধ্যে যে অব্যবস্থা রয়েছে তা দূর করতে হবে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ এক চরম সংকটময় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। করোনা-পরবর্তী অর্থনীতি পুনর”দ্ধারের প্রচেষ্টা চলমান থাকলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জ¦ালানি ও কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। মানুষের আয় অপরিবর্তিত থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন কঠিন করে তুলেছে।

আমাদের দেশের প্রধান কয়েকটি সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এটি যেন বাংলাদেশের মতো দুর্বল অর্থনীতির দেশে এক বিশাল বড় সমস্যা। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করছে নিজেদের স্বার্থে। এর ফলে নিম্ন আয়সম্পন্ন মানুষ ছাড়াও মধ্যবিত্তরাও তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। অনাকাক্সিক্ষতভাবে বর্তমানে পণ্যের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে আমাদের দেশের জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মুদি দোকানগুলোতে যদি নজর দেওয়া হয়, তাহলে দেখা যায়, গত কয়েক মাসে আটা-ময়দাসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা করে বেড়েছে। এ ছাড়াও শিশুখাদ্যসহ মাছ-মুরগির খাদ্য ইত্যাদির মূল্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ছে। যার প্রভাব পড়ছে উৎপন্ন পণ্যে। বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে বুঝা যাচ্ছে, বাজার পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে জনসাধারণের জীবন হয়ে উঠবে আরও দুর্বিষহ।

উৎপাদকপর্যায়ে কৃষক যে পরিমাণ মূলধন নিয়ে দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করে, এর চেয়ে ৪-৫ গুণ বেশি মূল্যে ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা এর দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করছে পণ্যের পচনশীল আর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ওপর। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে না মানুষের আয়। ফলে নিম্ন আয়সম্পন্ন মানুষের জীবন কষ্টকর হয়ে উঠছে। স্বল্প বেতনের চাকরিজীবী এবং পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা শিক্ষার্থীদের জীবনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।

আমরা দেখতে পাই, টিসিবির ট্রাকের পেছনে লম্বা লাইন, সেখানে নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও শিক্ষার্থীদের লাইন। এগুলোর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে অতি দরিদ্র মানুষের ওপর। এসব সমস্যায় মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন হতদরিদ্রে পরিণত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। প্রতিদিনের ভোগ্যপণ্য ক্রেতাদের জীবন ধারণের মূল নিয়ামক।

নিত্য দরকারি খাদ্যপণ্য জীবন বাঁচানোর নিয়ামক শক্তি। যা অতি সাধারণ থেকে অনন্য মানুষের জন্যও সর্বাধিক প্রযোজ্য, স্বীকৃত। সবার আগে সামনে আসছে নিত্য খাদ্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত মূল্যে জনজীবন নাকাল হওয়ার বিষয়টি। যেন দাবানলের আকালে জীবন বাঁচানোর দরকারি পণ্য ধরাছোঁয়ার বাইরে। যা প্রতিদিনের গণমাধ্যমের সংবাদে এক প্রকার নিয়মনীতি আবর্তিত হয়।

দেশে সাধারণত দ্রব্যমূল্য একবার বাড়লে তা কখনোই আগের অবস্থায় ফেরে না। বরং বাড়তি মূল্যেই এক সময় অভ্যস্ত হতে হয়। পরবর্তী সময়ে আবার যখন ঊর্ধ্বগতি হয় সেটাও কম বিড়ম্বনার নয়। তাও কোনো এক সময় গ্রাহকরা অভ্যস্ত হয়ে যায় যা সামাজিক অব্যবস্থার দুর্বিপাক। কৃষিনির্ভর শস্য-শ্যামল সবুজ বাংলাদেশে প্রকৃতির উন্মত্ত  খেলায় নাজেহাল হতেও সময় লাগে না। বন্যা, খরা, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, ঋতু বৈচিত্র্যের সুন্দর অঞ্চলটির  যেন নৈমিত্তিক দুর্ভোগ সবই যেন আজ এক সুতায় গেঁথে আছে। সময়মতো বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে আমরা উষ্ণ আবহাওয়া পেতেও বিলম্ব করি।

বাজারে আসতে শুর” করেছে শীতকালীন সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর শাক-সবজি। কিন্তু ক্রেতাদের মাথায় হাত। প্রতিদিনের হিসাব-নিকাশে কোনো কিছুর কূল-কিনারা না পাওয়াও আর এক বেসামাল অস্থিরতা। সবসময় সাধারণ নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জন্য সুখকর আর স্বস্তিদায়ক নয়। যেখানে আয় রোজগারই বাড়ে না সেখানে প্রতিদিনের খাদ্যমূল্যে গ্রাহককে যে বাড়তি মূল্য দিতে হয় পরবর্তী সময়ে তা পোষানোরও কোনো সুযোগ থাকে না। 
দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে এবং দৈনন্দিন দরকারি পণ্যের দাম যাতে যৌক্তিক পর্যায়ে থাকে সেজন্য বাজার তদারকি করতে জেলায় জেলায় বিশেষ টাস্কফোর্স করেছে সরকার, যা ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন বাজারে পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখা ও দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার কার্যকর কৌশল না থাকার সুযোগ নিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ক্যাবের মতে বাজার পরিস্থিতি দেখে তাদের কাছে মনে হয়েছে যে দাম বাড়াচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারের সংকট অনেক গভীর এবং  ছোটখাটো যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তাতে আপাতত কিছুটা লাভ হলেও দীর্ঘমেয়াদে লাভ হবে না। গত কিছুদিন ধরেই গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে ডিম আর কাঁচামরিচের দাম। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার গত সপ্তাহে সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির জন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে সাময়িকভাবে অনুমতি দিয়েছে। এছাড়া হুট করে ব্যাপক বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। মূলত সাম্প্রতিক বন্যা ও বর্ষার কারণে উৎপাদন কম, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ার সুযোগে কাঁচামরিচের দাম অনেক বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের মতে ‘পাইকারি বাজারেই দামে আগুন’ লেগেছে। যেসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে এই প্রক্রিয়াও খুব একটা কাজে আসছে না। বাজারের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ তো আছেই, এটি কখনো বন্ধ হয়নি।

ডলারের উচ্চমূল্য, বর্ষা আর বন্যায় কৃষি উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি চাঁদাবাজি তো আছেই তাই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। বাজারে বড় বড় পণ্যের সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রণ করেন অল্প ক’জন ব্যবসায়ী। তাদের কার্যক্রম ও সাপ্লাই দেখার পাশাপাশি খুচরা পর্যায় পর্যন্ত মনিটর করার মতো টুলস সরকারের হাতে নেই। অর্থাৎ এ মুহূর্তে বাজারে কী পরিমাণ চাল আছে বা সামনে কী পরিমাণ আসবে কিংবা মিলগুলোতে কী পরিমাণ আছে এর কোনো সমন্বিত তথ্য সরকারের কাছে নেই। একই অবস্থা আলু বা পেঁয়াজের মতো মজুদ করে রাখা যায় এমন অন্য পণ্যেরও।

আর উৎপাদন, মজুদ ও আমদানির যথাযথ পদ্ধতি বা ব্যবস্থা না থাকায় কার কাছে কোন পণ্য কতটা মজুদ আছে সে সম্পর্কে সরকারের খুব একটা জানা নেই। এ কারণে বাজারে কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে কিনা- সেটাও ধরা যায় না। পণ্যের বাজারে মূল নিয়ামক একদল ব্যবসায়ী। এর মধ্যে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়াতে ভূমিকা রাখে বলে অভিযোগ রয়েছে।

উৎপাদন, পাইকারি ও ভোক্তাপর্যায়ের মধ্যে যাতে দামের পার্থক্য ন্যূনতম থাকে তা নিশ্চিত করবে ও সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবে তারা। টাস্কফোর্সকে প্রতিটি পণ্যের বিষয়ে আলাদা করে খোঁজ নিয়ে মনিটর করতে হবে। তারা কার কাছে কোন পণ্য কতটা মজুদ আছে সেই তথ্য নেবেন। এটা করতে পারলে মজুদ করে মুনাফার চেষ্টা কিছুটা হলেও কমবে।

তবে দ্রব্যমূল্য নিয়ে এ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে প্রাইস কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। এই কমিশনের কাছেই তথ্য থাকবে যে কার কাছে কোন পণ্য কতটা মজুদ আছে। এমনকি কে কোন পণ্য আমদানি করল, কতটা বিক্রি করল- এসব তথ্যও তাদের কাছে থাকবে। ফলে কেউ যেমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে পারবে না, আবার বাজার সম্পর্কেও একটি পূর্ণ তথ্য-সংবলিত ধারণা সরকারের হাতে থাকবে। এগুলো না হলে দীর্ঘমেয়াদে টাস্কফোর্স নিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা কঠিন হবে। টাস্কফোর্স ঠিকমতো মনিটর করতে পারলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে বলেই সবার বিশ্বাস।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা সাধারণ মানুষ। কম দামে পণ্য পেতে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাক সেলের লাইনে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তের সঙ্গে এই লাইনে শামিল হচ্ছেন বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেসে থাকা শিক্ষার্থীরাও। টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে দীর্ঘ লাইন ধরেছেন সাধারণ মানুষ।

টিসিবি বলছে, রাজধানীর ৫০টি স্থানে ফ্যামিলি কার্ড ছাড়া বিশেষ ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। প্রতিটি ট্রাকে ৩৫০ জনের জন্য পণ্য থাকে। তবে অধিকাংশ জায়গায়ই নির্দিষ্টসংখ্যক মানুষের চেয়ে বেশি মানুষ উপস্থিত থাকেন, যারা পণ্য কিনতে পারেন না।

প্রতিদিনই কিছু না কিছু পণ্যের দাম আরও বাড়ছে। এত বেড়েছে যে দোকান থেকে ক্রয় করে খাওয়াটাই কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। তাই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিসিবির পণ্য কেনার। টিসিবিতে কিছুটা সাশ্রয়ী মূল্যে তেল, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পরে শিক্ষার্থীরাও সপ্তাহে অন্তত দু’বার টিসিবির ট্রাক থেকে মালামাল কিনছে। এতে কিছু টাকা সাশ্রয় হয়। মেসে থাকা ছাত্রীরাও সপ্তাহে একবার একজন টিসিবির লাইন থেকে বাজার করছে।

টিসিবি থেকে সাধারণ মানুষ কিছুটা সাশ্রয়ী মূল্যে কেবল চাল, ডাল, আলু এবং ভোজ্যতেল কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় আর কোনোকিছুই বিক্রি হয় না। এবার ক্রেতারা চাল-ডালের পাশাপাশি টিসিবিকে মাছ-মাংস এবং সবজি বিক্রির দাবিও উঠেছে।

 

আরবি/জেআই

Link copied!