ঢাকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫

নতুন বছরে পূরণ হোক অপূর্ণতা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ০৯:১৬ এএম

নতুন বছরে পূরণ হোক অপূর্ণতা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

২০২৫ সালের শুরু। বছরের প্রথম মাস চলমান। এভাবেই নতুন আসে। পুরোনো বিদায় নেয়। এই স্বাগত বিদায় চিরকালীন। কিন্তু পুরোনোকে বিদায় জানিয়ে, নতুনকে বরণ করে নেওয়ার মুহূর্তে, আনন্দের সঙ্গে বিষাদ যে মিশে থাকে, হাসির মধ্যে এই বেদনার ব্যঞ্জনা যে স্বাভাবিক, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। সময়ের স্রোতে ভাসতে-ভাসতে ভুবনের সমস্ত কিছু প্রতি মুহূর্তে পুরোনো হচ্ছে। একঘেয়ে, ক্রমশ মøান বা জীর্ণ হয়ে আসা পুরোনোকে  ছেড়ে নতুনের টানে ভুল পথে পা বাড়ানোর ভ্রম ও দুঃখ যাপিত জীবনে কি সাধারণ মানুষ বারবার দেখে না? কিন্তু পুরোনোর মূল্য বোঝা এবং নতুনের মোহে চট করে না পড়া এই দুটি কাজই সহজসাধ্য নয়। ফলে জীবনে তৈরি হয় অপ্রত্যাশিত জটিলতা, সমস্যা। সুতরাং, পুরোনোকে ছাড়ার আগে আমাদের বিবেচনা যেন ঘোলাটে না হয়ে যায়। সময় যেন এক প্রবহমান মহাসমুদ্র। মানুষের সব স্বপ্ন, সব আশা সব সময় পূরণ হয় না। আর পূরণ হয় না বলেই মানুষ বারবার স্বপ্ন দেখে।

সামাজিক চিন্তা ও রাজনীতি হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় কাঠামো তৈরির মৌলিক মাধ্যম। যেখানে নিহিত থাকে উন্নতির অঙ্কুর। রাষ্ট্রের উত্থান-উন্নতির ক্ষেত্রে সুষম গণতন্ত্র ও জনমত জরিপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে উচ্চ আয়ের মানুষের জীবনযাপনের দিকে সমদৃষ্টি থাকতে হবে। জনগণের সন্তুষ্টি থাকে সুপরিকল্পিত জীবনযাত্রা ও নগর ব্যবস্থায়। কিছু চিন্তা করা অযৌক্তিক ও কলহের দাবানলে হাত রাখার মতো বিষয়। জনগণের ভালো-মন্দ বিবেচনা করে শ্রেণি ও সময় ধারণ করতে হয় এবং তা যথাযথ অনুধাবন করে রাষ্ট্র গঠনের দায়িত্ব নেওয়া হচ্ছে আগতজনের বিশেষ কাজও বটে।

দ্রব্যমূল্যের কোনো লাগাম টানা যাচ্ছে না এখনো। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য ক্রেতা হিসেবে চাপে রয়েছেন অনেকেই। অনেকে মনে করেন দেশের অর্থনীতিতে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের কঠিন সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি এবং সর্বোপরি সব মিলিয়ে পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়, সামনে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে। সমস্যা এগুলো অনেকদিন ধরেই আমাদের অর্থনীতিতে বিদ্যমান ছিল এবং এখনো তা আছে। সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। কাজেই অর্থনীতিতে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য এখনই কার্যকর ও উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বর্তমান অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো, মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা। আমাদের বৈদেশিক বিনিময় হারের ক্রমাগত অবমূল্যায়ন হচ্ছে, সেটাকে স্থিতিশীল করা। এ জন্য আমাদের রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। অনেকেই আমদানি কমানোর কথা বলতে পারে। কিন্তু আমদানি কমালে আমাদের মতো দেশে, যেখানে আমদানি পণ্য বেশির ভাগই শিল্পের কাঁচামাল বা মধ্যবর্তী পণ্য- এগুলোয় আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। তাহলে সরবরাহের ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যা হবে। কাজেই আমাদের রপ্তানি কীভাবে আমরা বাড়াতে পারি, সে জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আমাদের প্রবাসীরা যে অর্থ পাঠায় সেটা কিছুটা বেড়েছে। এই ধারা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।

বর্তমান সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি একটি কঠিন সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। করোনা-উত্তর বিশ্ব অর্থনীতি স্থিতিশীল হওয়ার আগেই শুরু হয়েছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়ে।  মূল্যবৃদ্ধি করে পণ্যের চাহিদা হয়তো কমানো যায়। কিন্তু পণ্যের জোগান যদি একই সঙ্গে বৃদ্ধি না পায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমবে না। ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি পেলে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কমে যায়। বিনিয়োগ কমে গেলে উৎপাদন কমে যাবে। আর উৎপাদন কমে গেলে কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি হবে না। আর সবার জন্য উপযুক্ততা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা না গেলে দেশে দারিদ্র্যবিমোচন কার্যক্রম কোনোভাবেই কাজে আসবে না। কাজেই মূল্যস্ফীতির অভিঘাত রক্ষার পাশাপাশি আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। এসব অভিঘাত মোকাবিলায় আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আরও অনেক বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

মূল্যস্ফীতি বাড়লে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে সাধারণ দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষগুলো খুবই অসুবিধার মধ্যে থাকে। মূল্যস্ফীতির হার যেভাবে বৃদ্ধি পায়, মজুরি বৃদ্ধির হার সেভাবে বাড়ছে না। মূল্যস্ফীতি আর মজুরি বৃদ্ধির এই পার্থক্যের কারণে সাধারণ মানুষ সংসারের ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে হিমশিম খাচ্ছে। অধিকাংশ দরিদ্র মানুষই এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে কিছু ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি হ্রাসের প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। তবে চলতি অর্থবছরের সব পণ্যের আমদানি হ্রাস পাওয়াটা অর্থনীতির জন্য শুভ সংবাদ নয়। অপ্রয়োজনীয় বিলাসজাত পণ্যের আমদানি কমলে সেটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হতে পারে। তা ছাড়া সার্বিকভাবে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়।

আমরা জানি, বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি স্থান। এখানে রয়েছে ১৭ কোটি ভোক্তার এক বিশাল বাজার। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। মূল্যস্ফীতি অর্থাৎ নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগতই বাড়ছে।

পণ্যের আমদানি শুল্কে ছাড় দিয়েও সেসব পণ্যের দাম কমছে না। এখানে প্রথম কথা হচ্ছে, পণ্যের দাম নির্ভর করে চাহিদার সরবরাহের ওপর। আমাদের চাহিদাও অনেকটা কমে গেছে মনে হচ্ছে। কেননা, ব্যাংকে ঋণের সুদহার বেড়েছে, সরবরাহ বাড়েনি। তা ছাড়া পণ্য সরবরাহে সমস্যা আছে। আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পরও দাম কমছে না বরং বাড়ছেই।

দেশের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার এবং শক্তি, তাতে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাংশ বিনিয়োগ হতে হবে। এই বিনিয়োগ হতে হবে ব্যক্তি খাতে। বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত মাত্রায় বৃদ্ধি না পাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত মাত্রায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যাচ্ছে না। বর্তমানে রপ্তানি খাতে সংকোচন প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। পণ্য রপ্তানি খাত সংকুচিত হলে তা বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপর একরকম চাপ সৃষ্টি করে। রপ্তানি আয় কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা টাকার বিনিময় হার বা মান কমে যেতে পারে।

স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হলে সেটা আবার মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী করে তোলে। কাজেই রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থনীতিকে চাঙা করতে হলে রপ্তানি খাতকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও অধিকমাত্রায় গতিশীলতা বৃদ্ধি করা দরকার। 
বর্তমান উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের এ যুগে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে পরিচিত বিশ্বের চেহারা। মানুষের হাতে হাতে ডিভাইস, যেকোনো তথ্য ইন্টারনেট থেকে দেখে নেওয়া যায় এখন। ২০২৩ সালে বিশ্বের ৮০০ কোটির মধ্যে ৬৮০ কোটি মানুষই স্মার্টফোন ব্যবহার করেছে।

এ সংখ্যা বছরে ৪.২ শতাংশ হারে বাড়ছে। অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরা দ্রুত বদলে যাওয়া এই বিশ্বের সঙ্গে কতটা তাল মেলাতে পারছে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত শিক্ষাব্যবস্থা এই পরিবর্তিত বিশ্বের উপযোগী করে শিশুদের জন্য গড়ে তুলতে অনেক চ্যালেঞ্জই আমাদের নিতে হচ্ছে। একগুচ্ছ বই নিয়ে  স্কুল ও পড়াশোনা করে শিক্ষাজীবন শেষ করে কতজন নিজের মেধা, যোগ্যতা আর চেষ্টার জোরে বিশ্বের কাছে নিজেকে মেলে ধরতে পারছে এই বিষয়টি সামনে আসছে। তাই আধুনিক বিশ্বের উপযোগী শিক্ষার্থী তৈরি করতে হলে আমাদের বৈশ্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও সেই ভিত্তিতেই যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন আগামী বিশ্বের উপযোগী জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা এবং তা কাজে লাগানোর মতো প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনী মানসিকতা, সাহস ও ধৈর্য। একই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারার মতো যথেষ্ট সক্ষমতা অর্জন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তারা বৈশ্বিক প্ল্যাটফরমে নিজের মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়।

আমাদের প্রচলিত শিক্ষায় অনেক ধারা রয়েছে, তার মধ্যে মোটা দাগে তিনটি ধারা প্রধান। শিক্ষার্থীদের অগ্রসর ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের দেশে এমনিতেই শ্রেণিবৈষম্য প্রকট। প্রধানত তিন ধারার শিক্ষা বিদ্যমান বৈষম্যকে আরও প্রকটতর করে তুলছে। আমরা যখন জাতীয় পাঠক্রম থেকে অনেক প্রয়োজনীয় ও শিক্ষণীয় বিষয় বাদ দিচ্ছি, তখন ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়ছে তারা ঠিকই এসব বিষয়ে শিখছে ও চিন্তাচেতনায় এগিয়ে থাকছে।

বৈষম্যমুক্ত একটা অগ্রসর সমাজ আমাদের প্রয়োজন। এ জন্য চাই যুক্তিনিষ্ঠ, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তাচেতনার মানুষ তৈরির উপযোগী শিক্ষা, যাকে বলা হয় বিকশিত মানুষ তৈরির শিক্ষা। জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে মানুষে মানুষে বৈষম্য কমিয়ে একটি সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আগামীর পৃথিবীতে টিকে থাকার উপযোগী একটি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলায় মনোযোগ ও সম্পদ বিনিয়োগকে এখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই বিবেচনা করতে হবে।

প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান শিক্ষা আর গবেষণায় আমরা আসলে কোথায় আছি? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সব ক’টি বিশ্ববিদ্যালয়েই খোলা হচ্ছে, বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়গুলো। দুঃখজনক হলেও সত্য, বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় মানের চেয়ে সংখ্যাই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। বাংলাদেশে বসেই বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে। আমরা চাই একজন শিক্ষার্থী এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়েই অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডি করে এই দেশে বসেই দেশের সেবায় নিবেদিত হোক। আমাদের সমস্যা আমাদের বিজ্ঞানীদেরই সমাধান করুক। আমাদের দেশে স্কুলপর্যায়ে অনেক বিজ্ঞানশিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে নিয়মিত, এর অন্যতম কারণ হলো, আমরা বিজ্ঞানশিক্ষাকে স্কুলপর্যায়ে আকর্ষণীয় করতে ব্যর্থ হয়েছি। পেশা হিসেবে বিজ্ঞানী বা গবেষককে এখনো আকর্ষণীয় ও মর্যাদার একটি জায়গায় স্থান দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিজ্ঞানকে জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আবিষ্কার আর উদ্ভাবনের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে উঠে আসা। একটি আধুনিক, গণমুখী, অভিন্ন এবং বৈজ্ঞানিক শিক্ষাব্যবস্থা স্থাপনের বিষয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অবাধ জ্ঞান ও গবেষণায় আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার অঙ্গনে একটি মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা যাতে গবেষণা, অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ এবং বিশ্লেষণাত্মক বিতর্কের মাধ্যমে সৃজনশীল চিন্তাভাবনা, জ্ঞানের জন্ম দেওয়া যায়। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান, কারিগরি, প্রকৌশল, কলা ও গণিত শিক্ষার সম্প্রসারণ করা একান্ত প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা। আইসিটি শিক্ষা এবং আইসিটি অবকাঠামোর উন্নয়ন আরও অগ্রাধিকার দিতে হবে।

নৈতিক শিক্ষা, জ্ঞান শুধু কর্মদক্ষতা ও কৌশল অর্জন নয়, শিক্ষার্থীর মনে মৌলিক ও নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করাই হোক শিক্ষার উদ্দেশ্য। কর্মে ও চিন্তায়, বাক্য প্রয়োগ ও ব্যবহারে যেন একজন শিক্ষার্থী সদা সর্বদা সততার পথ অনুসরণ করে। চরিত্রবান, নির্লোভ ও পরোপকারী হয়ে ওঠে এবং সর্বপ্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হয়, সে বিষয়ে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনাটাও জরুরি। আগামী দিনের সৃজনশীল, সুচিন্তার অধিকারী, সমস্যা সমাধানে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার উপায় হলো, শিক্ষাব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো, যাতে এ দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীর মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং কাজটি করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে। একই ধরনের পরিবর্তন হতে হবে উচ্চশিক্ষার স্তরে। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য টিচিং অ্যান্ড লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের গ্র্যাজুয়েট তৈরির জন্য স্কিল বিষয়ে নিজেরা প্রশিক্ষিত হবেন। উচ্চশিক্ষার সর্বস্তরে শিল্পের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংযোগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষানবিশি কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করা যায়, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনের কার্যক্রম সম্পর্ক হাতে-কলমে শিখতে পারেন।

আরবি/জেআই

Link copied!