ঢাকা রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

বৈষম্যহীন সমাজ: একটি আদর্শের সন্ধানে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম

বৈষম্যহীন সমাজ: একটি আদর্শের সন্ধানে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ একটি বহুবিধ সংস্কৃতির দেশ। ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকার প্রদানই আমাদের সংবিধানের মূল চেতনা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমাদের সমাজে এখনো বৈষম্যের ছায়া বিরাজমান। বৈষম্য হাঁ মানুষের মধ্যে অসমানতা, যা তাদের জন্মগত বৈশিষ্ট্য, যেমন জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ, অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদির ভিত্তিতে হয়। এই অসমানতার কারণে একদল মানুষ অন্যদলের তুলনায় কম সুযোগ-সুবিধা পায়, কম সম্মান পায় এবং কম ক্ষমতা পায়। এই বৈষম্য দূর করে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের সবার দায়িত্ব। সবার আগে আমাদের সবাইকেই বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বৈষম্য কী, কেন হয় এবং এর প্রভাব কী, সে স¤পর্কে জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। বৈষম্য দেখলে চুপ করে থাকা যাবে না। সাহস করে সোচ্চার হতে হবে। নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমাজের সবার মধ্যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। শিক্ষা হলো বৈষম্য দূর করার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।

বিভিন্ন ধর্ম, জাতি, বর্ণের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বৃদ্ধি করা জরুরি। একে অপরকে সম্মান করতে হবে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও তা যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে বৈষম্য দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জনগণকে সচেতন করতে হবে এবং আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজে সকলেই নিজের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশ করতে পারবে। ফলে সমাজের উন্নয়ন দ্রুত হবে। বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত করার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, প্রত্যেক নাগরিকের। আমাদের সমাজে বিভিন্ন কারণে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য বিরাজ করছে। এই বৈষম্য দূর করতে জনগণের সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবারই অংশগ্রহণ জরুরি। সরকারি, বেসরকারি সংস্থা এবং সর্বোপরি জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে।

আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি তাহলে অবশ্যই একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে পারব। সবার আগে সচেতন হতে হবে যে, বৈষম্য একটি সামাজিক ব্যাধি।  এটি সমাজের সবার জন্য ক্ষতিকর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বৈষম্যের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। বৈষম্য হলো মানুষের মধ্যে এমন পার্থক্যকরণ যা তার গোষ্ঠী, শ্রেণি বা অন্যান্য ক্যাটাগরির ওপর ভিত্তি করে করা হয়। এটি এক ধরনের অসাম্য, যা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে অবিচার ঘটায়।

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছাত্রদের একটি উল্লেখযোগ্য আন্দোলন। এই আন্দোলন মেধার ভিত্তিতে সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছে, যা সামাজিক বৈষম্য দূর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ছাত্র আন্দোলন বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এই আন্দোলন সফল হতে হলে সবার সমর্থন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। ছাত্রদের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক, সরকার এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এই লক্ষ্যে একত্র হতে হবে।
 

আরবি/জেআই

Link copied!