ঢাকা বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পদোন্নতিবঞ্চিতদের জন্য কিছু প্রস্তাব

কাজী মো. শফিউল আলম

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ০৬:৩০ পিএম

পদোন্নতিবঞ্চিতদের জন্য কিছু প্রস্তাব

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আসসালামু আলাইকুম শ্রদ্ধেয় পদোন্নতিবঞ্চিত সহকর্মীবৃন্দ, বঞ্চিতদের পক্ষে আপনারা যারা কাজ করছেন; তাদের প্রতি অভিনন্দন ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আপনাদের সক্রিয় ভূমিকার কারণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহোদয়ের ইতিবাচক মনোভাব দেখতে পেলাম। অদ্য (১২-০৮-২৪) সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে পদোন্নতিবঞ্চিতদের ব্যাপারে শিগগিরই পজিটিভ সিদ্ধান্ত নেবেন মর্মে তিনি অবহিত করেছেন। তাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যেন এ প্রক্রিয়ায় জড়িত সব কর্মকর্তার প্রতি তার রহমত বর্ষিত হয়। সদয় বিবেচনার জন্য কিছু প্রস্তাবনা পেশ করছি। 

১. পদোন্নতিবঞ্চিত অথচ এখনো চাকরিতে আছেন, তাদের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উইং ব্যবস্থা নেবে। (তাদের বিষয়ে অবসরপ্রাপ্তদের তেমন করণীয় নাই)।       
২. অবসরপ্রাপ্তদের একটার পর একটা প্রজ্ঞাপন জারি করে যথাক্রমে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে  উঝ, ঔঝ, অফফ ঝবপ এবং ঝবপ পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিতে হবে। ৫৯ বছর পূর্তির অব্যবহিত আগে বিধিসম্মতভাবে যে পজিশন প্রাপ্য ছিলেন, সে পজিশন দিয়ে অবসর দেখাতে হবে। বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যেহেতু এখন নিয়মিত কোনো ডেক্স/পদ হোল্ড করছেন না এবং ভবিষ্যতেও করবেন না; সেহেতু ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিতে আইনগত কোনো জটিলতাও নাই।
৩. ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিপ্রাপ্ত এবং অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা শারীরিকভাবে যোগ্য তাদের বিভিন্ন সেক্টর/করপোরেশন/সংস্থা/সরকারি/বেসরকারি সংস্থা/সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে/সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজি./ট্রেজারার পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাতে হবে। 
৪. ভূতাপেক্ষ পদোন্নতিপ্রাপ্ত সবার এরিয়ারসহ বেতন নির্ধারণের দাবি জানাতে হবে। 
৫. কর্তৃপক্ষ সদয় হয়ে অবসরপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে চুক্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিলে তাদের অবসরের তারিখ ও সর্বশেষ পজিশন বিবেচনা করে একটা গ্রেডেশন লিস্ট করার জন্য এ পি ডি উইংয়ের একজন সিনিয়র অফিসারের নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত ২-৩ এর সমন্বয়ে একটা কমিটি গঠন করা যেতে পারে। 
৬. ওই তালিকা থেকে আগে অবসরে গমনকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্রমান্বয়ে যতটুকু সম্ভব চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।  
৭. সুশৃঙ্খলভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা না হলে বঞ্চনা নিয়ে অবসরে গিয়ে আরেকবার বঞ্চনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। এ পদ্ধতিতে পদায়নের জন্য গঠিত কমিটি যে মেয়াদ ঠিক করবেন (হতে পারে পুরো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় অথবা ২ বছর) সে মেয়াদে সর্বশেষ বঞ্চিত ব্যক্তিকে কোথাও পদায়ন করা সম্ভব না হলে কারও কোনো দুঃখ বা অসন্তোষ থাকবে না। অন্ততঃ আমার কোনো আক্ষেপ থাকবে না এবং অভিযোগও করব নাÑএ অঙ্গীকার এখনই করে রাখলাম। অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা আছেন, যারা শুধু মর্যাদা পেলেই খুশি হবেন (পদায়ন চাইবেন না), পরিবার-পরিজনকে বলবেন ‘দেখো আমি অযোগ্য ছিলাম না, আমাকে বিনা কারণে বঞ্চিত করা হয়েছিলÑতা এখন প্রমাণিত হলো।’ 
৮. অতএব একটু সতর্কতা, ধৈর্য এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজটা করা সম্ভব হলে যারা এর পেছনে শ্রম এবং সময় দিচ্ছেন তাদের পরিশ্রম যেমন স্বার্থক হবে; তেমনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদের আত্মা শান্তি পাবে।  
আমার এ প্রস্তাব কেবল আমার ভাবনার বহিঃপ্রকাশ। আশা করি অনুজ, শ্রদ্ধেয় অগ্রজ সহকর্মী এবং ব্যাচমেটরা আরও ঈড়সঢ়ৎবযবহংরাব/ঈড়হারহপরহম প্রস্তাবনা নিয়ে এগিয়ে আসবেন। আমার লিখায় কোনো ভুল ভ্রান্তি থাকলে বা কিছু অপ্রাসঙ্গিক মনে হলে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।

লেখক : কাজী মো. শফিউল আলম (৪৮৬১); যুগ্ম সচিব (অবসরপ্রাপ্ত); বিসিএস ৮৫ (সপ্তম ব্যাচ) ফেসবুক থেকে নেওয়া
 

আরবি/জেডআর

Link copied!