ঢাকা সোমবার, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫

যে সংস্কৃতিতে সবাই মিলে একা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২৫, ০৯:১৮ এএম

যে সংস্কৃতিতে সবাই মিলে একা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গ্রামীণ সমাজ কাঠামোর একটি সংকুচিত বিন্যাস হলো, শহুরে ফ্ল্যাট কাঠামো। সমস্যা হলো, গ্রামীণ সমাজে একটি পারম্পর্য থাকে, সেখানে নানা মাত্রিক আর্থ-সামাজিক বন্ধন কাজ করে। গ্রামীণ সমাজ কাঠামোর এ সম্পর্কটি হলো, অরগানিক আর শহরের ফ্ল্যাট হলো মেকানিক্যাল সম্পর্কের সূচক। সমাজ চলে অলিখিত নিয়ম ও চুক্তিতে আর ফ্ল্যাট পরিচালিত হয় লিখিত সমঝোতার নিরিখে।

ফ্ল্যাট হলো, সদরঘাট, যেখানে সম্পর্ক খেলা করে কিন্তু জমাট বাঁধে না। একইভাবে ফ্ল্যাট হলো, বহু রুচি, সংস্কৃতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির মিলনস্থল; যা আবাস হিসেবে নগর জীবনে অপরিহার্য হয়েছে। ফ্ল্যাট গণতন্ত্রচর্চা, ক্ষমতা-কাঠামো, পরিচয় নির্মাণ, সম্পর্কের মেরুকরণ এবং হ্যাটম শোয়ের এক নতুন ক্ষেত্র। অধিকাংশ ফ্ল্যাটবাড়ি মূলত কখনো জ¦লন্ত কখনো বা সুপ্ত আগ্নেয়গিরিসদৃশ। নাগরিক জীবনপাঠের এক খোলা জানালা।

ফ্ল্যাটের প্রকৌশল কাঠামো যত সুউচ্চ বা বহিরাঙ্গের নির্মাণশৈলী বাহারি হোক না কেন এর ভেতরাঙ্গটা বড়ই লঘু উচ্চতা এবং শতধাবিভক্ত। এ বিভক্তির পেছনে রয়েছে মূলত ভাবস্বীকৃতি বা আধিপত্য বিস্তারের পরাস্ত মনোবাসনা।

ফ্ল্যাটে তিন শ্রেণির মানুষের বাস। ভূমির মালিক, যারা ডেভেলপারকে ভূমি দেয় এবং এর বিনিময়ে টাকা ও নির্দিষ্ট সংখ্যক ফ্ল্যাট পায়। ভূমি মালিকরা নিজের পাওয়া ফ্ল্যাটে বাস করে অথবা ভাড়া দেয়। ফ্ল্যাটের আরেক ধরনের মালিকানা রয়েছে, যারা ক্রয়সূত্রে ফ্ল্যাটের মালিক হয়। আরেকটি অংশ আছে যারা ভাড়া থাকে।

ডেভেলপার ফ্ল্যাট ডেভেলপড এবং বিক্রি শেষে ফ্ল্যাট মালিকদের অংশগ্রহণে গড়ে তোলা ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ফ্ল্যাট পরিচালনা-সংক্রান্ত গঠনতন্ত্র তৈরি করে। অ্যাসোসিয়েশনের কাছে ফ্ল্যাট পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পণের ভেতর দিয়ে ডেভেলপার বিদায় হয়। এটি গ্রহণযোগ্য ও সুন্দর চর্চা, এমন অব্যাহত থাকলে এ ধারা ইতিবাচক।

সবসময় যে এ প্রাকটিস অনুসৃত হয় এমন নয়। অনেক সময় ডেভেলপার সুচারুভাবে এ কাজগুলো করতে পারে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট হস্তান্তরের আগে ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজের মান ও চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপকরণাদি সরবরাহ করতে গাফিলতি, দীর্ঘসূত্রতা বা অপারগতার কারণে ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সঙ্গে নানারকম দ্বন্দ্বমুখর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে ফ্ল্যাট মালিকরা একত্রিত হয়। নিজের ফ্ল্যাট বুঝে পাওয়ার আগে অন্য মালিকদের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করে। তারা ফ্ল্যাটের সাধারণ স্বার্থের ব্যাপারে জোটবদ্ধ হয়। ডেভেলপারকে চাপ সৃষ্টি করে।

শুরুর দিকে ফ্ল্যাট মালিকরা পরস্পর কিছুটা অচেনা বা অজানা হলেও সাধারণ স্বার্থের ব্যাপারে তাদের জোট বাঁধতে বেশি বেগ পেতে হয় না। ফ্ল্যাট ক্রেতারা চুক্তি মোতাবেক প্রাপ্য বুঝে নিতে সতর্ক থাকে। অন্যদিকে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রেতার সঙ্গে ডেভেলপারের ফ্ল্যাট ক্রয়-সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর তা বাস্তবায়নে হেরফের ও গড়িমসি দেখা যায়।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ফ্ল্যাট ক্রেতারা অনেক সময় নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। যারা এক কিস্তিতে রেডি ফ্ল্যাট কিনে তাদের বিষয়টি অবশ্য ভিন্ন। অর্থাৎ, ফ্ল্যাট কেনার আগে ডেভেলপারের সঙ্গে ক্রেতার যে আনন্দদায়ক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় এর আয়ুষ্কাল অল্প।

আগেই পাঠক জানতে পেরেছেন, ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একটি গঠনতন্ত্র থাকে। ফ্ল্যাট পরিচালনার সার্বিক দিক এখানে লিপিবদ্ধ থাকে। এ গঠনতন্ত্র হলো, ফ্ল্যাট-সংস্কৃতির নির্ধারক। ফ্ল্যাটের মালিকরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ গঠনতন্ত্র ও চলনকাঠামো তৈরি ও নির্ধারণ করে।
ফ্ল্যাট বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা মানুষের মিলনস্থল; সুতরাং তা শৃঙ্খলায় আনতে এ ধরনের সমঝোতামূলক নীতিমালার বিকল্প নেই। অ্যাসোসিয়েশন নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে চলে একটি জটিল ফ্ল্যাট-রাজনীতি। অধিকাংশ ফ্ল্যাট-সদস্যের মধ্যে ফ্ল্যাট পরিচালনার নেতৃত্ব প্রদানের বেশ আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।

বাঙালির নেতৃত্ব প্রদানের সুপ্তবাসনা যে কতটা প্রবল তা ফ্ল্যাটগুলোর সভায় অংশগ্রহণ না করলে বোঝা বেশ কঠিন। সাধারণ পাঁচ বা সাত সদস্য নিয়ে কমিটি গঠিত হয়। একজন সভাপতি, একজন সাধারণ সম্পাদক ও একজন কোষাধ্যক্ষসহ দু-চারজন সদস্য নিয়ে কমিটিগুলো হয়। সদস্যদের সম্মতি এবং ভিন্নমতের ভিত্তিতে কমিটি গঠিত হয়।

মজার ব্যাপার হলোÑ কমিটি গঠনের পরদিন থেকে অন্য সদস্যরা কমিটির কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করতে থাকে। বাঙালির প্রতিষ্ঠানবিরোধী মানসিকতার বহির্প্রকাশ সহজেই স্পষ্ট হয়। তারা সম্মিলিতভাবে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর চেষ্টা করে এবং প্রতিষ্ঠানটি দাঁড়িয়ে গেলে তা সম্মিলিতভাবেই তা আবার ভাঙতে উঠেপড়ে লেগে যায়।

অর্থাৎ, ভঙ্গুর প্রাতিষ্ঠানিক মনোকাঠামো নিয়ে ব্যক্তি যখন ফ্ল্যাটের মতো গড়ে ওঠা আধুনিক আবাসন ব্যবস্থায় প্রবেশ করে, তখন ব্যক্তিকে যূথবদ্ধভাবে বাস করার জন্য যে মনোভঙ্গি দরকার সেটার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হয়।

অপরদিকে, কমিটির সদস্যরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দ্রুত গণতান্ত্রিক আচার-আচরণ পরিত্যাগ করে একগুঁয়ে মনোভাব নিয়ে ফ্ল্যাট পরিচালনা করতে থাকে। ফলে দ্রুত তিক্ততা বাড়ে; নানা দল বা উপদল তৈরি হয়। তিক্ততা হয় বহুমাত্রিক।

ফ্ল্যাটে বসবাস করতে যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তা হলো, রাজনৈতিক জ্ঞান, দেন-দরবারের ক্ষমতা এবং যোগাযোগ দক্ষতা। ফ্ল্যাট-সংস্কৃতি হয়ে উঠছে একটি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ক্ষুদ্র সংস্করণ। একটি দেশের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য অনুধাবন করতে ফ্ল্যাটবাড়ির গবেষণা একক হয়ে উঠছে।

ফ্ল্যাট অ্যাসোসিয়েশন সভাগুলো চমৎকার একটি প্যাটার্ন। বিশেষত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, রসায়ন, কৌশল ও স্বার্থ বোঝার জন্য। ফ্ল্যাটে সাধারণত দুই ধরনের সভা হয়। কমিটির সদস্য নিজেরা বসে জরুরি বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আবার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সব সদস্যের অংশগ্রহণে বিশেষ বা সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়।

সাধারণ সভায় সুনির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি থাকলেও কোনো সময়ই তা যথাযথভাবে অনুসৃত হয় না। সাধারণত যেকোনো সদস্য কথা বলার সময় বিষয়ভিত্তিক কথা বলার চেয়ে তার অবস্থান, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বোঝানোর চেষ্টা করে। অনেক সময় বক্তার বক্তব্যের সারবত্তা খুঁজে পাওয়া যায় না।

এ সভাগুলো মোটেও উপভোগ্য হয় না, হয় ক্লিশে, বিরক্তি ও ক্লান্তিকর। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ১৫-২০ ফ্ল্যাট সদস্য দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আলোচনা করে সিকিউরিটি গার্ডের বেতন বাড়িয়েছেন দুইশ’ টাকা, যা মোটেও ব্যয়সাশ্রয়ী নয়। অথবা কমন স্পেসে রাতে লাইট জ¦লবে কি জ¦লবে না বা কমন স্পেসের ক্লিনারের পারফরমেন্স নিয়ে দেড়-দুঘণ্টা আলোচনা শেষ হয়েছে কোনো সিদ্ধান্ত ব্যতিরেকে।

সভার সভাপতি বা সম্পাদকের থাকে না সভা পরিচালনার বিশেষ কোনো দক্ষতা। অন্যকে কথা বলতে দেওয়ার চেয়ে তারাই বেশি বলেন। বাঙালি যখন কোনো সভায় বসে তখন সে যে কত কৌশলী হতে পারে তা এ ধরনের সভাতে না বসলে বোঝা মুশকিল। সদস্যরা সভায় বসে চোখাচোখি করে, ম্যাড়ম্যাড়ে স্বরে- অস্পষ্ট ভাষায় এবং দিক-নির্দেশনাহীনভাবে কথা বলে। খুব হিসাব-নিকাশমূলক এক মনোভঙ্গি নিয়ে সদস্যরা সভায় অংশগ্রহণ করে। অর্থাৎ, কাঠামোবদ্ধ আলোচনায় বাঙালি খুব অসংগঠিত, ও উদভ্রান্ত তা সহজেই বোঝা যায়।

যারা নেতৃত্বে থাকে তারা এটাকে বানিয়ে ফেলে স্বৈরাচারের ক্ষুদ্র সংসদ। ফ্ল্যাট ওনার্সদের মধ্যে মধুচন্দ্রিমা পার হলেই সৃষ্টি হয় সম্পর্কের নানাবিধ জটিলতা। কে কত বড় চাকরি করে, কে কত বড় ব্যবসায়ী, কার গাড়ি কী ব্র্যান্ডের এবং তা নতুন না পুরাতন; কার ফ্ল্যাট নিচে আর কারটা উপরে, কার সাইজ কত বড় (বর্গফুট), ছেলে-মেয়েরা কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে ইত্যাদি।

এ ছাড়াও বছরে কে কতবার ফ্যামিলি নিয়ে বিদেশভ্রমণে যায়, সপ্তাহে কবার দামি রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করে এবং পোশাক-আশাক, আত্মীয়-স্বজনের প্রভাব প্রতিপত্তি হয়ে ওঠে পরিচয়ের আলাদা সূচক। এগুলোর সাদৃশ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয় ছোট ছোট উপদল। দ্রুতই ফ্ল্যাটের মধ্যে আপার ক্লাস, মিডল ক্লাস ও লোয়ার ক্লাস তৈরি হয়ে যায়। একবার তা তৈরি হলে হয়ে ওঠে এক অভেদ্য প্রাচীর। ফ্ল্যাট-সংস্কৃতির মূল প্রবণতা হলো, সবাই মিলে একা।

ফ্ল্যাটের তথাকথিত আপার বা মিডল ক্লাসের সঙ্গে লোয়ার ক্লাসের মতবিরোধ হলে তা খুব অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়িয়ে ফ্ল্যাটে বসবাস করতে প্রয়োজন বিশেষ দক্ষতা। এ দক্ষতা না থাকলে পথ হয় কণ্টকাকীর্ণ।

ফ্ল্যাটের দুটো গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হলো- নিরাপত্তাপ্রহরী ও কাজের সহায়ককর্মী। নিরাপত্তাপ্রহরীদের বেঁচে থাকার প্রকৌশল আলাদাভাবে দেখার আগ্রহ তৈরি হয়। যারা পেশাদার নিরাপত্তাপ্রহরী নয়, তারা কেবল মেধা বা শিক্ষা নয়, শরীর নিয়ে রাজধানীতে আসে এই কাজের জন্য। ফ্ল্যাট সদস্যদের মনস্তত্ত্ব, আচার-আচরণ, ফ্ল্যাটের ক্ষমতা-কাঠামো বুঝেশুনে ও ভারসাম্য বজায় রেখে তাদের চলতে হয়।

কোনো কারণে এর বিচ্যুতি হলে চাকরি খোয়াতে হয়। সাধারণ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষকে খুশি করে তারা চলে। নিরাপত্তাপ্রহরীরা ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও হালচাল বেশ ভালো বোঝে। সম্ভাব্য সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গেও তারা সখ্য বজায় রাখে।

নিরাপত্তাপ্রহরীদের সবচেয়ে জটিল অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়। স্বল্প বেতনে নিজেদের চলতে হয়, পরিবারের কাছে মাস শেষে টাকা পাঠাতে এবং ফ্ল্যাটের সদস্যদের মন জুগিয়ে চলতে হয়। ফ্ল্যাটের মালিকরা ভাবসাবে তো একেকটি সাম্রাজ্যের অধিপতি। এসব রাজাদের খুশি রাখা সহজ কাজ নয়, যা সাফল্যের সঙ্গে পল্লিগ্রাম থেকে আসা এক নিরীহ নিরাপত্তাপ্রহরী করে চলে।

কাজের সহায়ক নারীকর্মীরাও আরেক অনুঘটক। ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের রয়েছে কখনো নিকটবর্তী বা কখনো দূরবর্তী সংযোগ। একটা ফ্ল্যাটবাড়ির একাধিক ফ্ল্যাটে যখন কোনো নারী সহায়ক কাজ করে, তখন সে নিজের অবস্থান পোক্ত করার জন্য এক ফ্ল্যাটের তথ্য আরেক ফ্ল্যাটে শেয়ার করে। এসব নারীকর্মী কনফ্লিক্ট কানেক্টর হিসেবে কাজ করে।

ফ্ল্যাট বাড়িতে সবসময় এক ধরনের মানসিক চাপে থাকে ভাড়াটিয়া। ফ্ল্যাট মালিকরা তাদের প্রতি রাখে তীর্ষক দৃষ্টি। অনেকসময় তাদের ছোটখাটো বিষয়েও ফ্ল্যাট মালিকরা অযৌক্তিক আচরণ করে। ভাড়াটিয়াদের বাস করতে হয় এক উপেক্ষিত ও অবহেলিত সংস্কৃতির মধ্যে, অথচ তারা ভাড়া দিয়েই ফ্ল্যাটে বাস করে।

আধুনিক নগরজীবনে ফ্ল্যাট সংস্কৃতি হয়ে উঠছে ভঙ্গুর সামাজিক সম্পর্কের এক মিলনস্থল। সামাজিক প্রেক্ষাপটে যূথবদ্ধভাবে বাসের অভ্যাসের ঐতিহ্য থাকলেও ফ্ল্যাট-সংস্কৃতিতে সৌহার্দ্য, সংহতি-ঐক্য, স্বস্তি ও মর্যাদা নিয়ে বাস করার মসৃণপথ এখনো নির্মিত হয়নি, হয়তো হবে কোনো একদিন সেই প্রতীক্ষার ক্ষণ গণনা চলুক।

 

আরবি/জেআই

Link copied!