ঢাকা বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জাতিসংঘের দ্য ফিউচার সামিট ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর

মো. সায়েম ফারুকী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ১০:২৯ পিএম

জাতিসংঘের দ্য ফিউচার সামিট ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দ্য সামিট অব দ্য ফিউচার হলো ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর একটি দুই দিনের কনফ্যাব বা বন্ধুত্বপূর্ণ ও একান্ত আলাপ-আলোচনা। যা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। এটিকে ‘প্রজন্মের’ সুযোগ হিসেবে মনে করা হয়।  বৈশ্বিক অস্থিরতার সময়ে জাতিসংঘ এবং বহুপাক্ষিক সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করার এবং সাধারণ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের উপায় হিসেবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর আস্থা পুনরুদ্ধার করার একটি বৈঠক। এটি অব্যবহারিকভাবে আদর্শিক শোনাতে পারে, কিন্তু শীর্ষ সম্মেলনটিই জাতিসংঘে নির্দিষ্ট কিছু সংস্কার আনার উদ্দেশ্যে নীতি এবং প্রস্তাবগুলোকে ঘিরে বছরের পর বছর ধরে আলোচনা, পর্যালোচনা এবং কূটনীতির চূড়ান্ত পরিণতি যা এটিকে ভবিষ্যতের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য আরও প্রতিক্রিয়াশীল করে তুলবে। আমাদের ‘নরক বা খারাপ সময় থেকে আমাদের বাঁচাতে’ পর্বটি সম্পূর্ণরূপে ভবিষ্যতের শীর্ষ সম্মেলন এবং জাতিসংঘের কিছু নির্দিষ্ট সংস্কারের জন্য নিবেদিত। সহ-হোস্ট থাকবেন অঞ্জলি দয়াল এবং মার্ক লিওন। জাতিসংঘের আসন্ন অধিবেশনে বিভিন্ন স্বার্থের ওপর আলোকপাত করা হবে।

আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যখন একত্র হবেন, গাজা ও ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্ভবত তৃতীয় বছরের মতো আলোচনার সবচেয়ে বড় বিষয় হতে পারে। তবে অনেক উন্নয়নশীল দেশ তাদের জন্য উন্নয়ন, অর্থনীতি এবং জলবায়ুসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আলোকপাত করার আশা করছে। গত বছরের ইন্দোনেশিয়ায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন, ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন, কিউবায় জাতিসংঘের উন্নয়নশীল দেশগুলোর অনানুষ্ঠানিক জোট গ্রুপ অব ৭৭ প্লাস-এ মিলিত হওয়ার পর, বিশ্ব নেতারা এই বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। বেশ কয়েকজন উচ্চ মাপের নেতা যদিও নিউইয়র্ক এড়িয়ে যাচ্ছেন, তারপরও ১৪০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এতে অংশ নিচ্ছেন। বিশ্বের নানা স্থান যেহেতু আক্ষরিকভাবে অগ্নিগর্ভ, সেখানে কথা বলার মতো অনেক কিছুই থাকবে। 

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অধিবেশন শুরুর আগে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে একত্র হব, যখন মানবতা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই জগাখিচুড়ি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পথের দিশা দেবেন, এমন আশায় সারাবিশ্বের লোকজন তাদের নেতাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।’ গুতেরেস বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ ভূ-রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিশ্ব নেতারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর নেতারা যা আশা করছেন তা হলো টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু প্রশমন এবং অভিযোজন ছাড়াও মহামারি প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির বিষয়ে বাস্তব পদক্ষেপ। অধিবেশন চলাকালে সপ্তাহে ওইসব বিষয় নিয়ে আলাদা বৈঠক হবে। গুতেরেস টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি নিয়ে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে উচ্চ-পর্যায়ের সপ্তাহের সূচনা করবেন। 

২০১৫ সালে, নেতারা ১৭টি লক্ষ্যে অগ্রগতির দিকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যার প্রধান লক্ষ ছিল ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্যের অবসান ঘটানো। এখন ২০৩০ এর সময়সীমার অর্ধেক সময়ে এসে, এসডিজির মাত্র ১৫ ভাগ সঠিক পথে রয়েছে। বাকিগুলো হয় খুব কম অগ্রগতি করছে কিংবা ২০১৫-এর আগের স্তরে পিছিয়ে যাচ্ছে। মহামারি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রজন্মের মধ্যে প্রথমবারের মতো চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। জাতিসংঘ বলেছে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে, চলতি দশকের শেষ নাগাদ সাড়ে ৫৭ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে নিমজ্জিত হবে এবং আরও ৬০ কোটি মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হবে।

গুতেরেস সংবাদদাতাদের বলেছেন, আগামী সপ্তাহে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজিগুলোকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনাই তার প্রধান উদ্দেশ্য। এর একটি বড় অংশ হলো অর্থায়ন এবং তিনি এসডিজিগুলোকে ‘পুনরুদ্ধার’ করতে সাহায্য করার জন্য দেশগুলোর কাছ থেকে বছরে ৫০ হাজার কোটি ডলারের একটি উচ্চাভিলাষী প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার আশা করছেন।

নেতারা এই দশকের শেষ নাগাদ লক্ষ্য পূরণের জন্য ‘সাহসী, উচ্চাভিলাষী, ত্বরান্বিতকরণ, ন্যায্যতা এবং রূপান্তরমূলক পদক্ষেপে’র প্রতিশ্রুতি দিয়ে, শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতে একটি রাজনৈতিক ঘোষণা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মহাসচিব একটি জলবায়ু উচ্চাকাক্সক্ষা শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করছেন। এতে তিনি ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারি নেতাদের একত্র করছেন। তিনি বারবার সতর্ক করেছেন যে, জলবায়ু বিপর্যয় রোধে পদক্ষেপ নেওয়ার সময় ফুরিয়ে আসছে।

 

সম্পাদক, রূপালী বাংলাদেশ
 

আরবি/জেডআর

Link copied!