‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। দলটির স্লোগান ‘গড়ব মোরা ইনসাফের বাংলাদেশ’।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। দলটির চেয়ারম্যান হয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন এবং মহাসচিব হয়েছেন সাংবাদিক শওকত মাহমুদ।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের রূপরেখা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নির্বাচনী প্রস্তুতি বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
দলটির ঘোষিত সূচনা ইশতেহারটি রূপালী বাংলাদেশ-এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘‘জীবনযাপনে তীব্র বৈষম্য ও সংকট, অব্যাহত গণতান্ত্রিক বঞ্চনা ও ইনসাফের ঘাটতি, মানবিক মর্যাদার ভূলুণ্ঠিত, জনমানুষের জীবনমান উন্নয়নে স্থবিরতা এবং স্বাধীনতা হরণ ও স্খলনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ শতাধিক বছর ধরে সংগ্রামে রত। অপার সম্ভাবনার এ উর্বর বদ্বীপের অদম্য জনসম্পদের ধারাবাহিক লড়াইয়ের একপর্যায়ে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম। কিন্তু তাকে ঘিরে মানুষের স্বপ্নকে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা গুঁড়িয়ে দেয়। ভাষা, সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক বঞ্চনার ফলে পূর্ব পাকিস্তানি জনগণ স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়।
১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়। কিন্তু তখনকার রাজনৈতিক নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা, অপশাসন এবং জাতীয় ঐক্যবিরোধী কর্মকাণ্ড জাতির সামনে নতুন বিপদ হাজির করে। পাকিস্তানের সংবিধান তৈরির লক্ষ্যে ১৯৭০-এর নির্বাচনে গঠিত গণপরিষদ দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়। স্বাধীনতার ঘোষণায় ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে উহ্য রেখে বাহাত্তরের সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র’কে মূলনীতি হিসেব আনা হয়।
রক্তস্নাত স্বাধীনতাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্য নেওয়া একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেটি ছিল চরম বেইমানি। গোড়ার এ গলদে আজও বাংলাদেশ বিশ্বে শক্তিশালী রাষ্ট্ররূপে দাঁড়াতে পারেনি। এ কারণে প্রজাতন্ত্রের গণভিত্তির দুর্বলতা থেকে যায়। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং বাহাত্তরের সংবিধানের পরস্পরবিরোধী অবস্থান এবং তৎসময়ের ফ্যাসিবাদ জনগণকে বিভক্ত করে ফেলে। ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্র একই সময়ে ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করানোয় বাংলাদেশে শুরু হয়ে যায় গৃহদাহ, যার রেশ আজও প্রকট।
তদুপরি বাংলাভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশকে ধর্মের বিপরীতে স্থাপন করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা, পারস্পরিক সমঝোতা ও সৌহার্দ্যকে নষ্ট করে ধর্মকে স্রেফ পরিচয়সর্বস্ব সাম্প্রদায়িকতায় পর্যবসিত করে দেয়। ১৯৭৫-এর ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার জাতীয় বিপ্লব, নব্বইয়ে স্বৈরাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ঐতিহাসিক সংগ্রামের একেকটি কালজয়ী পর্ব।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশ গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রকৃত গণতন্ত্র ও তার পর্যায়ক্রমিক বিকাশ আসেনি এবং রাজনীতির সদরে-অন্দরে ফ্যাসিবাদের পরগাছা প্রবল প্রতাপে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা রাজনীতির সব ব্যাকরণ ভেঙে বিক্ষিপ্ত ফ্যাসিবাদকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
যা বিশ্বে এক নজিরবিহীন ‘জুলুম’ হিসেবে প্রতিপন্ন হয়। রাজনৈতিক দলগুলো হয়ে পড়ে অকার্যকর অথবা ফ্যাসিবাদের অন্ধ অনুগামী। অনুগতদের মধ্যে প্রগতিশীল, মুক্তিযোদ্ধা এবং গণতন্ত্রমনা স্বার্থবাদী রাজনীতিকদের উল্লেখাংশ ছিল। পাকিস্তান আন্দোলন, ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ‘৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশ পরবর্তী নব্বইয়ের অভ্যুত্থানসহ প্রতিটি আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিল তরুণ-ছাত্রসমাজ। শেখ হাসিনার কুশাসনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী বা আন্দোলনগত ব্যর্থতার অন্তরালে আবার প্রস্তুত হতে থাকে মধ্যবিত্ত ছাত্রসমাজ। এদের ঐতিহাসিক যোগসূত্র অবশ্যই রয়েছে।
এই তরুণেরা বিদ্যার্জনে অনুরাগী, কারণ তা বিভাজনের সড়কেও বাধা (কোটা আন্দোলন যার পরিণাম)। শিক্ষার আনুকূল্যেই মধ্যবিত্তের উত্থান, বিচ্যুতি ও নিরাপত্তা। বিদ্যার্জনের সঙ্গে সাহিত্যে কিছুটা উৎসাহ, সংস্কৃতি সম্পর্কে খানিকটা কৌতুহল, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে কিয়ৎপরিমাণ জিজ্ঞাসা অনিবার্যভাবে আসে। ১৯৪৭-এর ৩ জুন মাউন্ট ব্যাটেন রোয়েদাদ ঘোষণার পর একই বছরের জুলাই মাসে মুসলিম লীগের কয়েকজন তরুণ ও প্রগতিশীল কর্মী পৃথক একটি সংগঠনে একত্রিত হয়ে তাদের ঘোষণাপত্রে বলে দেয় বিদেশি শাসন থেকে একটি দেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সেই দেশবাসীরা স্বাধীনতা পেল।
রাজনৈতিক স্বাধীনতার কোনো মূল্যই নেই, যদি স্বাধীনতা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি আনয়ন না করে। এদের মধ্যে ছিলেন, কামরুদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখ। ভাষা আন্দোলনের প্রাথমিক নেতৃত্ব পাকিস্থানপন্থি, কালজয়ী পর্ব।
তাদের অধিকাংশ গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রকৃত গণতন্ত্র এবং তার পর্যায়ক্রমিক বিকাশ আসেনি এবং রাজনীতির সদরে-অন্দরে ফ্যাসিবাদের পরগাছা প্রবল প্রতাপে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা রাজনীতির সব ব্যাকরণ ভেঙে বিক্ষিপ্ত ফ্যাসিবাদকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
তাবৎ বিশ্বের দৃষ্টি এখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের দিকে। এ এক নতুন সম্ভাবনার সূর্যোদয়। শুধু সরকার পরিবর্তন অথবা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আকাঙ্ক্ষাই অভ্যুত্থানের একমাত্র লক্ষ্য হতে পারে না; বিপ্লবের প্রত্যাশ্যায় ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন রাষ্ট্রীয় বন্দোবস্ত কায়েম এবং রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদ এবং অনিয়ম নাশে হুলফোটানো গণতন্ত্র আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, প্রতিটি গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লব ও আন্দোলনের পরে ওইসব সংগ্রামী চেতনায় নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের অভ্যুদয় ঘটে। যেহেতু রাষ্ট্র সাজবে একাত্তর ও চব্বিশের গণ-জাগরণের চেতনায়, সেই আঙ্গিকে নতুন দলের আবির্ভাব অনিবার্য। জাতির এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতীয় প্রত্যাশায় সর্বপ্রকার বৈষম্য, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে জনকল্যাণ ইনসাফ ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে এবং গর্বিত জাতীয়তাবোধ দৃঢ়ীকরণ করতে আমরা আজ নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।
এ জন্য যে,
১. স্বাধীন রাজনৈতিক দলের অভাব: ৫৪ বছরে এত সংগ্রামের পরও বাংলাদেশে একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব ঘটেনি, যে দল এদিক-ওদিক না চেয়ে শুধু জনগণের পক্ষে দ্ব্যর্থহীনভাবে দাঁড়িয়েছে। এমন রাজনৈতিক দলের কথা কেউ বুক ফুলিয়ে বলতে পারে না, যারা দিল্লি, পিণ্ডি, মস্কো, ওয়াশিংটন, বেজিংয়ের প্রভাবমুক্ত থেকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পেরেছে অথবা বাংলাদেশি জাতিকে একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে পরিণত করতে সমর্থ হয়েছে।
২. রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতা: আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো আন্দোলন করলেও জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। যার দরুন ছাত্রদের চূড়ান্ত সংগ্রামে অর্থাৎ এক দফায় নামতে হয়েছে। আশির দশকে যেখানে আট বছরে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সফল গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত করা সম্ভব হয়েছে। এবার ১৫ বছরেও তা করা সম্ভব হয়নি। জনগণ একে প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থার গুরুতর ব্যর্থতা বলেই মনে করে। অধিকন্তু দীর্ঘ ৫৪ বছরে তারা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাধন করতে অপারগ ছিল।
৩. ভারত তোষণ: সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিপক্ষে জনগণ সোচ্চার হয়েছে। ভারত ওই ফ্যাসিবাদকে তোষণ ও পোষণ করেছে। বিনিময়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিদায়ের পর গণ-অভ্যুত্থানের ভারতবিরোধী চেতনার উল্টোপথে বিদ্যমান দলগুলো হাঁটছে এ জন্য যে, তাদের ধারণা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে ভারতকে লাগবে।
এমনকি গণহত্যার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণসিদ্ধ অভিযোগের সম্মুখীন আওয়ামী লীগ, তাদের মনোনীত রাষ্ট্রপতি বা ফ্যাসিবাদ সহায়ক বাহাত্তরের সংবিধানের পক্ষেও তারা ওকালতিতে নেমেছে। আমরা মনে করি, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ বিচার বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্যই জরুরি।
৪. সংকটের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রূপ: গণ-অভ্যুত্থানের চেতনার সূত্রে সনদ প্রণয়ন বা সংস্কার প্রসঙ্গে ছাত্র নেতৃত্বের সঙ্গে বিদ্যমান দলগুলোর মতপার্থক্য এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। সংস্কার আগে না নির্বাচন এ প্রশ্নেও তীব্র মতভেদ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর তাবৎ ক্ষমতা রেখে দেওয়া যা ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর অথবা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের বিষয়গুলো নিয়ে ক্ষমতা-প্রত্যাশী দলগুলো অন্যরকম বলছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক পরাশক্তিগুলোর প্রতি তাদের পরোক্ষ আনুগত্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, গাজায় ইসরাইলের অবর্ণনীয় গণহত্যা, বড় দেশগুলোর ছোট দেশ কবজা করার সাম্রাজ্যবাদী স্পর্ধার নিন্দা জানাতে পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়। ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী মুসলিমবিদ্বেষী নেতৃত্ব যারা রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার দুঃস্বপ্ন দেখছে, তা নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক পরিসরে কোনো আলোচনা নেই। বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদের নব উত্থান, ধনকুবেরদের বৈশ্বিক অর্থনীতি বিনষ্টের চক্রান্ত, যুদ্ধ বাঁধিয়ে বিশ্বশান্তি বিনাশের আয়োজকদের আমরা কীভাবে মোকাবিলা করব, সেই কর্মপ্রণালী নিয়েও আমাদের অভিনিবেশ নেই।
প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বড়গুলো এখন মাৎস্যন্যায়ের (বড় মাছ কর্তৃক ছোট মাছ খেয়ে ফেলা) নীতিতে অবতীর্ণ হয়েছে। তুলনামূলক ছোট দলগুলোকে ‘জাতীয় সরকার’ বা ‘নির্বাচনী গাঁট বন্ধন’-এর নামে হজম করার খেলায় নেমেছে। আর ওই সব ছোট দলও সংসদে আসন প্রাপ্তির লোভে তাদের আর্দশ ও স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে ফেলেছে। এক নেতা সর্বস্ব এসব দল জনগণের প্রতি আর দায়বদ্ধ নেই। বড়রা ইসলামী দলগুলোকে পাশে টানতে কৃত্রিম মহব্বতে মগ্ন।
৬. বিপর্যন্ত জীবন: গত ৫৪ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রত্যাশিত গণতন্ত্র আনতে পারেনি, ধনীকে আরও ধনী ও গবিবকে আরও গবিব করেছে। একটা সুষ্ঠু অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসাব্যবস্থা, দুর্ঘটনামুক্ত পরিবহনব্যবস্থা, সুবিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে পারেনি। বিপর্যস্ত জীবনের অসহ্য বিস্তারই যেন আমাদের নিয়তি।
মোটা দাগে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা, ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান, সর্বোপরি ২০২৪-এর জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আমরা ‘জনতা পার্টি বাংলাদেশ’ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মূল স্লোগান হবে ‘গড়ব মোরা ইনসাফের দেশ’।
ছাত্র-জনতার বিশ্বকাঁপানো গণ-অভ্যুত্থানের সুতীব্র আকাঙ্ক্ষায় আগামীর বাংলাদেশকে গড়ে তোলার ভিত্তি নির্মাণ এখনকার প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সফল অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
নতুন দলের আশু লক্ষ্যসমূহ নিম্নরূপ
১. মহান আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, সব ধর্ম ও সাংস্কৃতিক চর্চার স্বাধীনতা নিশ্চিতের নীতি এবং সর্বধর্ম সহাবস্থান ও সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের নীতি। সব ধর্মীয় জঙ্গিবাদ ও উগ্রতাকে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সব মত ও পথকে সমন্বিত করে রাজনৈতিক বিভাজনের ভেদরেখা মুছে ফেলে একটি স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিনির্মাণ জরুরি। স্লোগানসর্বস্ব জাতীয় ঐক্য নয়, সব জাতীয় ইস্যুতে ঐকমত্য হবে ভবিষ্যতের পথ চলার দিশা।
২. আমরা উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী মধ্যপন্থি একটি দল। মধ্যপন্থা মানে এই নয় যে, সব মতের মধ্যে একটি আপসমূলক অবস্থান। বরং পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৪৩ আয়াতের ভাষ্য অনুযায়ী, মধ্যপন্থিরা হচ্ছে ইমানে বলিয়ান, মানবীয় মর্যাদা ও সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ভারসাম্যপূর্ণ এক সম্প্রদায়, যারা ভালো কাজের কথা বলবে, মন্দকে নিরুৎসাহিত করবে, অধিকন্তু জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা উচ্ছেদে আমরা দৃঢ়সংকল্প। ন্যায্যতা, সমতা, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
৩. শুধু নির্বাচনসর্বস্ব গণতন্ত্রকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। জীবনযাপনের প্রতিটি স্তরে ও ক্ষেত্রে প্রতিদিন আমরা গণতন্ত্রের চর্চা চাই। অপরাজনীতিকে জিইয়ে রেখে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। স্বাধীনতার এ ক্ষণে জাতিকে নতুন যাত্রাপথে তুলে দিতে, বেদনাদায়ক হলেও, সর্বপর্যায়ে সংস্কার আবশ্যক। ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের হাতে সংস্কারের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া মানে আত্মহনন এবং জনগণকে আশাহত করা।
সংস্কারের মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্রীয় বন্দোবস্ত সাব্যস্ত করা জরুরি। সব সংস্কার প্রস্তাবের নির্মোহ মূল্যায়ন আবশ্যক। সব ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তপরায়ণতা রুখতে বড় ধরনের নৈতিক জাগরণ প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, হাজারো শহীদের রক্তে গড়া ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেট রয়েছে। এসবের বাস্তবায়নে ছাত্রদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকবৃন্দ ও জনতার সংকল্প ও এ সরকারের অন্যতম ভিত্তি।
৪. বিভক্তি ও বিভাজনের অপরিণামদর্শী রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বাক, ব্যক্তি, বিবেক, চিন্তা, মতপ্রকাশ এবং ভাষা, সাংস্কৃতিক, দার্শনিক বিকাশ ও ধর্মচর্চার স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রেখে বাংলাদেশের নতুন আত্মপরিচয় এবং নৈতিক শক্তিকে দৃঢ় করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
৫. জুলাই বিপ্লবের একটি চার্টার জাতির জন্য অপরিহার্য। একই সঙ্গে এর শহীদদের স্মৃতিকে চিরজাগরুক রাখার পদক্ষেপ, তাদের পরিবার এবং হতাহতদের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা নিশ্চিত করাকে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হিসেবেই আমরা সাব্যস্ত করি।
৬. বিচার বিভাগের আমূল সংস্কার অপরিহার্য। বিচার বিভাগের নিজস্ব সচিবালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে প্রকৃত অর্থেই পৃথক করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদী বিচারকদের অপসারণ করতে হবে।
৭. যেহেতু সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সবল পরিচয়কে নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, সে জন্য ভারতসহ কোন রাষ্ট্রের মোসাহেবি বর্জন করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব নির্ণীত হবে সম-সার্বভৌমত্ব, আত্মমর্যাদার, পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ, পারস্পারিক স্বার্থ্যের ভিত্তিতে। বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব, প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহ এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলোর সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে হবে।
গাজা ও ইউক্রেনের গণহত্যার তীব্র নিন্দাপূর্বক যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। বিশ্বের যেকোনো স্থানে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। বাংলাদেশের পানি প্রবাহের ন্যায্য হিস্যা আদায়ে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে।
৮. বিশ্বসমাজের অংশ হিসেবে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের বিভিন্ন বৈশ্বিক ঘোষণা ও সনদ বা আন্তর্জাতিক বিধিবিধান, নীতি ও সম্মতি অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করা হবে আমাদের অবশ্য কর্তব্য। বিশেষ করে মানবাধিকার বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা আবশ্যক, যার অভাবে বাংলাদেশকে পতিত ফ্যাসিবাদে বহু মূল্য দিতে হয়েছে।
৯. সাংবিধানিক ও আইনি সংস্কারের পাশাপাশি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীয়করণ, বিচার বিভাগ, প্রশসন, স্থানীয় সরকার, শিক্ষাব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রতিরক্ষা বিভাগ, জাতীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে নতুন বন্দোবস্তের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। ফ্যাসিবাদী ও তাদের দোসর এবং দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
১০. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং মুক্ত সাংবাদিকতার বাধাসমূহ বিলোপের পাশাপাশি ওইসব স্বাধীনতার চর্চার উপযুক্ত জনসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের পাশাপাশি ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
১১. আর্থসামাজিক জীবন, বিশেষ করে জীবন ও জীবিকার সমস্যা মোচন, টেকসই উন্নয়নে দারিদ্র্য দ্রুত কমিয়ে আনা, প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস ও জলবায়ু বিপর্যয় অবিলম্বে বন্ধ, শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য, অরাজকতা, অনৈতিকতার অবসান ঘটাতে হবে। সৎ, দেশপ্রেমিক ও দক্ষ নাগরিক তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ও নৈতিকতার ভিত্তিতে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।
নৈতিকতার পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে আমরা কোরআনের হাফেজ, ইমাম, পাদ্রী, পুরোহিতদের জন্য বিশেষ ভাতার প্রবর্তন চাই। শিক্ষিত বেকারদের ভাতা প্রদান এখন সময়ের দাবি।
১২. বাংলাদেশের কর্মচারীদের অধিকাংশ শ্রমিক। তাদের ন্যায্য মজুরি ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সব শ্রমিক-কর্মচারীর সর্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। প্রবাসী শ্রমিকদের কর্ম-নিরাপত্তা ও মজুরি নিয়ে সরকারের বিশেষ পদক্ষেপ জরুরি।
১৩. নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি নারী-পুরুষের মধ্যে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থানের ভেদ ও অসম্পর্ক মোচন জরুরি।
১৪. বাংলাদেশের মানুষের মূল সমস্যা শুধু রাতের নির্বিঘ্ন ঘুম নয়, প্রতিদিন জীবন যাপনে অসহনীয় সমস্যার মুখোমুখি হয় তারা। রুজি-রোজগারের সংকট, অসহনীয় মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, সমস্যা সঙ্কুল পথ চলা, সন্তানের ভবিষ্যৎ, দুর্ঘটনার হুমকি, দৈহিক ও সামাজিক নিরাপত্তা সবকিছুর সংকট তার নিত্যসাথী। সড়ক দুর্ঘটনায় এ দেশের সবচেয়ে বড় মারণাঘাতী ঘটনা হলেও রাজনৈতিক দলগুলো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না ।
সড়ক ও মহাসড়ক নিরাপদ করতে এবং দুর্বৃত্তায়নমুক্ত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এসব থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে আমাদের মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। অসহায় যাত্রীর সমস্যা দূর করার পাশাপাশি জবাবদিহিমূলক পরিবহন ব্যবস্থা, নিরাপদ সড়কের ব্যবস্থা এবং পরিবহন খাতকে দুর্বৃত্তায়ন থেকে মুক্ত করা আমাদের জরুরি লক্ষ্য।
জনগণের মতামত ও অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি বেকার এবং দরিদ্রদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা, প্রতিটি গ্রামের জন্য থোক বরাদ্দ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে পানি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদির নিশ্চয়তা বিধানের প্রতি আমরা একনিষ্ঠ মনোযোগ দিতে চাই। যেকোনো সিন্ডিকেট, ব্যবসায়ে মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দুর্বৃত্তপনা রোধ করতে হবে। এ বিশাল যজ্ঞের নেতৃত্বে আমরা চাই তরুণ ও কিশোর-কিশোরীদের। জাতির অগ্রগতির এটাই সময়।
১৫. বিদেশি বিনিয়োগ ও দেশীয় পুঁজির বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা, উন্নয়নের নামে দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা, ব্যাংক ঋণকে মধ্যম মেয়াদি ও ক্ষুদ্রশিল্পে সহজীকরণ, প্রবাসে দক্ষ জনশক্তি প্রেরণের ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করা, আন্তর্জাতিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের অবকাঠামোর যত উন্নয়ন হয়েছে, সেসবের গুণগত রক্ষণাবেক্ষণে আমরা নিবিষ্ট মনোযোগ দিতে চাই।
১৬. আমরা বাংলাদেশের ব্যাপক শিল্পায়ন, পণ্য ও সেবায় বহুমুখী করণে বিশ্বাসী, যাতে উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি, আত্মনির্ভরতার পথ ধরে মুক্ত অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, গ্লোবালাইজেশন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি আসে এবং ভারসাম্য পূর্ণ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা পায়। বৈশ্বিক- ভূরাজনৈতিক অশুভ চাপ ও হস্তক্ষেপ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের প্রতিরক্ষা শিল্প ও জাতীয় প্রতিরক্ষামূলক প্রতিরোধ তৈরি ও বহুমুখীকরণ জরুরি মনে করি। জাতীয় নিরাপত্তা সংরক্ষণ ও জনশক্তির কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তরুণ-তরুণীদের প্রাথমিক সামরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন।
রাষ্ট্রনীতি, শিক্ষানীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতিনীতি ও চর্চায় আমরা আত্মনির্ভরতা, স্বকীয়তা ও কৌশলগত অগ্রসরমুখীতায় বিশ্বাসী। আমরা চাই একটি নিয়মতান্ত্রিক বহুকেন্দ্রিক, ন্যায়ভিত্তিক, ভয়হীন বিশ্বব্যবস্থা।
১৮. আন্তজাতিক প্রেক্ষাপটে আমরা ইতিবাচক ও বাংলাদেশের স্বার্থ উন্নয়নকারী সব গ্রুপ, ফ্রেমওয়ার্ক, সংস্থাতে স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ করব কিন্তু নেতিবাচক বিভেদ সৃষ্টিকারী বা কোনো জিরোসাম গেমমূলক ও অ্যালায়েন্সে যোগ দিতে চাই না।
আমরা স্বপ্নদর্শী। শুধু স্বপ্ন নয়, নতুন বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই অভূতপূর্ব কর্মযজ্ঞে। এ জন্য তরুণেরা প্রস্তুত। শুধু চাই ইমানি অঙ্গীকার ও পরিকল্পনা। অন্যান্য দলের তুলনায় আমাদের পার্থক্য হবে নিখাদ দেশপ্রেম, চিন্তা-চেতনায় স্বচ্ছতা ও সাহসিকতা, দলের ভেতরে-বাইরে গণতন্ত্রের অব্যাহত চর্চা, উচ্চারণে-কর্মে-জনসেবায় অভিন্ন লক্ষ্যাভিসারী হওয়া।
জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ও নীতিনির্ধারণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। প্রবীণদের পরামর্শে, প্রবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে তরুণদের সঙ্গে নিয়ে আনে-বিজ্ঞানে ও উন্নয়নে আমরা জাতিকে তুলে দিতে চাই প্রত্যাশার নব সোপানে। সত্যিকার অর্থে দেখতে চাই ইনসাফ সমৃদ্ধ দৃঢ় সার্বভৌমত্বে বলীয়ান নতুন শক্তি হিসেবে এক নিরাপদ বাংলাদেশকে।