ঢাকা রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫

'কোটা আন্দোলনকে সংঘাতে ঠেলে দিয়ে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে'

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৪, ১২:২৫ এএম
ছবি, রুপালী বাংলাদেশ

লেখক কলামিস্ট শাহরিয়ার কবির বলেন,সরকারি চাকুরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের জন্য ছাত্রছাত্রীদের চলমান আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে আরম্ভ হলেও, সুযোগ বুঝে বিএনপি-জামায়াত চক্র বাইরে থেকে সমর্থনের কথা বলে তরুণদের একটি ন্যায়সঙ্গত ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণতি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে অনুপ্রবেশ করেছে। একইসাথে, কোটা আন্দোলনকে সংঘাতে ঠেলে দিয়ে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।

বুধবার (১৭ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপি চক্রের অনুপ্রবেশ, রাজাকারদের পক্ষে শ্লোগান এবং উদ্ভূত সংঘাতময় পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র প্রতিনিধিদের এক জরুরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘নির্মূল কমিটি’র সভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি লেখক, কলামিস্ট শাহরিয়ার কবির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীর।

সভায় বক্তরা, কোটা সংস্কারের ন্যায্যতা, সংক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের আবেগ ও অনুভূতিকে পুঁজি করে তাদের আন্দোলনে স্বাধীনতারিবোধী মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির অনুপ্রবেশ, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটুক্তি করে ’৭১-এ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী গণহত্যাকারী, নারীধর্ষণকারী রাজাকারদের মহিমান্বিত করে স্লোগান দেয়া, ১৬ জুলাই ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু এবং শত শত আহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গৃহীত প্রস্তাবের বলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত-বিএনপির ছাত্রকর্মীরা দলনিরপেক্ষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগে বিভিন্ন সময়ে সড়ক অবরোধ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিরোধ ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। 

গত ১৫ জুলাই গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলোচনাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রাজাকারদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় জামায়াত-বিএনপির ছাত্রকর্মীরা মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত একটি ঐতিহাসিক স্লোগানকে বিকৃত করে ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’স্লোগান দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেয় বলেও জানান শাহরিয়ার। 

এদিকে, ১৬ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয় এবং উভয় পক্ষের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে, তিনি বলেন এ দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন। আমরা এধরনের সংঘাতে অত্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা কখনও ছাত্রদের হাতে অস্ত্র দেখতে চাই না। 

তিনি বলেন, গত এক যুগেরও অধিক সময় আমরা লক্ষ্য করছি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্র সংঘাত ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিদেশী প্রভুদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন সময়ে ছাত্র ও জনতার বিভিন্ন ন্যয়সঙ্গত ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে তারা অনুপ্রবেশ করে সেগুলোকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে ’৭১-এ পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের পাশাপাশি বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানাতে চাইছে।