শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ১২:০৫ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর পক্ষে জামায়াত

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৫, ১২:০৫ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানোর পক্ষে জামায়াত

ছবি: জামায়াতে ইসলামীর লোগো

প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমাতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের সুপারিশে একমত জামায়াতে ইসলামী। প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তের পরিবর্তে এনসিসির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগের সুপারিশের পক্ষেও মত দিয়েছে দলটি। তবে তারা প্রস্তাবিত এনসিসিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতিকে চান না। দলটি চায় কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; তবে সরকারের মেয়াদ ৫ বছরই থাকুক।

ঐকমত্য কমিশনে জামায়াত এসব মতামত দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো এবং নির্বাচন পদ্ধতিসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাদের অবস্থান বিএনপির বিপরীত।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াত তার অবস্থান জানিয়েছে। অন্য দল কী চায়, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের ৭০, দুদক সংস্কার কমিশনের ২০, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২৬, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ২৩ এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ২৭ সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশন।

মোট ১৬৬ সুপারিশের ৭৭টিতে জামায়াত একমত। আংশিক একমত ৩৬ সুপারিশে। একমত নয় বলে জানিয়েছে ৫৩ সুপারিশে। সংবিধান সংস্কারে ৩১ সুপারিশে একমত, ১৬ সুপারিশে আংশিক একমত এবং ২৩ সুপারিশে একমত নয় বলে জানিয়েছে তারা।

সংস্কারের সুপারিশ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে–তা জানতে চেয়ে ছয়টি বিকল্প দিয়েছিল কমিশন। এগুলো হলো–অধ্যাদেশ, গণভোট, নির্বাচনের সময় গণভোট, গণপরিষদ, নির্বাচনের পর সংসদে সংস্কার এবং গণপরিষদ হিসেবে সংসদ নির্বাচন। বিএনপি গণপরিষদ, গণভোটের সুপারিশ নাকচ করেছে। জামায়াত এ বিষয়ে মতামত জানায়নি। 

তাহলে কীভাবে কী সংস্কারের সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে– জানতে চাইলে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আলোচনার মাধ্যমে এটা কমিশন ও সরকার ঠিক করুক।  

বিএনপি মতামত দিয়েছে, কোনো ব্যক্তি টানা দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। দুই দলই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে রাজি হলেও, বিএনপি চায় নিম্নকক্ষের নির্বাচন বিদ্যমান পদ্ধতিতেই হবে। উচ্চকক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে নয়, গঠিত হবে নিম্নকক্ষের প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে।

জামায়াত উভয় কক্ষে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন চায়। নিম্নকক্ষ যদি আনুপাতিক পদ্ধতিতে গঠিত হয়, তাহলে উচ্চকক্ষের কী প্রয়োজন– এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম পরওয়ার বলেন, পেশি শক্তিসহ নির্বাচনে অনিয়ম ঠেকাতে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনই শ্রেয়।

প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার মাধ্যমে নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন বলে যে সুপারিশ কমিশন করেছে বিএনপি তাতে একমত না হলেও, জামায়াত রাজি। বিএনপি এনসিসি গঠনের বিরোধী। তবে দুই দলই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সর্বশেষ প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে চেয়েছে।

সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে, কেউ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। জামায়াত এর সঙ্গে একমত। তবে সংসদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ ৪ বছর নয়, ৫ বছরই বহাল রাখার পক্ষে দলটি। কমিশন প্রস্তাব করেছিল, প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে সংসদ নেতা এবং দলীয়প্রধান হতে পারবেন না। জামায়াত এতে একমত হয়নি। দলটি মত দিয়েছে, একই ব্যক্তি সংসদ নেতা ও দলীয়প্রধান হতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী দলীয়প্রধান হতে পারবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তিনি সংসদ নেতা হতে পারবেন না।

কমিশন ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সুপারিশ করেছে, যাতে সংসদ সদস্যরা নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারেন। জামায়াত আংশিক একমত জানিয়ে ৭০ অনুচ্ছেদ শিথিলের পক্ষে মত দিয়েছে। দলটি চায়, দলীয় এমপি অর্থবিল এবং আস্থা প্রস্তাব বাদে অন্যান্য বিষয়ে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন।

বিদ্যমান সংবিধানে ৪৮(৩), ৫৬(২) অনুচ্ছেদ এবং রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী সর্বময় ক্ষমতা ভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধান বিচারপতি নিয়োগ বাদে বাকি সব কাজ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী সম্পাদন করতে রাষ্ট্রপতি বাধ্য। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে কমিশন এনসিসি গঠনের প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদের দুই কক্ষের স্পিকার, বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত দুই ডেপুটি স্পিকার, প্রধান বিচারপতি এবং সরকারি ও প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্য দলগুলো থেকে একজন নির্বাচিত সদস্যকে নিয়ে গঠিত হবে।

কমিশন সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, স্থানীয় সরকার কমিশন, কর্মকমিশন, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিয়োগ হবে এনসিসির মাধ্যমে। ৯ সদস্যের এনসিসির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সম্মতিতে নিয়োগ হবে। জামায়াত এতে একমত হলেও, বলেছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি এনসিসির সদস্য হতে পারবেন না।

দলের এ অবস্থান সম্পর্কে গোলাম পরওয়ার বলেন, রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক পছন্দে নিয়োগ হয়। তাই তাকে এনসিসিতে না রাখাই উত্তম। বিচারাঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধান বিচারপতিকেও এনসিসিতে রাখা ঠিক হবে না।

এনসিসি গঠনের বিরোধী বিএনপি বলছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর হাতে না থাকলে সরকারপ্রধানের ক্ষমতাই থাকবে না। জামায়াত এর বিরুদ্ধে। দলটির মত, প্রধানমন্ত্রী শুধু নির্বাহী বিভাগে ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে, কেউ দুইবার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে পারবেন না। বিএনপি এতে একমত না হলেও, জামায়াত রাজি।

আরবি/এসবি

Link copied!