ঢাকা শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনার আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের আহ্বান বিএনপির

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০১:২২ এএম

শেখ হাসিনার আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের আহ্বান বিএনপির

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার  দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থায়ী কমিটির সভায় ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করার আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি মনে করে, প্রহসনের মাধ্যমে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ পতিত সরকারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রেখে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ ভেঙে দিয়ে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হয়।

 

‘পাবর্ত্য চট্টগ্রাম নিয়ে জাতীয় কনভেনশন জরুরী’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থায়ী কমিটি সভা মনে করে পার্বত্য জেলা গুলোতে শান্তি স্থাপনের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের একটি জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা জরুরী। এই লক্ষে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুদূর প্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই ধরনের সংঘাতের সৃষ্টি করা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ রূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই ঘটনা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্তের প্রতি হুমকি স্বরূপ্। এসব ঘটনাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ নেই।

 

‘মাজারে হামলা ও মবলিংচিং ঘটনা প্রসঙ্গে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় মনে করে, পতিত ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা, ভাংচুর ও ‘মবলিংচিং’ এর মত ঘটনা ঘটিয়ে  শিল্পাঞ্চল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগে সকল গণমাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল গুলোর প্রচার প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন। সভায় এই সব সমাজ বিরোধী এবং ঐক্য বিনাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরী।

 

‘ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সম্প্রতি ‘বাংলাদেশী অনু প্রবেশকারীদের উল্টো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে হুমকি দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। দুই দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অন্তরায় হিসাবে কাজ করার বিষয় ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতৃবৃন্দকে এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।


একই সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই ধরনের মন্তব্যে কঠোর সমালোচনা এবং বিরত থাকার আহ্বান জানানোয় বিএনপির স্থায়ী কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করেছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বিদেশে থাকায় নজরুল ইসলাম আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং ঢাকার বাইরে থাকা নজরুল ইসলাম খান অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!