ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

ফ্যাসিবাদ আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে: ফখরুল

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম

ফ্যাসিবাদ আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে: ফখরুল

ছবি, সংগৃহীত

ঢাকা: নেতিবাচক কথা-বার্তায় কারণেই ফ্যাসিবাদ আবার মাথাচড়া দেয়ার চেষ্টা করছে, বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৯ নভেম্বর) এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন যে, বিভিন্ন রকম নেগেটিভ কথাবার্তার কারণে ফ্যাসিবাদ কিন্তু মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন জায়গায়…. এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদেরে কিছু কিছু মিডিয়া তাকে প্রোমোট করছে… যেটা আমি মনে করি কখনই জনগনের জন্য শুভ বয়ে আনবে না।”

‘‘আমি অনুরোধ করব, যারা এই ধরনের প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা দয়া করে এটাকে বন্ধ করেন। আমি এটাও অনুরোধ করব তরুনদেরকে যুবকদের যে আপনারা এতোবড় একটা অসাধ্য সাধন করেছেন এই প্রবণতা যেন বন্ধ হয় তার জন্য আপনারা কাজ নেবেন।’’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্ট-২০২৪’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধআন অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের সামনে যে সংকট আছে সেই সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ ধর্য্য ধরে আমাদের যে কাজগুলো সেই কাজ সংস্কার এবং নির্বাচন এগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারি সেই কাজগুলো আমাদের করতে হবে।”

‘এরা অনেক কাজ করেছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তাদেরকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি… তারা কাজ করছেন। অনেকে বলেন যে… আমি অবাক হই যে, মিডিয়ার মধ্যে অনেকেই তারা কোনো সাফল্য দেখতে পান না।”

‘‘এই তিন মাস সময়ের মধ্যে এরা অনেক কাজ করেছে। অস্বীকার করা তো উপায় নেই। সংস্কার করার জন্য তারা কমিশন গঠন করেছে, আইন পরিবর্তন করেছে, আইনগুলো নিয়ে কাজ করছে। বেশ কিছু ফ্যাসিবাদের দোসর তাদেরকে আটক করেছে… বিচারের জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। এই বিষয়গুলো কিছু করছে। সব কিছু একসাথে সম্ভব নয়।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমি বিশেষ করে তরুনদের বলব, ওই অনুরোধটুকু করব যে, আপনাদের একটু ধর্য্য ধরতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে, যাদের নেতৃত্বে এই সরকার চলছে তাদের নেতৃত্বে একটা … যেখানে ছাত্ররাও এর মধ্যে আছে, তরুণরাও এর মধ্যে আছে  আমি বিশ্বাস করি তারা নিশ্চয়ই সেই জায়গাটাতে পৌঁছাতে পারবেন।”

‘‘একটা কথা আমাদেরকে জরুরীভাবে মনে রাখতে হবে যে, এবার যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে সেই সুযোগ যাতে কোনো মতেই হাতছাড়া না করি। এবার এই সুযোগ হারিয়ে গেলে আমাদের জাতি হিসেবে অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে… আমি এই কথাটা জোর দিয়ে বলতে চাই।”

ফখরুল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে সেই জঞ্জালগুলোকে সরিয়ে একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন অন্তবর্তীকালীন সরকার…যাতে করে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এই যুবকদের চাওয়া, তরুণদের চাওয়া যে নতুন বাংলাদেশ সেটা তৈরি করতে পারি। আমরা নির্বাচনের কথা বার বার বলছি… অনেকে প্রশ্ন করেছেন আপনি এতো নির্বাচনের কথা বলেন কেনো?”

‘‘কারণ আমি মৌলিকভাবে গণতন্ত্র বিশ্বাসী একজন মানুষ। আমি বিশ্বাস করি যে, জনগনের অংশগ্রহন ছাড়া কোনো সংস্কার কখনোই সফল হতে পারে না। জনগনের অ্যাকটিভ পার্টিসিপেশন সম্ভভ একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মাধ্যমে। ও্টা যদি কার্য্কর করা যায় তাহলে পুরো বিষয়গুলো গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। সমস্যাটা ওই জায়গায় যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র্র চর্চা না হওয়ার কারণে এখানে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি… প্রত্যেকের মধ্যে কেমন যেন একটা স্বৈরতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা একদম বাসা বেঁধে গেছে।”

ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম মুনিরের অনুষ্ঠানে গণসংহতি আন্দোলনের জেনায়েদ সাকি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটি মুভমেন্টের ববি হাজ্জাজ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জামিল আহমেদ, জহিরুল আলম, ইয়ুথ ফোরামের মেহেরুন্নেসা হক, সোহান হাফিজ, তানজিনা নওসিন, মনিরুজ্জামান মুনির, মেহেদি হাসান মিঠু, শফিউল কবির, জেরিন আনজুম মৌ, আয়ান আহমেদ বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইয়ুথ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা জিএম রাব্বানী ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন যার নেতৃত্বে দুই দশক আগে এই সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।

অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে ছাত্র্র-জনতার বিপ্লবে নিহত হাফেজ মোহাম্মদ ইমরান এবং আহত হাফেজ তোফায়েল আহমেদের পরিবারকে নাজমুল হক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অর্থ সহযোগিতা এবং যুব সংগঠনগুলোকে ক্র্যাস্ট প্রদান করা হয়।

আরবি/এস

Link copied!