বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা আল্লাহর শক্তিতে বলীয়ান একটি জাতি গঠন করতে চাই। সেই জাতি হবে সাহসী ও বীরের জাতি, যারা আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে মাথানত করবে না। এটা করিনি বলেই বিগত সরকার ১৫ বছর ধরে আলেম-ওলামাদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে। জামায়াতের দুজন আমিরসহ ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নিয়েছে।”
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির আরও বলেন, “যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, বিগত সরকার তাদের গুম করেছে, অসংখ্য ভাইকে খুন করেছে, চাকরি কেড়ে নিয়েছে, ব্যবসা ছিনিয়ে নিয়েছে এবং কিছু মানুষকে দেশেও থাকতে দেয়নি। মানব কল্যাণে কাজ করার কারণে অনেকেই জিন্দা শহীদ হয়ে আছে, তাদের হাত-পা টুকরা-টুকরা হয়ে গেছে, কিন্তু তারা কষ্টের জীবন নিয়ে বেঁচে আছেন।”
তিনি বলেন, “যারা রক্ত দিয়ে আজকের এই পরিবেশ তৈরি করেছেন, আমরা তাদের প্রতি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এই ঋণের দায় আমাদের আজীবন শোধ করতে হবে। সঠিক হিসাব কেউ দিতে পারবে না, কতজন আদম সন্তানকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে।”
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আন্দোলনের শেষ সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ রেখে অন্ধকারে বহু লাশ গুম করা হয়েছে, স্তূপে স্তূপে লাশ ছুড়ে মারা হয়েছে, তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে লাশগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের ঋণ কোনো দিন শোধ করতে পারব না।”
তিনি একমাত্র কোরআনের শাসনকে বাংলাদেশে ইনসাফ কায়েম করার উপায় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “চাঁদাবাজি ও দখলদারির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবে, যতক্ষণ না ইনসাফ কায়েম হয়। এই ইনসাফ দিতে পারে একমাত্র আল কোরআন, এবং এই কোরআনের শাসন দিয়েই আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই।”
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমরা বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, ন্যায়-ইনসাফের মাধ্যমে বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, কারণ জীবন খুব ছোট এবং কাজ অনেক বড়। বিশ্রামের কোনো সময় নেই।”
তিনি সারা দেশে চাঁদাবাজি ও দখলদারির ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যারা এসব করছেন, বিনয়ের সঙ্গে বলি, এগুলো বন্ধ করেন।”
রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলীর সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, মোবারক হোসাইন, রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দিন মণ্ডল।
আপনার মতামত লিখুন :