দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে বিএনপি। জনগণের সমর্থন অর্জন এবং সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে এই কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি।
গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, কর্মসূচিটি দুটি ধাপে পরিচালিত হবে। প্রথম ধাপে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে সমাবেশ এবং জনসম্পৃক্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রথম কর্মসূচি শুরু হতে পারে। তারা জানান, রমজানের আগেই এই কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভ্যাট ও কর বৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। দলটির নেতা-কর্মীরা মনে করেন, এই সংকট নিয়ে কার্যকর কর্মসূচি দিলে জনগণের কাছ থেকে আরো সমর্থন পাওয়া যাবে।
বিএনপি দাবি করছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত। তাদের মতে, ন্যূনতম সংস্কারের মাধ্যমে এই সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। তবে সরকার ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বললেও বিএনপি এত দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রস্তুত নয়।
বিএনপি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সংশোধন করতে একটি খসড়া প্রস্তুত করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির খসড়া ঘোষণাপত্রকে পুরোপুরি অগ্রাহ্য না করে, বাস্তবতার নিরিখে তা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হবে।
দলটির নীতিনির্ধারকরা বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিতে প্রণীত। তাই সংবিধান বাতিল নয়, বরং প্রয়োজনে সংশোধন করা যেতে পারে। তারা মনে করেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গত ১৭ বছরে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সংগ্রামকেও ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
দলটি শিগগিরই বিভাগীয় সাংগঠনিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে এবং ঘোষণাপত্র সংশোধনের বিষয়টি শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত করবে।
আপনার মতামত লিখুন :