ঢাকা সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ছাত্রনেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি: ৩০০ আসনের কে কোথায়?

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫, ১২:২৯ পিএম

ছাত্রনেতাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি: ৩০০ আসনের কে কোথায়?

ছবি: সংগৃহীত

গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন ঘটানোর পর নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তরুণ ও শিক্ষার্থী সমাজ। চলতি মাসের মধ্যভাগে দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।

দল গঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রথমে লক্ষ্য ১০০টি আসনে তরুণ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দলের নেতারা স্থানীয় এলাকায় নিয়মিত সফর করছেন এবং সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তরুণ ও যুবসমাজকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন।

গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই নতুন দল গঠনের কাজ শুরু করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। নাগরিক কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, দলের নাম, গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্ব নিয়ে এখনো শেষ মুহূর্তের আলোচনা চলছে। প্রাথমিকভাবে দলের শতাধিক নাম প্রস্তাবিত হলেও, তা কমিয়ে আনা হয়েছে। গঠনতন্ত্র তৈরির কাজও অনেকটা এগিয়েছে। যদিও নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা চলছে, তবুও নাহিদ ইসলামকে দলের মূল নেতৃত্বে দেখা যেতে পারে।

নাগরিক কমিটির একাধিক নির্বাহী সদস্য জানান, দলের নাম, গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্ব চূড়ান্ত করে চলতি মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে দলের আত্মপ্রকাশ হতে পারে। পরিকল্পনা রয়েছে, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’-এ শিক্ষার্থীদের নতুন দল আত্মপ্রকাশের। কারণ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ১৪ ফেব্রুয়ারি এই দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ওইদিন শুক্রবার হওয়ায়, দেশব্যাপী লংমার্চের মাধ্যমে দলটির আত্মপ্রকাশ হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

নতুন দলের শক্তি বাড়াতে আসনভিত্তিক প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। নাগরিক কমিটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সদস্যসচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি নিয়মিত ওই এলাকায় যাচ্ছেন এবং স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন।

অন্যদিকে, নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও কানাঘুষা চলছে। এছাড়া আব্দুল হান্নান মাসুদও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে নোয়াখালী-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

সেই সঙ্গে, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যরা চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ঝালকাঠি, নোয়াখালী ও ঢাকা সহ বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সংগঠক মেসবাহ কামাল মুন্না খুলনায়, প্রীতম দাশ হবিগঞ্জে, আবু সাঈদ লিওন নীলফামারীতে এবং সাদিয়া ফারজানা দীনা রংপুরে তরুণ ও যুবসমাজকে সংগঠিত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সারোয়ার তুষার গণমাধ্যমকে জানান, “আমরা আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে চাই। এটি নিয়ে প্রস্তুতি চলছে এবং আমরা সে অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি।”

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা জাতীয় পর্যায়ে ১০০ তরুণ নেতা নির্বাচনে আনতে চাই। এর মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে আরও নেতৃত্ব উঠে আসবে। এ কাজও চলছে।”

নাহিদ ইসলাম বা সরকারের কোনো উপদেষ্টা নতুন দলে যোগদান প্রসঙ্গে সারোয়ার তুষার বলেন, “দল ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করবে, এটা নিশ্চিত। যদি সরকার থেকে কেউ যোগ দিতে চান, তবে তাঁদের সরকারের পদ ছাড়তে হবে। বর্তমানে কেউ নিশ্চিতভাবে আসবে, এমন তথ্য নেই।”

আরবি/এফআই

Link copied!