সংস্কারে ঐকমত্য তৈরি করে অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন হবে এমনটাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তিন ঘন্টার অধিক সময় বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আজকের প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম সভায় মিলিত হয়েছিলেন। এই সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন যে, সংস্কার কমিশনগুলো যে রিপোর্টগুলো প্রদান করেছে তার প্রত্যেকটার ওপরে আলাপ-আলোচনা হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে কথা বলবে কমিশন সঙ্গে এবং একটা ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। সেটাই আজকের বৈঠকের মূল কথা।
আমরা(বিএনপি) আশা করি যে, খুব দ্রুত এই সংস্কারের যে ন্যুনতম ঐকমত্য তৈরি হবে এবং সেটা ওপরে ভিত্তি করে অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। জাতীয় নির্বাচন না স্থানীয় সরকার নির্বাচন এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা পরিস্কার বলেছি যে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার আগে হতে হবে।তারপরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে শুধু মাত্র প্র্রাথমিক আলোচনা হয়েছে… বলতে পারেন আলোচনাটা ছিলো পরিচিতিমূলক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কথা বলেছেন সেটা ছিলো তাদের নিজস্ব মতামত। একেবারে পজেটিভ কনস্ট্রাকটিভ কোনো আলোচনা আজকে হয়নি, কারণ সুযোগও ছিলো না।
আজকে পরিচিতি একটা ব্যাপার ছিলো আরকি। বিকাল তিনটায় বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনের ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়, চলে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত। এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতসহ ২৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দেন। প্রতিনিধি দলের অন্যরা হলেন, জমির উদ্দিন সরকার, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া বৈঠকে মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর), মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী, অলি আহমেদের নেতৃত্বে এলডিপি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে নাগরিক ঐক্য, এসএম আলতাফ হোসেন ও সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে গণফোরাম, জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে গণসংহতি আন্দোলন, সাইফুল হকের নেতৃত্বে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, মাওলনা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন, মাওলানা আবদুল বাছিদ আজাদ ও আহমেদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে খেলাফতে মজলিশ, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ, খন্দকার লুফর রহমানের নেতৃত্বে জাগপা, ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে এনপিপি, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজেপি, নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
এছাড়া এই বৈঠকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের জাতীয় নাগরিক কমিটির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন। এরা হলেন, নাসীরদ্দীন পাটোয়ারী, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, সারজিস আলম। গত ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে সাত সদস্যের ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করা হয়। এটি কমিশনের প্রথম বৈঠক ছিল।
আপনার মতামত লিখুন :