জনগণ যদি দেশের দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামীকে দেয়, জামায়াতে ইসলামী শাসক হবে না, সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। সেখানে নেতৃত্ব দিবে আমাদের তরুণ এবং যুব সমাজ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলন থেকে গণ-অভ্যুত্থান: অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, চকবাজারে ১৯৪৮ সালে তমরুদ্দিন মজলিসসহ ভাষার অধিকারের দাবিতে যখন আন্দোলনের সূচনা হলো তখন লিফলেট বিলি করতে গিয়ে অধ্যাপক গোলাম আযম গ্রেফতার হয়েছিলো। আজকের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসগুলো নিয়ে কত আর্টিকেল, কত বই, কত কী; কিন্তু এগুলোতো বলাই হয়না। আর ডাকসুর জিএস এর তালিকা থেকে তো গোলাম আযমের নামটাই মুছে ফেলা হয়েছিলো। এখন বাংলাদেশের কোন বুদ্ধিজীবী, ভাষাসৈনিক, অনেকে চলে গেছেন; কিন্তু এই সত্যটা কেন বলেন না? তারা হচ্ছে এরাই যারা সত্যকে এড়িয়ে চলতে যায়, সত্যকে অস্বীকার করতে চায়। আর নিজেরা কোন কাজ না করে মুসলিম জাতিসত্তা, ইসলামি আদর্শ-ঐতিহ্যের ধারক বাহক যারা তাদের যেকোন কৃতিত্ব হাইজ্যাক করে কমিউনিস্ট বামপন্থী নাস্তিকদের ঘাড়ে দিয়ে দিতে চায়। এই অপরিনামদর্শী যাত্রা থেকে আমাদের সভ্যতা, আমাদের বাংলাদেশ, আমাদের প্রজন্মকে রক্ষা করা আমাদের জুলাই অভ্যূত্থানের নতুন উত্তরাধিকারদের অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশের দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। এই সমস্ত রাম বামদের হাত থেকে ইতিহাস বিকৃতিকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংগ্রামী আমির ড. শফিকুর রহমান, যিনি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সারথি। সারাদেশের যেখানে তিনি যাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ তাকে দেখার জন্য, তার মুখের কথা শোনার জন্য সভাগুলোতে শ্রোতের মতো আসছে। দেশের জনগণকে আহ্ববান জানাবো সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম, ষড়যন্ত্রের উর্ধ্বে থেকে আসুন জামায়াতে ইসলামীর নতুন বাংলাদেশের ডাকে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের বিবেকের কী কোন দংশন নেই? বিপ্লব হয়ে পারলো না ছয়মাস হয়েছে এরমধ্যেই কে এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড সেই কৃতিত্ব হাইজ্যাক করা শুরু হয়েছে। অনেক বড় দলের নেতারা বলেন, আমরা এই আন্দোলনে ছিলাম না। কিন্তু তার ছাত্ররা বলে আমরাই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। কি বলবেন আপনি? আমি বলব, এ আন্দোলনের সকল শহীদ ও গাজীরাই এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড। এটা ছিনতাই করে লাভটা কি ? শিবির কি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কি করেনি এটাতো বক্তৃতা করে বলার দরকার নাই। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনে রাতদিন যারা মৃত্যু ভয়হীন চেতনা নিয়ে যারা রাজপথে এবং হলে হলে লড়াই, সংগ্রাম করেছে, গুলির মুখে জীবন দিয়েছে। ইতিহাস হয়তো মিথ্যা লিখতে পারবেন, কিন্তু বেঁচে থাকা ওই মানুষগুলোর চিন্তা এবং স্মৃতিকে পরিবর্তন করতে পারবেন না। ওইটাই হচ্ছে আসল সত্য।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তৃতা করেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমীর হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।