নতুন দল: শিবির ও বামদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫, ১১:৪৪ এএম

নতুন দল: শিবির ও বামদের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আজ শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। ছাত্রদের নতুন দলে মূলত তরুণ-যুবকরা অংশ নিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার একটা অংশই যুক্ত হচ্ছেন নতুন দলে। ছাত্রশিবির, বাম কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক ধারা থেকে আসা ব্যক্তিরা যুক্ত হয়েছেন এই দলে। তবে ভিন্ন ভিন্ন আদর্শের লোকজন এক দলে আসার পর সেটা নতুন দ্বন্দ্বের কারণ তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

রাজনীতি বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, দল গঠনের পর যখন মাঠের রাজনীতি শুরু হবে তখন এই দ্বন্দ্ব নতুন চেহারায় হাজির হতে পারে।

এখানে যারা বিভিন্ন দলের ছাত্রসংগঠন করে আসা, তারা তাদের আগের দলগত আদর্শ বা দলীয় কর্তৃত্ব নতুন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করতে পারেন। এ ছাড়া দলটি যখন আস্তে আস্তে বড় হবে বা কর্মসূচি দেবে তখন কিন্তু অন্য দলগুলো থেকে তাদের ভাবাদর্শিক লোকদের মাধ্যমে নতুন দলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা থাকলেও থাকতে পারে।

এই আশঙ্কা কখনই উড়িয়ে দেয়া যাবে না। ফলে এটা তাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে আসতে পারে বলে সরে করছেন এই রাজনীতি বিশ্লেষক।

এদিকে, বিভিন্ন দল কিংবা মতের সম্মিলনকে সমস্যা নয়, বরং সুযোগ হিসেবেই দেখছেন নাগরিক কমিটির অনেকেই।

সারজিস আলম বলেন, বিভিন্ন দল-মতের লোক যুক্ত থাকায় এটা বরং দলকেই সমৃদ্ধ করবে। আমাদের আলোচনায় ডানপন্থী যেমন, তেমনি বামপন্থী বা অন্যান্য ধারার চিন্তাভাবনাগুলো আসে। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে এরকম বহুচিন্তা নেই। তারা একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সেদিক থেকে দেখলে আমাদের এখানে ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা আরও সমৃদ্ধ করে। সেখান থেকে যখন আমরা সিদ্ধান্ত নেই তখন সবাই সেটা সমর্থন করে। সুতরাং এটা কোনো সমস্যা না।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামন্তা শারমিনও মনে করেন অন্য দল থেকে কেউ আসলে তা সমস্যার কারণ হবে না। দেখেন যারা সাবেক কোনো দলের, তিনি তো আসলে সাবেক। ওই দল যদি তাদের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে পারতো তাহলে তো তিনি ওই দল ছেড়ে নতুন কোথাও আসতেন না। তাহলে আমরা ধরে নিচ্ছি যে, তারা পূর্বের অবস্থা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন একটা ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন।

নতুন দলের সংগঠকরা আশাবাদী জুলাইয়ের আন্দোলনের ভেতর দিয়ে যে ঐক্য এসেছে তা ধরে রাখার ব্যাপারে। এর জন্য একক নেতৃত্বের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে চান তারা।

কিন্তু আত্মপ্রকাশের আগেই আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্ব বাছাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন এবং দ্বন্দ্ব, সেই দ্বন্দ্বে আবার নাগরিক কমিটির অন্তত তিনজন নেতার নতুন দলে না থাকার ঘোষণা শুরুর আগেই এক ধরনের সংশয় তৈরি করেছে।

এর মধ্যেই সাবেক সমন্বয়কদের ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘিরে যে বিভক্তি আর হাতাহাতি, সেটার পরে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরেও যে বাড়তি কৌতূহল থাকবে অনেকের তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আরবি/এসআর

Link copied!