৭ মার্চ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৯তম কারাবন্দি দিবস। ২০০৭ সালের এই দিনে বাংলাদেশ বিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিতর্কিত সেনা সমর্থিত মঈনউদ্দিন ও ফখরুউদ্দিনের সরকার কর্তৃক বিনা ওয়ারেন্টে ঢাকার বাসভবন থেকে আটক করা হয় তারেক রহমানকে। যা ছিল সামগ্রিকভাবে এদেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির যে স্বপ্ন রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, সেই স্বপ্নকে সেদিন বন্দি করা।
পরবর্তীতে তার নামে ১৩ টি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করার পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ডিটেনশনও দেয়া হয়। তাকে ছয় দফায় ১৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনও করা হয়। তারপরও দেশ ও রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার চাপ প্রয়োগ করা হয়। দেশ ও দেশের জনগণের কথা ভেবে কুশীলবদের কোনো প্রস্তাবেই রাজী হননি তিনি। ২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারকের অনুমতি নিয়ে তারেক রহমান তার উপর করা অমানবিক নির্যাতনের বিবরণ তুলে ধরেন।
১/১১ সরকারের হাতে গ্রেফতারের পর তারেক রহমানের ওপর পুলিশ রিমান্ড ও কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে নিষ্ঠুর নির্যাতনের চালানো হয়। একটানা ৫৫৪ দিন বা ১৮ মাস কারাবাস করতে হয় তাকে। এরপর ১২টি মামলায় জামিন পেয়ে ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি পিজি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তি পান।
এরপর তার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি হতে থাকলে তার নিঃশর্ত মুক্তি লাভ ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে রাজপথে শুরু হয় আন্দোলন। এতে সরকারের টনক নড়ে এবং তারা তারেক রহমানকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিতে সম্মত হয়। কিন্তু আত্মপ্রত্যয়ী ও নির্ভীক তারেক রহমান নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনড় থাকেন এবং এক পর্যায়ে উচ্চ আদালত থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনে মুক্তি লাভ করেন। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পান।
এখন পর্যন্ত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৮৩ মামলা করার তথ্য মিলেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পর ৪টি মামলা বাদে একেক করে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। মামলাগুলোর মধ্যে অনেকগুলো খারিজ এবং কিছু মামলায় খালাস দেওয়া হয়। মামলা চলার মতো উপাদান না থাকায় কয়েকটি মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।