নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। ভোটের মাঠের রাজনীতিতে দলটির সামনে এখন নানামুখী চ্যালেঞ্জ। ইসির সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে হলে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, চলতি রমজানের মধ্যেই শর্ত পূরণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার টার্গেট রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির।
আত্মপ্রকাশের পর গত ৪ মার্চ জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রথম দলীয় কর্মসূচিতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করা। নিবন্ধন নিতে যে শর্তাবলী পূরণ করা প্রয়োজন, সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করে আমরা নিবন্ধনের দিকে এগোব। এ মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্রের কাজ শুরু করব।
দলের যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, নিবন্ধনের জন্য বিদ্যমান শর্তাবলি পূরণের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে করা ইসির যে কঠিন শর্তাবলি রয়েছে দল হিসেবে সেগুলো বাতিল চাই। আমরা নিবন্ধন প্রথা বাতিল চাই। এসব কালো আইন রাজনৈতিক দল গঠনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে।
জানা যায়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ৯০ (ক) ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে চাইলে তিনটি শর্তের যে কোনো একটি পূরণ করতে হবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির জন্য প্রথম দুটি শর্ত পূরণ সম্ভব নয়। শর্ত দুটি হলো- স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত কোনো সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে কমপক্ষে একটি আসনে বিজয়; সেসব নির্বাচনে দলটির প্রার্থীরা যেসব আসনে অংশ নিয়েছেন, সেসব আসনে মোট ভোটের ৫ শতাংশ অর্জন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিকে পূরণ করতে হবে তৃতীয় শর্তটি। এই শর্তের আওতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় অফিস থাকতে হবে। দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলায় জেলা অফিস থাকতে হবে। আর অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন এলাকার থানায় অফিস থাকতে হবে, যার প্রতিটিতে সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ২০০ জন ভোটার থাকবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য কিছু শর্ত শিথিলের প্রস্তাব করেছে। তাদের প্রস্তাব হলো- নিবন্ধন পেতে ১০ শতাংশ জেলা ও ৫ শতাংশ উপজেলা বা থানায় দলের অফিস এবং দলটির কমপক্ষে ৫ হাজার সদস্য থাকতে হবে।
দলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় নাগরিক পার্টির ২১৬ সদস্যবিশিষ্ট ও এক বছর মেয়াদি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি রয়েছে। কমিটিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি-জানাক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমানসংখ্যক নেতা রয়েছেন। সারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও থানায় জানাকের সাড়ে ৪ শতাধিক কমিটি রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি রয়েছে ১২০টির বেশি।
নিবন্ধনের শর্ত পূরণে তৃণমূল পর্যায়ে গঠিত হওয়া জানাকের এই কমিটিগুলোকে জাতীয় নাগরিক পার্টির দলীয় কমিটিতে রূপান্তর করা হবে। দলের জন্য রাজধানীতে কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোঁজা হচ্ছে। দলীয় প্রতীক, মূলনীতি, স্লোগানসহ গঠনতন্ত্র প্রণয়নে বিশেষ টিম গঠনের কথা জানিয়েছেন দলটির নেতারা। এ টিমের কাজ হবে খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা, যেটি কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন করবে।
আপনার মতামত লিখুন :