বাংলাদেশে এনসিপি ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে থাকতে পারে না: হাসনাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২৫, ০৯:০৬ পিএম

বাংলাদেশে এনসিপি ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে থাকতে পারে না: হাসনাত

ছবি: সংগৃহীত

এক খাপে দুই তলোয়ার যেভাবে থাকতে পারে না, ঠিক একইভাবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এনসিপি একসঙ্গে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘যে আওয়ামী লীগকে ছাত্র-নাগরিক রাস্তায় তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছে, আজ সেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লার শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজিত গণইফতার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনী ফায়দা নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য কূটনীতিতে যুক্ত হচ্ছেন। বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমরা আপনাদের সতর্ক করে বলতে চাই, এই ছাত্র নাগরিকের হারানোর কিছুই নেই। এক খাপে দুই তলোয়ার যেভাবে থাকতে পারে না, ঠিক একইভাবে ৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং এনসিপি একসঙ্গে থাকতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, ৫ আগস্ট গণভবন এবং বঙ্গভবনের যে পরিণতি হয়েছি তাদের পরিণতিও সে রকম হবে।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে তাতে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দিয়েছে প্রশাসন, নির্বাচন পরিচালনা করেছে প্রশাসন। একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন করার কোনো দক্ষতা আওয়ামী প্রশাসনের ছিল না। এই প্রশাসন সংস্কার না করা পর্যন্ত, আমরা যতক্ষণ না নিশ্চিত হই এই প্রশাসন একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন করতে পারে ততক্ষণ আশ্বস্ত হচ্ছি না। এ জন্য আমরা চাই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতার পরীক্ষা আগে হোক।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিন। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে যতগুলো উপজেলা রয়েছে সেগুলো ৫-৬টি ধাপে নির্বাচন দিয়ে এই প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করুন।’

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, “আওয়ামী জাহিলিয়াতের যুগে আন্দোলনের সময় আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলছিল, ‘আংকেল গেটটা একটু খোলেন’ ‘আংকেল গেটটা একটু খোলেন না’ আমরা ভুলে যাইনি। তখন গেটটা কেউ খোলেনি। আমরা এই আওয়ামী লীগকে এই কুমিল্লা থেকে উৎপাত করেছি। হাসিনার দুঃস্বপ্ন ছিল এই কুমিল্লা। এই কুমিল্লাতে আওয়ামী লীগকে কবরস্থ করতে পেরেছি।”

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘গত দেড় দশক এই কুমিল্লাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। যখন কুমিল্লা নিয়ে কোনো কথা হতো এই ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকার কুমিল্লাকে উপহাস করেছে। আগামীতে কুমিল্লাতে যতগুলো আসন রয়েছে এনসিপির নেতৃত্বে শক্ত অবস্থান আমরা গড়ে তুলব।’

চাঁদাবাজদের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বাজার দখল, পুকুর দখল এগুলো এলাকায় শুরু হয়ে গেছে, যারা দখলবাজ তারা তাদের হাত গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের পুলিশে তুলে দেন। দেবীদ্বার ও কুমিল্লার মাটিতে কোনো ধরনের চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না। কেউ যদি চাঁদা তুলতে আসে বলবেন চাঁদার টাকা হাসনাত আব্দুল্লাহকে দিয়ে আসছি। তার থেকে চাঁদার টাকা নিয়ে আসুন।’

আরবি/একে

Link copied!