ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

জিয়াউর রহমানের ঘোষণায়ই জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল : নীরব

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব বলেছেন, জিয়াউর রহমানের ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। 

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারী সরকার জিয়াউর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল, এমনকি পাঠ্যবই থেকেও তার নাম সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জিয়া বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ে বিরাজ করছেন, তাকে মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না।

বুধবার (২৬ মার্চ) তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নীরব বলেন, অনেকে দাবি করেন যে ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদি তাই হতো, তবে সেই মুহূর্ত থেকেই যুদ্ধ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। বরং ৭ মার্চের পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির আলোচনা চালিয়ে গিয়েছিলেন। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির ওপর হামলা চালানোর পর আওয়ামী লীগ পালিয়ে যায়। তখন সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ঠিক তখনই একটি ঘোষণা শোনা যায়—‍‍`আমি মেজর জিয়া, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি।‍‍` এতে মানুষ বুঝতে পারে যে তারা একা নয়, সশস্ত্র বাহিনী তাদের পাশে আছে। সে সময় জিয়াউর রহমান যুদ্ধের পরিকল্পনাও করতেন এবং যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতেন। তখন থেকেই তিনি বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠেন।

নীরব আরও বলেন, জিয়া পরিবারই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। দেশে যতবার সংকট এসেছে, ততবারই জিয়া পরিবার নেতৃত্ব দিয়েছে। ১৯৭৫ সালে যখন দেশ গভীর সংকটে পড়েছিল, তখন শহীদ জিয়া নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে রক্ষা করেছিলেন। পরবর্তীতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার তিনবারের শাসনামলে তিনি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপসহীন ছিলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। তারা হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছে। তবে জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে এবং দ্রুত একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে।

তিনি আরও বলেন, একাত্তরে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা নিয়ে এখন অনেকেই ‍‍`দ্বিতীয় স্বাধীনতার‍‍` কথা বলে বিভাজন সৃষ্টি করছে, যা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এটা কোনো দেশপ্রেমিকের কাম্য নয়।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন মহা-সংস্কারক। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, গার্মেন্টস শিল্প গড়ে তুলেছিলেন, মিশ্র অর্থনীতি চালু করেছিলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছিলেন এবং টেলিভিশনে ‍‍`নতুন কুঁড়ি‍‍`সহ যুগোপযোগী নানা সংস্কার করেছিলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, যা ভবিষ্যতে সংস্কারের পথ নির্দেশনা দেবে, বলেন নীরব।

বিএনপির যুবদলের সাবেক সভাপতি বলেন, বিএনপি কেবল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচন চায় না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে। আমরা একটি নির্বাচিত সংসদ ও সরকার চাই।

অনুষ্ঠানে তিনি বিএনপি, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।