ঢাকা সোমবার, ৩১ মার্চ, ২০২৫

সারজিসকে বিএনপি নেতার ‘ধমক’, ভিডিও ভাইরাল

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সাথে এক ব্যক্তির বাগবিতণ্ডার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ব্যক্তি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) তার নিজ জেলার আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে সারজিস ইউএনও অফিসে যান। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় বিএনপির ওই নেতার সাথে বাগবিতণ্ডা হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, সারজিসকে উদ্দেশ করে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আপনি কোন বিধানে এসেছেন?’ সারজিস তখন বিএনপির ওই নেতা মতিয়ার রহমানকে বলেন, ‘আপনি কোন অথরিটিতে জিজ্ঞাসা করেছেন?’ ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি নাগরিক হিসাবে জিজ্ঞাসা করছি।’ কথা বলার এক পর্যায়ে উভয়ে উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা শুরু হলে সারজিস ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে বারবার বলতে থাকেন, ‘টোন লো’ করেন। 

ভিডিওটির প্রথমেই সারজিসকে বলতে শোনা যায়, আমি তাদের কাছে জানতে চাই। আমার সুযোগ আছে, আটোয়ারী মানুষের জন্য কী করার, তাদের কোন জায়গায় প্রয়োজন।

তারা যদি সমস্যাগুলো বলে আমি যদি আটোয়ারি মানুষের জন্য কিছু বের করে আনতে পারি, সেটা আটোয়ারি মানুষের জন্য ভালো না খারাপ? তখন বিএনপির ওই নেতা বলেন, এটা ডিসি সাহেব বা ইউএনও সাহেবের মাধ্যমে হোক। তখন সারজিস আলম বলেন, এখন তো ইউএনও নেই, উনার দায়িত্ব যিনি পালন করছেন, তাকে আমি আহ্বান জানিয়েছি আমার সুযোগ আছে।

স্থানীয় বিএনপির নেতা মতিয়ার রহমান বলেন, তারা কি সেটা পারেন? এ সময় সারজিস আলম বলেন, আটোয়ারী না শুধু উত্তরঙ্গের মানুষের সব থেকে বড় সমস্যা কোথায় জানেন, সমস্যাটা হচ্ছে কেউ যখন উত্তরবঙ্গের জন্য কিছু ‍নিয়ে আসতে চায়, কাজ করতে চায়, আরেকজন না পারলে সহযোগিতা না করে পেছন থেকে টানে। এটা উত্তরবঙ্গের মানুষের সব চেয়ে বড় সমস্যা।

ওই ব্যক্তিকে উদ্দেশ করে সারজিস বলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে, আপনি আপনার জায়গা থেকে মনে করেন কি না আমি উপজেলার জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসতে পারব। ওই ব্যক্তি তখন বলেন, একমত। তখন সারজিস আবার বলেন, আমি কি কি দরকার জেনে নিয়ে আসি, হওয়া উচিত কি উচিত না।

তখন ওই ব্যক্তি বলেন, বাবা এনসিপি হওয়ার আগে সুযোগ ছিল, তখন আমরা অনেক সাপোর্ট করেছিলাম, স্যালুটও করেছিলাম। যেহেতু এখন রাজনৈতিক দল। 

সারজিস বলেন, তখন সুযোগ ছিল, এখনো আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক দলের মহাসচিব হিসাবে যদি পারে, একটা দলে পদধারী। তিনি এখন দলের এমপিও না মন্ত্রীও না। উনি পারে কি না, উনি যদি পারে একটা দলের...। তখন ওই নেতা বলেন, এভাবে মিটিং করে না।

সারজিস বলেন, এটা কোনো অফিসিয়াল মিটিং ছিল না। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, এটা কোনো অফিসিয়াল মিটিং না।

অফিসিয়াল মিটিং হলে তো রেজল্যুশন থাকে। ওটা ইউএনও আহ্বান করেন। আমি তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, আটোয়ারীতে কী কী দরকার, কী কী সমস্যা। আমি আমার জায়গা থেকে দেখব, কী কী বের করে আনতে পারি।

তখন ওই ব্যক্তি সারজিসকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি কোন বিধানে এসেছেন। সারজিস তখন বিএনপির ওই নেতাকে বলেন, আপনি কোন অথরিটিতে জিজ্ঞাসা করেছেন? ওই ব্যক্তি বলেন, আমি নাগরিক হিসাবে জিজ্ঞাসা করছি। একটা রাজনৈতিক দলের মুখ্য সংগঠকের সাথে দেখা করতে পারে না সরকারি কর্মকর্তা অনির্বাচিত ভাবে, নির্বাচিত হলে পারে।

সারজিস আবার বলেন, কোন আইনে পারে না? তখন ওই ব্যক্তি বলেন, কোন আইনে আছে।

এ সময় উভয়ে উত্তেজিত হয়ে উচ্চস্বরে কথা শুরু হলে সারজিস বারবার বলতে থাকেন, ‘টোন লো’ করেন।

এ সময় সারজিস বলেন, আপনি যে আইনে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আমি সেই আইনে আটোয়ারীতে কী কী সমস্যা, তাদের কাছে জানতে চাইতে পারি। ভিডিওর শেষের দিকে সারজিস বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি ঠাকুরগাঁও এসে এটা করতে পারেন, সারজিম আলম বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায় করতে পারে। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জানান, সেখানে তেমন কিছু ঘটেনি। আমি আমার নিজ উপজেলায় মিটিং করছিলাম। উনি এসে জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমি এই মিটিং করতে পারি কি না। আমি বলেছিলাম বিএনপি‍‍`র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম মিটিং করতে পারলে আমি কেন পারব না।

বিএনপির আটোয়ারী উপজেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিয়ার রহমান বলেন, আমি উপজেলা পরিষদে যাই, যেখানে দেখি একটা মিটিং চলছে। সারজিস আলমও উপস্থিত ছিলেন। উনি তো এখন সেখানে মিটিং করতে পারেন না।

মিটিং শেষে অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্ন করলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। তখন সারজিস আলম আমাকে বলেছেন বিএনপির নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিটিং করলে আমি কেন করতে পারব না।