জাতীয় নাগরিক পার্টি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে যুগপৎ কর্মসূচির উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কোনোভাবেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে প্রবেশের সুযোগ দেব না। এ বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব। তাই দ্রুত আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে সংগঠনগুলোকে নিয়ে যুগপৎ কর্মসূচির উদ্যোগ নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।’
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জুলাইয়ের আন্দোলনে ফ্যাসিবাদবিরোধী যেসব দল ছিল, তাদের মধ্যে ফাটল দেখা দিচ্ছে। একে অন্যকে বিষোদ্গার করছে। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের কারণে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে কি না, এ বিষয়ে আপনারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না?
জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন যে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো বাংলাদেশে রাজনীতি করছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অবশ্যই বিভিন্ন মত থাকবে। আমরা মনে করছি, এখন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ রয়েছে এবং যে যার মত প্রকাশ করতে পারছে। এটি কেবলই ভিন্নমত। আমরা মনে করি না, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন কোনো অনৈক্য তৈরি হয়েছে, যার সুযোগ আসলে ফ্যাসিবাদী শক্তি নিতে পারে।’
আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করে জুলাই অভ্যুত্থানের এই নেতা বলেন, ‘ব্যক্তিদের বিচার অবশ্যই হবে। আমরা মনে করি, দলগতভাবেও বিচার হওয়া উচিত। জুলাই গণহত্যা একটি রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞ। এটিতে দলগতভাবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং অংশগ্রহণ করেছে।’
বার বার ঘোষণা দিয়েও জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে না পারা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের আজকে আলোচনার একমত হওয়া বিষয়গুলোর প্রথমেই ছিল জুলাই শহীদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি। জুলাই ঘোষণাপত্রের একটি উদ্দেশ্যই ছিল, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য একটি লিখিত দলিল তৈরি করা। যাতে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো ঐকবদ্ধ থাকবে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও যেকোনো কারণে তা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়নি। হলে আমরা অবশ্যই সেখানে বলব। পাশাপাশি এখন আমরা জুলাই সনদকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে মৌলিক সংস্কারের রূপরেখার কথা থাকবে। এটি যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়। এ বিষয়ে সবাই একমত হলে আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রের কথাটিও বলব।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত একটি সময় ফ্রেম আছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিচার নিশ্চত ও রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কারের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন করতে হবে।’