ঢাকা শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

‘পুঁজিবাদী বাজারব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে’

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ০১:০৯ পিএম

‘পুঁজিবাদী বাজারব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে’

ঢাকা: ডাকসুর সাবেক ভিপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, বর্তমানে তো ফ্যাসিস্ট সরকারের গত ১৫ বছরের সিন্ডিকেট নেই, তাহলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে কেন। শুধু রাজনৈতিক সংস্কার করে দেশের সব কাঠামো ঠিক করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক সংস্কারটাও প্রয়োজন। আর তার জন্য প্রয়োজন সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা। পুঁজিবাদী বাজারব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

মুজাহিদুল ইসলাম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, প্রচলিত, লিবারেল বুর্জয়াব্যবস্থা আমাদের দেশকে সর্বনাশের কিনারে নিয়ে গেছে। এই ব্যবস্থায় লুটপাট অবধারিত। সুতরাং আমরা খালি রাজনৈতিক সংস্কার করব, অর্থনৈতিক সংস্কার করব না, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব নয়। ফ্রি মার্কেট ইকোনমিতে সমস্যা বিদ্যমান। অতিতের সরকারগুলো বলেছে, বাজারের কাজ বাজার করবে, ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাই। বাজারের কাজ বাজার করবে, এ কথা বলে যদি তাদের দায় এড়াতে চাই, তাহলে সরকারের দরকার হয় না। সবকিছু বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া মানেই তো সেই সালমান রহমানসহ কুখ্যাত লোক, যারা হাজার-লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে, পাচার করেছে; যার মাধ্যমে তাদের হাতে বন্দী হয়ে যাওয়া। যেটা আমাদের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দেখলাম।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখন বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা। তার জন্য রেশনাল ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে দ্রব্যমূল্য আনতে হবে। তার জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় গুরুত্ব দিতে হবে। সিন্ডিকেট সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিতে হবে। বাজার মনিটরিং চলমান রাখতে হবে, সব ধরনের অসাধু মজুদদার, বিক্রেতার বিরুদ্ধে সরাসরি আইনি ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। একই সঙ্গে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।

দেশের যে উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন জানিয়ে, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন সব কিছুর সুষ্ঠু সমাধানে যেটি প্রথমে প্রয়োজন, সেটা হলো দেশে একটি অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষে নির্বাচন। যেখানে কোনো টাকার খেলা থাকবে না। অর্থশক্তি, পেশিশক্তি ঝেটিয়ে বিদায় করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যে সরকার এসেছে, সেটি হলো অন্তর্বর্তী সরকার। ড. ইউসূসের নেতৃত্বের সরকার, যার নামের মাধ্যমেই বোঝা যায় এটি একটি বিশেষ সরকার, যেটি নির্বাচিত সরকার নয় আবার কর্তৃত্ববাদী সরকারও নয়।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন, জনগণের সরাসরি ভোটের দ্বারা সরকার আসার আগ পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তী সরকার। এর অর্থ হলো, নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের আগপর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের এই সরকার, যাদের মূল কাজ সমাজের মধ্যে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর সৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। অন্যায়ের বিচার করা। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, রাজনীতির চর্চা উন্মুক্ত ও স্বাধীন করে, নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বাইরে কাজ করার সুযোগ এই সরকারের নেই।

আরবি/এস

Link copied!