জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করলেও দলটি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হয়ে যুদ্ধে অংশ নেয়নি বলে দাবি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদেরকে যেভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাদেরকেও একই সাজা দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগ এনে ক্ষমতাচ্যুত দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিও তুলে ধরেছেন।
সরকারকে কী বলেছেন, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জামায়াত নেতাদের তো ফাঁসি হয়েছে। এখন ওদেরকে (আওয়ামী লীগ) ফাঁসি দিতে হবে। জামায়াতকে তো ফাঁসি দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দেন। এটা আপনাদের দায়িত্ব।
অলি বলেন, আমরা মনে করি, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তারা পাকিস্তানের হয়ে ‘যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নাই’। সেদিন আমরা তাদেরকে নিষিদ্ধ করেছিলাম, তাহলে আজকে কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না?
আমরা আজকে আবার বলেছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ করেছে। তাদের এখানে রাজনীতি করার অধিকার নেই। তারা সবাইকে ব্যবহার করেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা সবকিছু করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা জনতার চাপে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।
এবার প্রধান উপদেষ্টাকে মোট ২৩টি প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানান এলডিপি নেতা।
অলি বলেন, দুই দফা সংলাপের প্রথমবারে ১০৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দ্বিতীয় দফায় এবার আরও ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। এসব প্রস্তাব কাউকে সুবিধা দেওয়ার জন্য নয়, কাউকে জেল থেকে মুক্ত করার জন্য নয়, দেশের জনগণের জন্য দিয়েছি।
অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুন্দর প্রশাসন চালানোর জন্য, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য, নিত্যপণ্যের বাজার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনাসহ বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে।
জুলাই-আগস্টে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৮ কোটি মানুষ ‘যুদ্ধ’ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা (সরকার) পুলিশসহ প্রশাসনকে ‘অন্যায়ভাবে’ ব্যবহার করেছে, জনগণের সঙ্গে মুখোমুখি করে দিয়েছে, দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, আমাদের হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে হতাহত করেছে।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করারও দাবি জানান অলি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যারা সমর্থক ছিল, যারা শেখ হাসিনাকে এখনো সাহায্য করছে, তারা চিহ্নিত ব্যক্তি। ২০১৮ সালে যে বা যারা ‘রাত্রিকালীন নির্বাচনে’ জড়িত ছিল তাদেরকে সরকার থেকে বের করে দিতে হবে `ডিসমিস` করতে হবে।
দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তার, জনগণের লুট করা টাকা ফেরত আনা এবং সংস্কার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করাসহ নানা বিষয়ে কথা বলার কথাও সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন এলডিপি প্রধান।
আপনার মতামত লিখুন :