ঢাকা রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আইন হাতে তুলে নেবেন না: নজরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম

আইন হাতে তুলে নেবেন না: নজরুল ইসলাম

ছবি সংগূহীত

ঢাকা: নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বিজয় ছিনিয়ে নিতে নানামুখি ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অর্জন কোনভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বাড্ডা থানা বিএনপি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় নিহত ১৯ টি পরিবার এবং আহত ৪০ টি পরিবারের কাছে সহযোগিতার আর্থিক উপহার তুলে দেন প্রধান অতিথি বিএন পি‍‍`র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও  বিশেষ অতিথি বিএনপির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ কাইয়ূম। এসময় নেতৃবৃন্দ আন্দোলনে আহতদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন এবং ভবিষতেও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমান সব সময় চিন্তা করেন। তার নির্দেশে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত আহতদের জন্য ডাটাবেজ করা হয়েছে। সারাদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে ডাটাবেজে যুক্ত করা হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে নিহত আহতদের পরিবারের কাছে যাওয়া হচ্ছে। তাদেরকে দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। প্রতিদিনই দলের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি অব্যহত রয়েছে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আন্দোলনে আহত নিহতদের জন্য সরকার কিছু আর্থিক অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকেও পরিবারদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অর্থের পরিমান দিয়ে তাদের ত্যাগের মুল্য দেওয়া যাবে না। এই পরিরর্তিত দেশের জন্য তাদের মর্যাদা অতুলনীয়।

গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানের কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সেদিন আমি কারাগারে। যখন খবর এলো স্বৈরাচারি খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। তখণ কারাগারে আনন্দের মিছিল শুরু হলো। কে কোন মামলার আসামী তার কোন ঠিকানা নেই। সবার স্লোগানে- স্লোগানে প্রকম্পিত হলো কারাগার।  সবার চোখে মুখে নতুন স্বাধীনতার উচ্ছ্বাস ফুটে ওঠে। সেদিন যদি ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থান না হত তাহলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেত না। আমিও কারাগার থেকে মুক্তি পেতাম না। এম এ কাইয়ুম ও নির্বাসিত জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে আজ আমাদের মাঝে ফিরে আসত না। তাই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নিহত আহত পরিবারের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি এম এ কাইয়ুম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশনা অক্ষরে-অক্ষরে পালন করতে হবে। জুলুম দখলবাজি চাঁদাবাজি করে আওয়ামী লীগ। তাই আপনারা জুলুম দখলবাজি চাঁদাবাজি করবেন না। আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান জুলুম দখলবাজি চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়েছেন।

এম এ কাইয়ুম বলেন, গত ১৭ বছর ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলন আমরা করেছি। কিন্তু সফলতা পাইনি। এই সফলতা এনে দিয়েছে ছাত্র-জনতার দুনিয়া কাঁপানো গণঅভ্যুত্থান। যারা জীবন দিয়ে আমাদের নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সম্মান শ্রদ্ধা জানাতে হবে। তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদেরকেও সুফল পাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, যারা স্বল্প পুঁজিতে ব্যবসা করে তাদেরকেও চাঁদা দিতে হয়। আর যেন চাঁদা দিতে না হয়। এ জন্য আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে কেউ চাঁদাবাজি দখলবাজি করবেন না। কারণ, আওয়ামী লীগ চাঁদাবাজি দখল করেছে, তাদের আর আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। ভালো কাজ করে দেখিয়ে দিতে হবে বিএনপির লোকজন অন্যায় মেনে নেয় না। আর যদি কেউ এসব কাজে জড়িত হোন তাহলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের উদেশ্যে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেওয়া হয়। বিএনপি সরকার অথবা যে সরকারই আসুক আগামীতে এই শহীদ পরিবারকেও মূল্যায়ন করতে হবে। সেজন্য শহীদ পরিবার মামলা করবেন। মামলার কাগজ ছবি সংগ্রহে রাখবেন। সরকার যখন মূল্যায়ন করবে, তখন যেন এই কাগজ ও ছবিগুলো দিয়ে প্রমাণ করা যায়। তাদের জীবনদানের প্রতি সম্মান রাখতে হবে। তাহলে আজকের বিজয়ও সার্থক হবে।

বাড্ডা থানা বিএনপি‍‍`র ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল কাদের বাবুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এ জি এম শামসুল হক।

আরবি/এস

Link copied!