বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৬০তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৭ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের ডাক নাম পিনো। ১/১১ সরকারের সময়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। চিকিৎসার সুবিধার্থে তারেক ২০০৮ সাল থেকে সপরিবারে লন্ডনে বাস করছেন।
জিয়াউর রহমানের গড়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া কমিটির সদস্য হিসেবে তার রাজনৈতিক জীবনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে দেশের মানুষের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি।
মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে মায়ের পাশাপাশি তারেক রহমানও দেশব্যাপী নির্বাচনি প্রচার চালান। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ষষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে যাওয়ার পর তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
তারেক রহমানের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কোনো অনুষ্ঠান না করতে দলের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব ইউনিটের নেতাকর্মীকে বিশেষভাবে জানানো যাচ্ছে যে, ওইদিন তারেক রহমানের জন্মদিন নিয়ে কোনো অনুষ্ঠান পালিত হবে না। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন রিজভী।
তারেক রহমানের জন্মদিন নিয়ে এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলে রুহুল কবির রিজভী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। প্রত্যাশা পূরণের আগেই অতি উচ্ছ্বাস বেমানান। নেতার জন্মদিনে কর্মীদের উচ্ছ্বাস অনেক সময় সীমার বাইরে চলে যায়। যেহেতু মানুষের চূড়ান্ত প্রত্যাশা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, তাই জন্মদিনের নামে বেশি উচ্ছ্বাস দৃষ্টিকটু দেখায়। আমি মনে করি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের (তারেক রহমান) এই সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক। নানা উপলক্ষ কর্মসূচিতে নিয়মিত তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন। তাই বর্তমান বাস্তবতায় এ ধরনের কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত।’
এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে জন্মদিন পালন বিতর্কের মুখে ফেলতে পারে। তাই এবার গত বছরের মতো তারেক রহমানের জন্মদিন পালিত হবে না। তবে তার দীর্ঘায়ু কামনায় সারা দেশে দোয়ার কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে।’
এদিকে চলতি বছর ১৫ আগস্ট ৮০তম জন্মদিন পালন করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও। সরকার পতনের পর জন্মদিন পালন করা হলে জনগণের মনে আরেক বিতর্ক তৈরি হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে তিনি জন্মদিন পালন করেননি বলে দলের স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য জানান।
যদিও ২০১৬ সাল থেকেই বড় পরিসরে খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদযাপন থেকে সরে এসেছিল বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরে জন্মদিন উপলক্ষে কোনো কর্মসূচি রাখেনি দলটি। তবে ১৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়েছিল।
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দল ও দেশের জনগণের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাই এবং তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কমনা করছি। তারেক রহমানের জন্মদিনে আপাতত কোনো অনুষ্ঠান পালিত হবে না। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :