ঢাকা শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫

জামায়াত পরীক্ষিত দেশ প্রেমিক; এ দাবিতে বিএনপি‍‍’র কষ্ট

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

জামায়াত পরীক্ষিত দেশ প্রেমিক; এ দাবিতে বিএনপি‍‍’র কষ্ট

ছবি: সংগৃহীত

দেশে পরীক্ষিত দুটি দেশপ্রেমিক শক্তি আছে, এর একটা সেনাবাহিনী আরেকটা জামায়াতে ইসলামী।‍‍` জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের এমন বক্তব্যে বিএনপি নেতারা কষ্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন।

জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর কোন উদ্যোগ বিএনপির পক্ষ থেকে নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন,‍‍`এমন কোন দূরত্বের কিছু নেই তারা ও গণতন্ত্র চায় তারাও নির্বাচন চায়। মানুষের অধিকারের কথা বলে আমরাও বলি। কিন্তু যদি কেউ বলে তারা শুধু দেশপ্রেমিক তাহলে তো আমাদের কষ্ট লাগবেই আমরা তো বলব ভাই কথাটা ঠিক না। ‍‍`

তিনি বলেন,‍‍`আমরা সবাই দেশ প্রেমিক। আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি তারপর যদি বলেন শুধু আপনি দেশ প্রেমিক, আপনার আরেক বন্ধু দেশ প্রেমিক তাহলে তো আমাকে বাদ দিলেন না আপনি। এটাতো কষ্ট লাগার কথা।আমরা আশা করব এরকম কথা কেউ না বলুক।‍‍`

জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি বৈঠক করবে কিনা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‍‍`জামায়াতের সাথে ফরমালি যুগপৎ আন্দোলনে আমরা ছিলাম না। তাদের কর্মসূচি আমাদের কর্মসূচি একরকম ছিল না কিন্তু তারা আন্দোলনে ছিলেন। নিশ্চয়ই আগামী দিনে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সবাই আমরা থাকবো তারাও থাকবে। এটা নিয়ে কনফিউশনের কিছু নেই।‍‍`

নজরুল ইসলাম খান বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে সব সময় যারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন সমমনা জোট। সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজকে আমরা বসে ছিলাম। দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক সামাজিক অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা জনগণের সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি কিভাবে সেটা দূর করা যায়। এ ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন সময়ে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। দেশের গণতন্ত্র কোন প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যে গণতন্ত্রের জন্য দলের জোটের এবং দেশের হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। অতি সম্প্রতি সহস্রাধিক মানুষ জীবন দিয়েছে। এখনো আমাদের অনেক নেতা কর্মী মামলা হামলার শিকার হয়ে আছে।‍‍`

সমমনা জোটের প্রধান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন,সামাজিক পরিস্থিতির রাজনৈতিক পরিস্থিতির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। বিএনপির সঙ্গে আমরা যুগপৎ ভাবে আন্দোলন করেছি ২০০৯ সাল থেকে এবং আমাদের জোটের এবং বিএনপির শত লোকে মারা গেছে। আন্দোলনের জন্য হাজার হাজার লক্ষ লোকের নামে মামলা হয়েছে আমাদের এক দফা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেই এক দফাটি ছিল শেখ হাসিনার বিদায় এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। আমরা যে দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলন করেছি এটা সাফল্যতা পেয়েছে ২০২৪ এর ৫ আগস্টে। প্রথম দফা আমরা সফলতা অর্জন করেছি এখন দ্বিতীয় দফা হবে দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা এবং মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন,আমরা চাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতি দ্রুত আসুক কিন্তু নির্বাচনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কার আমরাও চাই।দীর্ঘদিন মানুষ যে ভোট দিতে পারে নাই সেজন্য সরকারকে বলবো, ন্যূনতম সংস্কার করে অতি তাড়াতাড়ি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন এবং মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। যদি সংসদ নির্বাচন হয় তাহলে দেশের অর্ধেক সমস্যার সমাধান হবে। বাকি যে সমস্ত সংস্কার আছে তা নির্বাচিত সরকার করবে।

বেলা সোয়া এগারো টায় শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় ঘন্টা ব্যাপী।

বৈঠকে অন্যন্যের মধ্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী,সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম,এনডিপির চেয়ারম্যান  আবু তাহের, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি  নাসিম খান,ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এস এম শাহাদাত।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!