২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ । ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সম্মিলিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সূচনা করে। সেই দিনটাকে সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
একজন বীর উত্তমের স্ত্রী বা বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে বিগত সময়ে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তা এদিবসের আমন্ত্রণ জানালেও এবার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার দুইজন কর্মকর্তা সস্ত্রীক সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আমন্ত্রণপত্র দিয়ে গেছেন। এই আমন্ত্রণ কি তাহলে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে? যদিও খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি রয়েছে। তবে যদি তিনি এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তাহলে এর মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে নতুন ইনিংস গড়তে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
দলীয় সূত্র জানায়,২০০৯সালের পর এবারই প্রথম বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এবছর সশস্ত্র বাহিনীর দিবসের অনুষ্ঠানে মোট ২৬ জন আমন্ত্রণ পেয়েছেন এর মধ্যে আরো রয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং ভাইস চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য পদমর্যদায় থাকা সাবেক সামরিক কর্মকর্তারা। বিগত সময়ে দলীয়ভাবে এত সংখ্যক নেতৃবৃন্দ আমন্ত্রণ পেতেন না। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যদি তার স্বাস্থ্যগত জটিল পরিস্থিতি এড়িয়ে যোগ দিতে পারেন তাহলে তাহলে এর মূল আকর্ষণ হবেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ২০০৯ সালে সশস্ত্র বাহিনীর দিবসের অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে যোগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তবে সশস্ত্র বাহিনীর দিবসের অনুষ্ঠানে ম্যাডাম যোগ দেবেন কিনা সে বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই।
এর আগে তিনি স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেড এম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে শায়রুল জানান,সেনা বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল এএসএম কামরুল আহসান সস্ত্রীক সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই আমন্ত্রণপত্র দিয়ে গেছেন।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া অতীতে সশস্ত্র বাহিনীর দিবসে অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণ পেতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেগম খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো থেকে বিরত থেকেছে। এবার ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে এবং নতুন সরকার হয়েছে। এবারের সেনা কুঞ্জের অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়া যদি যান তাহলে নিঃসন্দেহে তিনি সবার মধ্য মনি হবেন। তিনি সবসময়ই সবার মধ্যমণি ছিলেন।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমন্ত্রণ পেতেন। উনার স্বামী জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা ছিল। উনাকে ঘিরে মানুষের মধ্যে আবেগ রয়েছে।উনি যদি আগামীকালকের অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে যান তাহলে প্রশাসন সহ সর্বস্তরে ইতিবাচক বার্তা যাবে এবং কর্মচঞ্চল্য পরিস্থিতি তৈরি হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ। উনি যাবেন কি যাবেন না সেটা চিকিৎসকদের উপর নির্ভর করছে। যেহেতু উনার যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত না সুতরাং সে বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে পারিনা।
আপনার মতামত লিখুন :